কুশিয়ারায় ভাঙনে হুমকির মুখে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ-কালভার্ট
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
সিলেটের বালাগঞ্জের পূর্ব পৈলনপুর ইউনিয়নের ফাজিলপুরে কুশিয়ারা নদীর তীর ধসে পড়ায় ঝুঁকিতে পড়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ কুশিয়ারা ডাইক ও একটি কালভার্ট। গত বুধবার ফাজিলপুর নদী তীরের বড় একটি অংশ ধসে পড়লে বাঁধের ওপর নির্মিত একটি কালভার্টের পাশের মাটিও ধসে যায়। এতে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসী জানান, কুশিয়ারা নদীর বালাগঞ্জ অংশের ফাজিলপুর নদীতীরের অনেক জায়গা ভেঙে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাছে চলে এসেছে নদীর তীর। এরই মধ্যে গত বুধবার বাঁধসংলগ্ন তীরটির বড় একটি অংশ ধসে পড়লে বাঁধের ওপর নির্মিত সড়কের কালভার্টের পাশের মাটি ধসে যায়। এমন অবস্থায় আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।
জানা গেছে, বালাগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে ওসমানীগরের শেরপুর পর্যন্ত কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী নির্মিত বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের ওপর পাকা সড়ক তৈরি করেছে এলজিইডি। যে সড়ক দিয়ে দুই উপজেলার বাসিন্দারা চলাচল করে থাকে। নদীর বালাগঞ্জ অংশের ফাজিলপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙন অব্যাহত থাকায় অনেক জায়গায় নদীর তীর বাঁধের কাছে চলে এসেছে। ভাঙন অব্যাহত থাকায় সড়কটিও নদীতে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ সড়কটি ভেঙে গেলে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যাপক দুর্ভোগে পড়বে বালাগঞ্জ ও ওসমানীনগর উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। এর আগে ফাজিলপুর এলাকায় বড় ধরনের নদীভাঙন দেখা দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সেখানে বালুভর্তি জিও ব্যাগ স্থাপন করে দেয়। এলাকাবাসীর অভিযোগ, ভাঙনকবলিত স্থানে যতগুলো জিও ব্যাগ দেওয়ার কথা ছিল সে পরিমাণ দেওয়া হয়নি। বর্তমানে সেখানে ২৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্পের কাজ চলছে। কাজটি যেন যথাযথভাবে হয় তা নিশ্চিত করার জন্য পাউবো কর্মকর্তাদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
ফাজিলপুর গ্রামের আল আমিন বলেন, ফাজিলপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে নদীভাঙনের শিকার হয়ে আসছে এলাকাবাসী। বুধবার যে স্থানটি ভেঙেছে গত বছরও সেখানে এক ব্যক্তির বসতঘর ছিল। নদী ভেঙে সড়কের কাছে চলে আসায় তারা খুবই আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন। যদি সড়কটি ভেঙে যায় তবে তাদের এলাকাটি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে।
মিনাজ মিয়া নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, যে স্থানটি ভেঙেছে সেখানে তাঁর চাচার ঘর ছিল। ভাঙনের কবলে পড়ে চলতি বছরে ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র সরে যেতে হয়েছে। বর্তমানে যে ভাঙন দেখা দিয়েছে তাতে বাঁধ ভেঙে যেতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, তিনি ভাঙনকবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। সেখানে ভাঙন রোধে তাৎক্ষণিক ২৫ লাখ টাকার একটি প্রকল্প নেওয়া হয়েছে। দ্রুততম সময়ে জিও ব্যাগ ও টিউব ব্যাগ স্থাপনের মাধ্যমে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে। নদীভাঙন রোধে সুরমা ও কুশিয়ারা নদীর ১১০ কিলোমিটার চর কাটার একটি প্রকল্প প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলেও জানান তিনি।