ছাত্রদের সেবায় তিন যুগ: দুই কিডনি কার্যকরে প্রয়োজন মানবিক সহায়তা
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ( শাবিপ্রবি) বিভিন্ন হলে ডাইনিং পরিচালক থেকে ছাত্রদের সেবায় তিন যুগের অধিক সময় কাটিয়েছেন মো. সিদ্দিক মিয়া। কিন্তু এ দীর্ঘ সেবার শেষে দুই কিডনি অকার্যকর হয়ে যাওয়ায় হাসপাতালের বিছানায় যন্ত্রণার দিন পার করছেন তিনি। অর্থভাবে দৈনন্দিনের ওষুধও কিনতে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা জানান, সিদ্দিক মিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহপরাণ হলে ৩১ বছর ধরে ডাইনিং পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। গত ২ বছর ধরে সৈয়দ মুজতবা আলী হলের ডাইনিং পরিচালক হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।
অসুস্থ সিদ্দিকের আত্মীয়রা জানান, সিদ্দিকের দুটি কিডনি অকার্যকর হয়ে গিয়েছে। বর্তমানে তিনি ময়মনসিংহ স্বদেশ ক্লিনিক চিকিৎসাধীন আছেন। তাকে সপ্তাহে দু’বার ডায়ালাইসিস করাতে হয়। এজন্য মাসে ৬০ হাজারের বেশি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। কিন্তু তার পারিবারিক অবস্থা শোচনীয় হওয়াতে বর্তমানে ওষুধ কেনার অর্থ জোগাতেও হিমসিম খেতে হচ্ছে তাকে।
সিদ্দিকের ছেলে জুনায়েদ বলেন, “ছাত্র আন্দোলনের সময় ছুটিতে আমরা বাড়িতে গিয়েছিলাম। যাওয়ার পর উনার খুব শরীর খারাপ হয়ে যায়। তখন আব্বুকে নিয়ে ময়মনসিংহ মেডিকেলে নিয়ে পরীক্ষা করালে কিডনিতে সমস্যা দেখা দেয়। তখন ডাক্তার মেডিসিন লিখে দেয়। এর একমাস পর আবার ভার্সিটিতে এসে ১৬ দিন ডাইনিং চালায় আব্বু । এর দুইদিন পর আব্বুর খুব জ্বর আসে এবং মুখের চারপাশ ফুলে যায়। তখন পরীক্ষা করানোর পর চিকিৎসক বলল আব্বুর দুইটা কিডনি নষ্ট হয়ে গেছে। তখন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী আব্বুকে এক মাস যাবৎ ডায়ালিসিস দিয়েছি।”
চিকিৎসার অর্থ যোগানের বিষয়ে জুনায়েদ বলেন, “আমাদের একটা ক্ষেতের জমি ছিল। ওটা বিক্রি করে এবং টাকা ধার করে এতদিন আব্বুর চিকিৎসা চালিয়েছি। এখন ওনার চিকিৎসা খরচ চালানোর জন্য আমাদের সেরকম আর্থিক অবস্থা নেই।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞার বিভাগের শিক্ষার্থী মামুনুর রশিদ শুভ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আসার পর থেকে সিদ্দিক মামার হাতে রান্না করা তিনবেলা খাবার খেয়ে অধিকাংশ দিন পার করেছি। দু-একদিন পর ছাত্রদের হলগুলো খুলে দিবে। তখন যথারীতি সবকিছু চললেও সিদ্দিক মামার ডাইনিং চলবেনা। শোনেছি ওনার দুটি কিডনিই নষ্ট হয়ে গেছে। তিনি যেন আমাদের মাঝে দ্রুত সুস্থ হয়ে ফিরে আসে, সে কামনা করি।