‘আহারে চানাচুর-চাচা, কে মারল তারে?’
দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
জমজমাট হাটের এক কোনে সাজিদ মিয়ার (৭০) চানাচুরের পসরা ঘিরে ভিড় থাকত ক্রেতাদের। প্রতিদিন বিকেল ও সন্ধ্যায় স্থানীয় হাটে চানাচুর বিক্রি করতেন তিনি। বিক্রি শেষে রাতে ফিরে যেতেন বাড়ি।
চানাচুরওয়ালা সাজিদ মিয়ার রোজকার এ রুটিনে ছেদ পড়ে রবিবার (১০ নভেম্বর) রাতে। তিনি আর বাড়ি ফেরেননি। হাট থেকে রাতে বাড়ি না ফেরা চানাচুরওয়ালার লাশ মিলল সোমবার (১১ নভেম্বর) সকালে। গ্রামের পাশে নদীর তীরে একটি গাছের গোড়ায় পাওয়া যায় তার লাশ। গলায় গামছার প্যাঁচ থাকায় ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধ করে সাজিদ মিয়াকে হত্যা করা হয়েছে। হত্যার কারণ উদঘাটনে তদন্ত করছে পুলিশ।
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার চারিকাটা ইউনিয়নের সরুখেল গ্রাম থেকে সাজিদ মিয়ার লাশ উদ্ধার করা হয়। এলাকাবাসী জানান, সোমবার সকালে ইছাবা নদীর ধারে ঘাস কাটতে যায় কয়েকজন যুবক। তারা গাছের গোড়ার সঙ্গে বাঁধা বৃদ্ধের লাশ দেখে চিৎকার শুরু করলে আশপাশের লোকজন পুলিশে খবর দেন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় শনাক্ত হয় লাশটি চারিকাটা ইউনিয়নের নয়াখেল গ্রামের সাজিদ মিয়ার।
স্থানীয়রা জানান, সাজিদ মিয়া পাঁচ ছেলে-মেয়ের বাবা। তিনি পেশায় একজন চানাচুর বিক্রেতা। উপজেলার চতুলবাজারের সিএনজি স্টেশনে চানাচুর বিক্রি করে সংসার চালাতেন। রবিবার বিকেলে চতুলবাজার থেকে সন্ধ্যায় হরাতৈল জলছার বাজারে যান সাজিদ মিয়া। সেখানে চানাচুর বিক্রি করে আর বাড়ি ফেরেননি। তার লাশ গাছের গোড়ায় গলায় গামছা প্যাঁচানো অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশসহ স্থানীয়দের ধারণা, সজিদ মিয়াকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা লাশটি নদীর ধারে গাছের গোড়ায় ফেলে গেছেন।
হাটে চানাচুর কেনাবেচায় ব্যস্ত সাজিদ মিয়ার একটি ছবি আর গাছের গোড়ায় পড়ে থাকা লাশের ছবি দিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করেছেন অনেকেই। ইমরান হোসেন নামে চতুলবাজারের এক যুবক লিখেছেন, ‘আহারে চানাচুর-চাচা, কে মারল তারে, কেনে মারল?’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন প্রশ্নে নানা মন্তব্য ও আহাজারি ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনাটি পরিকল্পিত হত্যা ও হত্যার কারণ উদঘাটনের দাবি তাদের।
কারণ উদঘাটনে পুলিশের একটি দল কাজ করছে বলে জানান জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাসার মোহাম্মদ বদরুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘লাশের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে। পাশাপাশি ঘটনার তদন্তে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলসহ সাজিদ মিয়ার যাতায়াত এলাকা চতুলবাজারসহ বিভিন্ন জায়গায় খোঁজ-খবর নিচ্ছে।’