আদালতের নির্দেশ অমান্য করে চলমান নদীকে বদ্ধ বিল দেখিয়ে ইজারা
তাহমীদ ইশাদ রিপন, বড়লেখা প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের বড়লেখায় উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে চলমান ‘দর্শনা নদী’-কে জালিয়াতির মাধ্যমে জলমহাল বদ্ধ দেখিয়ে একটি মৎস্যজীবী সমবায় সমিতিকে ৩ বছরের জন্য ইজারা প্রদান করেছে উপজেলা ভূমি প্রশাসন। শুধু তাই নয়, জলমহাল ইজারার বিজ্ঞপ্তির সিডিউলে ১.০২ একরের উল্লেখ করে রহস্যজনকভাবে অতিরিক্ত আরও ৪.৫২ একর নদী শ্রেণির ভূমির দখল সংশ্লিষ্ট ইজারাদারকে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
অভিযোগ রয়েছে, জলমহাল ইজারার এই মহাজালিয়াতির নাটের গুরু জেলা প্রশাসনের সদ্য বদলি হওয়া এক রাজস্ব কর্মকর্তা (এডিসি)। জাতীয় নদী রক্ষা কমিশন দায়েরকৃত মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের সিভিল পিটিশন নং-৩০৩৯/২০১৯ এর ১৭.০২.২০ তারিখের রায়ের আদেশ অনুযায়ী চলমান কোনো নদী ইজারা দেওয়ার বিধান নেই। ইতোপূর্বে ইজারা প্রদান করা হয়ে থাকলে তা বাতিল করার জন্য মহামান্য আদালত সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরকে নির্দেশ প্রদান করে।
জানা গেছে, বড়লেখা উপজেলার চলমান দর্শনা নদীতে জাইকার অর্থায়নে এলজিইডি মৌলভীবাজারের তত্ত্বাবধানে গত বছর প্রায় ৮ কিলোমিটারের খনন কাজ সম্পন্ন হয়। এতে সরকারের ব্যয় হয় ১ কোটি ২৮ লাখ টাকা। দুটি স্লুইসগেট ও একটি কৃষক সমবায় সমিতির অফিসঘর নির্মাণসহ বিভিন্ন কার্যক্রমের আরও প্রায় ৫ কোটি টাকার প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। এর আগে উপজেলা ভূমি প্রশাসন দর্শনা নদীর ১ একর ০২ শতাংশ ভূমি বদ্ধ জলমহাল হিসাবে ১৪৩১ হতে ১৪৩৩ বাংলা সন পর্যন্ত রূপালী মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি গপেন্দ্র বিশ্বাসকে ইজারা প্রদান করে। সুপ্রিম কোর্টের লিজ বাতিলের চিঠি পেয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের এক রাজস্ব কর্মকর্তার অদৃশ্য ইশারায় চলমান দর্শনা নদীকে ‘দর্শনা বিল (বদ্ধ)’ জলমহাল দেখিয়ে ইজারা বহাল রাখা হয়েছে। ইজারা বিজ্ঞপ্তির সিডিউলে জল্লার হাওড় মৌজায় ১ একর ২ শতাংশ উল্লেখ থাকলেও রহস্যজনকভাবে ইজারা গ্রহীতাকে গত ৬ জুন দর্শনা নদীর আর্থনিকান্দি মৌজায় আরও ৫ একর ৫৪ শতাংশসহ সর্বমোট ৭ একর ৫৬ শতাংশ নদীর ভূমির দখল বুঝিয়ে দিয়েছে উপজেলা ভূমি প্রশাসন (এসিল্যান্ড)।