ভেজাল বীজে সর্বস্বান্ত কৃষক, ক্ষতিপূরণের দাবিতে মানববন্ধন
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে উচ্চমূল্যে ভেজাল বীজ কিনে টমেটো বপন করে সর্বস্বান্ত হয়েছে চাষিরা। এর প্রতিবাদে বীজ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে মানববন্ধন করেছেন তারা।
বুধবার (৬ নভেম্বর) বিকালে উপজেলার নরসিংপুর বাজারে এই মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে ইউনিয়নের শতাধিক চাষি অংশগ্রহণ করেন। এসময় অসাধু বীজ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ ক্ষতিপূরণের দাবি জানান।
মানববন্ধনে কৃষকরা অভিযোগ করে বলেন, নরসিংপুর বাজারের সকল বীজের লাইসেন্স মালিকরা দুষ্টু প্রকৃতির লোক, আওয়ামীলীগের দোসর। ক্ষমতার প্রভাবে বাজারের ভালো ব্যবসায়ীদের লাইসেন্স বাতিল করিয়ে তারা লাইসেন্স করে দুইনাম্বার ব্যবসা করে আসছে। বাজারে আর কেউ লাইসেন্স করার সুযোগ না পাওয়ায় অসাধু এই ব্যবসায়ীদের দুইনাম্বার বীজ এনে তাদের নিজেদের ইচ্ছেমতো ব্যবসা করে আসছে। নিম্মমানের বীজ দামি প্যাকেটজাত করে উচ্চমূল্যে বিক্রি করে তাদের সঙ্গে দিনের পর দিন প্রতারণা করে আসছেন। এসব বীজ ব্যবসার লাইসেন্সদারীরা নিজেদের অপকর্ম ডাকতে এখন পলাতক রয়েছেন।
বক্তারা আরও বলেন, প্রতারিত হয়ে ক্ষতিপূরণের দাবিতে ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এসিল্যান্ড ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন (১ শত কৃষকের গণস্বাক্ষরের মাধ্যমে) কৃষকদের পক্ষে নানু মিয়া নামে এক কৃষক। কিন্তু অভিযোগের একসপ্তাহে ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নেহের নিগার তনু কোন ব্যবস্থা নেয়নি। উল্টো আরও গতকাল মঙ্গলবার কৃষকরা তাদের অভিযোগ সম্পর্কে জানতে গেলে তিনি তাদের সাথে খারাপ ব্যবহার করেন।
স্থানীয় নরসিংপুর বাজারের ব্যবসায়ী সৈয়দ আহমদ ও আলী হোসেন’র যৌথভাবে পরিচালিত (লাইসেন্স বিহীন) বীজ, কীটনাসক ও সারের দোকানের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার (২৯ অক্টোবর) লিখিত এই অভিযোগ দায়ের করেন কৃষকরা।
কৃষকরা জানান, মাঠের পর মাঠ ফসল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। অন্যান্য ফসলের মাঠেও এর প্রভাব পড়ছে। তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। এসব চাষিরা প্রতারক ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণসহ সরকারের সহায়তা দাবি করেন। মানববন্ধনে প্রতারিত শতাধিক চাষিরা অংশগ্রহণ করে।
এ বিষয়ে বীজ দোকানদার আলী হোসেন দাবি করেন কোম্পানির কারণে এমনটি হয়েছে। কোম্পানি থেকে বীজ আনা হয়েছে, তারা যে রুপ প্যাকেটে বীজ দিয়েছে একই প্যাকেট সে বিক্রি করছে। বীজে কোন প্রতারণা করা হয়নি।
এদিকে কৃষি কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ মহসিন জানান, কৃষকদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে পরিদর্শন করা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হবে।