কুলাউড়া সড়ক মেরামতের দাবিতে মানববন্ধন
দৈনিকসিলেট ডটকম
মৌলভবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কুলাউড়া-জনতাবাজার-রাঙ্গিছড়া সড়ক মেরামতের দাবিতে রাস্তায় নেমেছেন স্থানীয়রা। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) আওতায় থাকা এই সড়ক নিয়ে ফুঁসছে স্থানীয় এলাকাবাসী। এই সড়ক সংস্কারের দাবিতে সোমবার সদর ইউনিয়নের নাজিরের চক গ্রামের দিঘিরপাড় এলাকায় মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় এলাকাবাসী ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা।
এ সময় বক্তারা দ্রুত সময়ের মধ্যে রাস্তা মেরামতে কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে ইউনিয়ন পরিষদসহ সংশ্লিষ্ট অফিস ঘেরাও করার ঘোষণা দেন।
মানববন্ধনে নাজিরের চক গ্রামের বাসিন্দা সংবাদকর্মী শাহ আলম শামীমের পরিচালনায় বক্তব্য দেন উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ও সমাজসেবক জুবের আহমদ খান, উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব সাইফুর রহমান, ব্যবসায়ী বিজন চন্দ্র দাস, কুলাউড়া-রাঙ্গিছড়া সিএনজি মালিক সমিতির সাবেক সভাপতি রণজিৎ মালাকার, কুলাউড়া-গাজীপুর-রাঙ্গিছড়া সিএনজি লাইন সমিতির ম্যানেজার বেলাল মিয়া, জনতাবাজার ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আজির মিয়া প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, কুলাউড়া সদর ইউনিয়নের নাজিরের চক গ্রামের দিঘিরপাড় এলাকায় প্রায় ১৫০ ফুটের বেশি ভাঙা সড়কের কারণে হাজার হাজার মানুষের কষ্ট হচ্ছে। চলাচলের একমাত্র রাস্তাটি মেরামতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ উদাসীন। সড়কের এই অংশ মেরামত করার জন্য পরিষদ থেকে দেড় লাখ টাকার প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছিল। বিভিন্ন সময়ে সাবেক এমপি শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল হক খান সাহেদ, সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমানসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা সড়কের ভাঙা অংশটি পরিদর্শন করে দ্রুত মেরামত করার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তবে চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমানসহ পরিষদের সদস্যরা এলজিইডির সড়কে কোনো উন্নয়নকাজ করা যাবে না এমন অজুহাত দেখিয়ে প্রকল্পের টাকা দিয়ে অন্যত্র কাজ করেছেন।
তারা জানান, এ সড়কটি দিয়েই সদর ইউনিয়নের করেরগ্রাম, নাজিরের চক, শংকরপুর, বালিশ্রী, প্রতাবী, গুতগুতি, লক্ষ্মীপুর ও পার্শ্ববর্তী কর্মধা ইউনিয়নের কালিটি ও রাঙ্গিছড়া চা বাগানসহ ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের হাজার হাজার লোকজনের উপজেলা সদরে যাতায়াত করতে হয়। এসব এলাকার শিক্ষার্থীরাও এ সড়ক দিয়ে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত করে।
বক্তারা আরও বলেন, সংস্কারের অভাবে কুলাউড়া-জনতাবাজার-রাঙ্গিছড়া এলজিইডি সড়কটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। ৭ কিলোমিটার সড়কটি ইউনিয়নের মাঝখান দিয়ে গেছে। তিন বছর ধরে রাস্তার বিভিন্ন অংশের পিচ ঢালাই ও ইট সরে গিয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এ সড়কটি ২০১৬-১৭ সালে সর্বশেষ সংস্কার করা হয়। সড়কের নাজিরের চক দিঘিরপাড় এলাকায় প্রায় দেড়শ ফুট জায়গা ভেঙে গেছে। এতে দুর্ভোগে পড়েছেন পথচারী ও যানবাহনের চালকরা।
কুলাউড়া সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোছাদ্দিক আহমদ নোমান জানান, সড়কের ওই অংশের জন্য জনগণ দুর্ভোগে পড়েছেন এটা সত্য। ওই সড়কটি মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় একাধিকবার আলোচনা করা হয়েছে। সাবেক এমপি, দু’জন উপজেলা চেয়ারম্যান, তিনজন ইউএনওকে ভাঙা রাস্তাটি মেরামত করার জন্য একাধিকবার জানানো হয়েছিল। তবে সরকারিভাবে কোনো বরাদ্দ না থাকায় কাজটি করা সম্ভব হয়নি। আগামী এডিবি প্রকল্পের আওতায় এই সড়কের কাজটি গুরুত্বসহকারে করা হবে।
এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী তারেক বিন ইসলাম জানান, আরসিআইপি প্রজেক্টের আওতায় ওই সড়কসহ উপজেলার অন্য এলাকায় ২০ কিলোমিটার সড়কের মেরামত কাজের জন্য প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে। অনুমোদন হলে সড়কটিতে স্থায়ীভাবে কাজ করা হবে। তবে স্থানীয়ভাবে ইউনিয়ন পরিষদের বাসিন্দাদের চলাচলের সুবিধার্থে ভাঙা স্থানটি অস্থায়ীভাবে মেরামত করা যেত।
ইউএনও মো. মহিউদ্দিন জানান, আপাতত সরকারি কোনো বরাদ্দ নেই। সড়কটি মেরামতের জন্য উপজেলা পরিষদের মাসিক সমন্বয় সভায় আলোচনার পর ইউপি চেয়ারম্যানকে বলা হয়েছিল জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে কাজটি করতে।