সিলেটে প্রিপেইড মিটারে গ্রাহকদের চরম ভোগান্তি
দৈনিকসিলেট প্রতিবেদক
সারা দেশে বিদ্যুৎ বিলে হয়রানি, আর নানা অনিয়ম দূর করতে প্রিপেইড মিটার বসানোর উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এজন্য পোস্ট পেইড মিটারের বদলে নতুন প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ চলছে। কিন্তু সিলেটে এ প্রিপেইড মিটার নিয়ে চলছে নানা অব্যবস্থাপনা ও অনিয়ম। নেয়া হচ্ছে অতিরিক্ত চার্জ, অজান্তেই স্থাপন করা হচ্ছে মিটার। আবার লক হলে গ্রাহকদের দৌড়ঝাঁপের অন্ত নেই। এ নিয়ে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।
২০০৪ সাল থেকে সিলেট নগরের বাসাবাড়ি ও বিভিন্ন মার্কেটে বিদ্যুতের প্রিপেইড মিটার বসানোর কাজ চলমান। পূর্বের পোস্ট পেইড মিটার সরিয়ে নতুন প্রিপেইড মিটার বসাতে গ্রাহকদের অনেকটা জোরই করা হচ্ছে। ক্ষেত্র বিশেষে আবার দাবি করা হচ্ছে অতিরিক্ত চার্জ। সুতরাং প্রিপেইড মিটারেও ভোগান্তি থেকে নিষ্কৃতি নেই গ্রাহকদের।
প্রিপেইড বিলে ‘বিবিধ’ নামে একটি শ্রেণিতে গ্রাহকদের কাছ থেকে ইচ্ছামতো টাকা আদায় করা হচ্ছে। এ নিয়ে নগরে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের মধ্যে বিরাজ করছে ক্ষোভ। বাড়তি চার্জে গ্রাহকদের আগ্রহ কমছে প্রিপেইড মিটারে।
ভুক্তভোগী গ্রাহকদের অভিযোগ, তাদের প্রিপেইড মিটার যখন-তখন বন্ধ হয়ে যায়। হুট করে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় সংযোগ। ফলে বিদ্যুৎহীন হয়ে থাকতে হয় ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
গ্রাহক হয়রানি বন্ধ ও প্রিপেইড মিটার স্থাপনের বিরুদ্ধে এরই মধ্যে ভুক্তভোগী গ্রাহকরা মানববন্ধনও করেছেন। একই সঙ্গে স্মারকলিপি দিয়েছেন বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড ও বিভাগীয় কমিশনার বরাবর।
এদিকে, হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যুৎ বিভাগ প্রিপেইড মিটার ও বিল সংক্রান্ত অভিযোগ পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য একটি কমিটি গঠন করেছে।
তবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড বিতরণ অঞ্চল সিলেটের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আব্দুল কাদির বলেন, গ্রাহক হয়রানি কমাতে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে উপর মহল থেকে। আর মিটার স্থাপনে বিদ্যুৎ বিভাগের কেউ টাকা চাওয়ার অভিযোগ পেলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এরই মধ্যে সিলেট সিটি করপোরেশনের আওতাধীন বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-১-এ ২৭৬৫৪টি, বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-২ এ-৬২৩২০টি, বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৩-এ ১৫২৮৫টি, বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৪-এ ২২৪৩৪টি এবং বিক্রয় ও বিতরণ বিভাগ-৫-এ ২৯৪০০টি প্রিপেইড মিটার স্থাপন করা হয়েছে।
সিলেটের সচেতন নাগরিক সমাজ বলছেন, বিদ্যুৎ ব্যবহারে হয়রানি ও ভোগান্তি থেকে বাঁচতে চায় সাধারণ মানুষ। তা না হলে প্রিপেইড মিটার স্থাপন প্রতিরোধ কমিটির মাধ্যমে তারা কঠোর আন্দোলনের ডাক দেবে।