সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলাধীন ১নং বাংলাবাজার ইউপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবু হানিফকে অব্যহতির দাবিতে স্মারকলিপি প্রদান করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র জনতা।
শনিবার (১৯ অক্টোবর) রাত ৯টায় দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত আবেদনে এই স্মারকলিপি প্রদান করে উপজেলার ছাত্র সমাজ।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, গত ৪ আগষ্ট বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীদের উপর হামলার অভিযোগে গত ৬ অক্টোবর সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলাধীন ১নং বাংলাবাজার ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানে আবুল হোসাইনকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করে পুলিশ। এতে শূন্য হয়ে পড়ে ইউপি চেয়ারম্যানের পদ। দীর্ঘদিন শুন্য থাকার পর নিয়মঅনুযায়ী শূন্য এই পদে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণ করে ইউপি সদস্য (প্যানেল চেয়ারম্যান-১) আবু হানিফ। আবু হানিফ ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব বুঝে নেয়ার গুঞ্জনে তোলপাড় সৃষ্টি হয় এলাকায় ও নেট দুনিয়ায়। অভিযোগ উঠে আবু হানিফ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দোয়ারাবাজার উপজেলায় বাধা প্রদানকারীদের মধ্যে অন্যতম একজন। আবু হানিফ আন্দোলন চলাকালীন সময়ে বিভিন্ন স্কুল-মাদ্রাসায় অধ্যয়নরত, আন্দোলনকারী এলাকার ছাত্র সমাজকে আন্দোলন হতে সরে দাঁড়াতে বাধা নিষেধ করে ও নানা ভাবে হুমকি প্রদর্শন করে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ নেতা, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা, বাধা প্রদানকারী ও জেলা আওয়ামীলীগের সহ-সভাপতি সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের বিশ্বস্ত সহযোগী আবু হানিফকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে। উপজেলার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র সমাজ ও এলাকাবাসী এই বিষয়টি মেনে নিতে পারেনি। এতে এলাকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদী পোষ্টে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিবাদকারীরা আবু হানিফকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব হতে অব্যহতি প্রদানের দাবি জানান।
অভিযোগকারী ছাত্র জনতার সাথে যোগাযোগ করলে জানা যায়, আবু হানিফ উপজেলা আওয়ামীলীগের একনিষ্ঠ নেতা। তিনি সাবেক এমপি মুহিবুর রহমান মানিকের ছত্রছায়ায় এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি করেছিলেন। গত ৫ আগষ্টের পূর্বে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে নেতৃত্বদানকারী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অধ্যয়নরত বাংলাবাজার ইউনিয়নের ছাত্র সমাজকে আন্দোলন হতে সরে দাঁড়াতে নানান ভাবে ভয়ভীতি ও হুমকি দেয়। পারিবারিক ও ব্যক্তিগত ভাবে তাদেরকে হেনস্তা করা হয়। একপর্যায়ে স্থানীয় ছাত্রলীগ,যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের লেলিয়ে দেয় আন্দলোনকারীদের প্রতিহত করতে। এতে নিরাপত্তাহীনতায় ভোগে শিক্ষার্থীরা। কেউ কেউ ভয়ে নিজের বসতঘর ছেড়ে অন্যতায় রাত্রিযাপন করে।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, আন্দোলনে বাধাপ্রদানকারী আওয়ামীলীগের দোসর আবু হানিফকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব দেওয়া, জুলাই-আগস্টে শাহাদাৎ বরণকারী শহীদদের রক্তের সাথে বেইমানি স্বরুপ। এলাকার শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষার স্বার্থে আবু হানিফকে অব্যহতি দিয়ে অন্য একজন, সৎ ও আন্দোলনে সমর্থনকারী ইউপি সদস্যকে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের দায়িত্ব প্রদান অথবা প্রশাসককে দায়িত্ব দেয়ার দাবি উল্লেখ করে দোয়ারাবাজার উপজেলার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনকারী ছাত্র জনতা।