তাহিরপুরের শান্তিপুর নদীতে ৩২ লাখ টাকার অচল সেতু
তাহিরপুর প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাদাঘাট-চাঁনপুর সড়কের মধ্যে শান্তিপুর নদীর উপর গত অর্ধ যুগের বেশি সময় পূর্বে ৩২ লাখ টাকা ব্যয়ে একটি সেতু নির্মান করা হয়। কিন্তু সেতুতে উঠার জন্য দুই পাশে মাটি ভরাট করা হয়নি,নেই কোনো সংযোগ সড়কও।
ফলে নদীর উপর ঠায় দাঁড়িয়ে আছে সেতুটি, কেন আর কার স্বার্থে নির্মাণ করা হয়েছে তার উত্তর খোঁজে পাচ্ছে না সচেতন মহল। এই অবস্থায় ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে বড়ছড়া, চারাগাও,বাগলী তিনটি শুল্ক বন্দরসহ চলাচলকারী ১৫-২০ গ্রামের বাসিন্দাগনকে। এ কারনে যত দ্রুত সংযোগ সড়ক নির্মান করে অচল সেতুটিকে চলাচলের উপযোগী করার দাবী জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শান্তিপুর নদীতে লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের সুবিধাত্বে সেতুটি নির্মান কাজ সম্পন্ন হলেও একদিনের জন্যও ব্যবহার করার সৌভাগ্য হয়নি এলাকাবাসীর। আর জনদূর্ভোগ লাগবে দায়িত্বশীল কতৃপক্ষ গত ৭ বছরেও প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ না করায় বাধ্য হয়ে নদীর মধ্য দিয়ে বর্ষায় ও শুষ্ক মৌসুমে চলাচল করতে হচ্ছে বিভিন্ন যানবাহনসহ বহু মানুষকে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এলজিইডি (সুনামগঞ্জ) হিলিপ প্রকল্পে উপজেলার উত্তর বড়দল ইউনিয়নের বাদাঘাট-চানপুর সড়কে শান্তিপুর নদীর উপর ৩২ লাখ টাকায় নির্মাণ ব্যায়ে ব্রিজের দরপত্র আহবানের পর নির্মাণ কাজের ঠিকাদারি পায় সুনামগঞ্জ জেলার জামালগঞ্জ উপজেলার পারভেজ এন্টারপ্রাইজ। আর ২০১৭ সালেই সেতুটি নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করাও হয়।
স্থানীয়দের সাথে কথা বলে ও খোঁজ নিয়ে আরও জানা যায়,সরকারের অর্থ ব্যয় হলেও জনদূর্ভোগ কমেনি। সেতু নির্মাণের পর ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সামান্য মাটির কাজও করেনি। এছাড়াও অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচি প্রকল্পের(৩ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বরাদ্দের) আওতায় তৎকালীন সময়ে বরাদ্দ দেয়া হলেও শতভাগ মাটির কাজ হয়নি। আর সংযোগ সড়ক না থাকায় নির্মাণের পর থেকে এক দিনের জন্যও ব্যবহার করা হয়নি।
স্থানীয় বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, উপজেলার উত্তর শ্রীপুর,দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়নের ৩০টি গ্রামের বাসিন্দা, শিক্ষার্থী, ব্যবসায়ীসহ বিভিন্ন শ্রেনী পেশার মানুষ এই পথে বাদাঘাট বাজার হয়ে তাহিরপুর উপজেলা সদরে চলাচল করে। হেমন্তে এ নদীটি শুকিয়ে গেলে চলাচল করতে পারলেও বর্ষায় নদীটি ডুবে যাওয়ার কারণে এ পথে যাতায়াত করতে গিয়ে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হয়।
এই সড়ক পথে চলাচলকারী চানঁপুর গ্রামের বাসিন্দা জমির আলী জানান,সেতুর সাথে সংযোগ সড়ক হলে এলাকার অনেক বেকার যুবকদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। আর আমরা দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পেতাম। তাই সেতুটির সংযোগ সড়ক নির্মান করে চলাচলের উপযোগী করার দাবী জানাই।
উত্তর বড়দল ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মাসুক মিয়া জানান,সংযোগ সড়ক না থাকায় সেতুটি কোন কাজেই আসছে না। দুর্ভোগের শিকার হতে হচ্ছে এই পথে চলাচলকারী সবাইকে।
তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) মো.জাহিদুল ইসলাম জানান, জনদূর্ভোগ লাগবে সেতুটির বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।