বিয়ানীবাজারে ৪৪টি মন্ডপে চলবে দুর্গাপূজা
বিয়ানীবাজার প্রতিনিধি
হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গোৎসব সামনে রেখে মন্দিরগুলোতে প্রতিমা তৈরির কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন শিল্পীরা। দিনরাত পরিশ্রম করে শিল্পীরা তাদের নিপুণ হাতের ছোঁয়ায় কাদামাটি, খড়, বাঁশ, সুতলি ও রঙতুলি দিয়ে তৈরি করছেন একেকটি প্রতিমা।
বিয়ানীবাজার উপজেলার বিভিন্ন মন্দির ও মণ্ডপ প্রাঙ্গণে নানা আকার আর ঢঙের দেবী দুর্গার প্রতিমা বানানো হচ্ছে। উপজেলায় এবার পূজা মন্ডপের সংখ্যা কমেছে। এখানে সার্বজনীন ৩৫টি এবং ব্যক্তিগতভাবে আরো ৯টি মন্ডপে পূজা উদযাপন করা হবে। স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে মন্দির কমিটিগুলোকে নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপনের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
আগামী ৯ অক্টোবর বুধবার মহাষষ্ঠী পূজার মধ্য দিয়ে শুরু হবে দুর্গাপূজা। ১৩ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের দুর্গাপূজা। এর আগে আগামী ২ অক্টোবর বুধবার মহালয়ার মধ্য দিয়ে দেবীপক্ষের শুরু।
সরেজমিনে পৌর শহরের কালিমন্দির, বাসুদেব মন্দির ও ইসকন মন্দির ঘুরে দেখা গেছে, মন্দিরে কারিগররা ফুটিয়ে তুলছেন দুর্গা, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ-কার্তিক ও অসুরের প্রতিমা। মণ্ডপে মণ্ডপে চলছে মাটি দিয়ে প্রতিমা তৈরির কাজ। ইতোমধ্যেই খড় আর কাদামাটি দিয়ে শেষ হয়েছে প্রতিমার কাজ। এখন চলছে রঙ আর তুলি দিয়ে প্রতিমা সাজানোর কাজ। এ ছাড়াও প্রতিমা তৈরির পাশাপাশি মণ্ডপের সাজসজ্জায় চলছে বিশেষ প্রস্তুতি।
প্রতিমা শিল্পীরা বলেন, তাড়াতাড়ি কীভাবে কাজ শেষ করা যায়, সেজন্য রাতদিন পরিশ্রম করছি। সময় ঘনিয়ে আসায় কাজের চাপ অনেকটাই বেড়ে গেছে। যার কারণে সারাদিন কাজ করার পরে রাতেও কাজ করতে হচ্ছে।
বিয়ানীবাজার পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অরুনাভ পাল চৌধুরী মোহন বলেন, দূর্গপূজার সার্বিক পরিস্থিতি সন্তোষজনক। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি, জামায়াত, হেফাজতে ইসলামসহ সমস্ত দল আমাদের পাশে আছেন। আমরা উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে শারদীয় দুর্গাপূজা উদযাপন করব। প্রতিটি মন্দিরে কমিটির পক্ষ থেকে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবীরা সার্বক্ষণিক নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকবে। এ ছাড়াও প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা লাগানোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
নিরাপত্তা বিষয়ে বিয়ানীবাজার থানার অফিসার ইনচার্জে মো: এনামুল হক চৌধুরী বলেন, শান্তিপূর্ণ পরিবেশে দুর্গা উৎসব উদযাপনের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। অতীতেও যে পরিমাণ নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল তার চেয়ে বেশি আছে। প্রতিটি পূজামণ্ডপে নিরাপত্তার জন্য পুলিশ থাকবে। মণ্ডপের বাইরে ও রাস্তায় পুলিশের পাশাপাশি আনসার সদস্য, র্যাব, সেনাবাহিনীসহ সাদা পোশাকে গোয়েন্দা নজরদারি থাকবে।
বিয়ানীবাজার উপজেলা নির্বাহী অফিসার কাজী শামীম জানান, পূজা উদযাপন পরিষদের নেতৃবৃন্দকে বৈঠক করেছি। তাদের সব ধরনের সহায়তার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। পূজা উপলক্ষে সরকারি বরাদ্দ হয়তো এ সপ্তাহে পাওয়া যাবে। বরাদ্দ প্রাপ্তির পর দ্রুত তা সংশ্লিষ্টদের কাছে পৌঁছে দেয়া হবে।