সবজির চড়া দামে সাধারণ মানুষ দিশেহারা

১ কেজি কাঁচা মরিচের দামে কেনা যায় প্রায় ১০ কেজি চাল। দাম কম নেই অন্যান্য জাতের সবজিরও। দেশের নানান সমস্যার কারণে উৎপাদন কম হওয়ায় বিভিন্ন জায়গা থেকে আমদানি করে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে ব্যবসায়ীদের। গাড়ির যোগাযোগ না থাকায় আমদানি খরচ বেশি, তাই পর্যাপ্ত দামে বিক্রি না করতে পেরে ক্ষতিগ্রস্ত বিক্রেতারা। আবার বাজারে এসে হিমসিম খাচ্ছে ক্রেতারাও। তবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের মাঝে সবচেয়ে কষ্টে আছেন বলে জানান মধ্যবিত্তরা।

সবজি বাজারে আসা একজন ক্রেতা জানান, বাজারে আইলে প্রেসার বাইড়া যায়। কোন দেশে বাস করি আমরা বুজতেছি না। পরিবর্তন করার জন্য এত যুদ্ধ করা হলো কিন্তু পরিবর্তন কই অইল ভাই। সরকার কেন দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে আনছে না ?

ব্যবসায়ী সূত্রে জানা যায়, বাজারে প্রতি কেজি কাঁচা মরিচের দাম ৩০০ টাকা, শিম ২৫০-৩০০ টাকা, বেগুন ১০০-১২০ টাকা, লালশাক ১০০ টাকা, মূলা ৮০ টাকা, লাউ পিছ ১০০-১৫০ টাকা, পেয়াজ ১২০ টাকা, রসুন ২৪০ টাকা, ডিম ৮০-৮৫ টাকা হালি, ব্রয়লার মুরগির কেজি ২১০ টাকা। সবজির মূল্য হাতের নাগালের বাহিরে থাকায় বাজারে ক্রেতা কম। চাহিদা থাকা সত্ত্বেও ক্রেতারা নিচ্ছেন অল্প পরিমাণ। এমনই দৃশ্য চোখে পড়ে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার ঘুঙ্গিয়ারগাঁও বাজারে।

অনেকেই দাবী করে বলেন, আমরা শহরে দেখি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদির বাজার ভোক্তা অধিকার বা প্রশাসন মনিটরিং করে। আমাদের এখানে যদি তারা বাজার মনিটরিং করতো তাহলে সাধারন মানুষ সবজি, ডিম সহ অন্যান্য জিনিসপত্র কিছুটা হলেও কমদামে কিনতে পারত।

এক মহিলা সবজি ক্রেতা বলেন, আমরার মতো গরিব মানুষ কাম কইরা দৈনিক ৫০০ টেকা আনি। বাজারে আইলে ৫০০ টেকায় ব্যাগের কোনাও ভরে না। জিনিসপত্রের দাম অতিরিক্ত তাই পরিবার নিয়ে কোনমতে দিন কাডাইতাছি। সরকার জিনিসপত্রের দাম না কমাইলে না খাইয়া মরন ছাড়া কোন উপায় নাই।

সবজি বিক্রেতা মিঠু জানান, মানুষ আগের মত আনাইজ (সবজি) নেয় না। আমি একমন মূলা আনছিলাম অর্ধেক বেচ্ছি বাকিতা পঁচতাছে। এই অবস্থা সারা বাজারেই। আমরা ব্যাবসায়ীদের কাম বিনাশ, বর্তমান বাজারের পরিবর্তন নাহলে ব্যবসায় লস আসবে৷

অন্যদিকে ডিম নিয়ে আলোচনার কোন শেষ নেই বাজারে। সরকার ডিমের মূল্য ১২ টাকা পিছ অর্থ্যাৎ ৪৮ টাকা হালি নির্ধারণ করে দিলেও ডিম বিক্রি হচ্ছে বাজারে ৮০-৮৫ টাকা হালি।

এবিষয়ে সুনামগঞ্জ জেলার ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আল-আমীন জানান, সরকার কর্তৃক নির্ধারিত প্রতি পিছ ডিম ১২ টাকা। কিন্তু কাঁচামরিচ প্রতি কেজি ৬০০ টাকা পর্যন্ত উঠেছিল। এখন সবজির সৃজনও না, দাম কিন্তু আস্তে আস্তে কমে যাচ্ছে। শাল্লার হিসাবটা ব্যতিক্রম রিমোট এরিয়া হিসেবে। আমি গত ৩ মাস পূর্বে বাজার মনিটরিংয়ে শাল্লায় গিয়েছিলাম। সময় করে আবার শাল্লায় আসব। দিরাই, বিশ্বম্ভবপুর, ছাতক প্রতিনিয়ত বাজার মনিটরিং করছি। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, আপনাদের ইউএনও সাহেবকে বিষয়টা জানাতে পারেন। উনিও মূলত ভোক্তা অধিকারের আইনটাই বাস্তবায়ন করেন।

এব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এস এম তারেক সুলতান বলেন, যোগাযোগ সমস্যার কারণে অন্যান্য জায়গায় তুলনায় শাল্লায় জিনিসপত্রের দাম একটু বেশি। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে পণ্যের তালিকা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবেন বলে জানান তিনি।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন