মিশরীয় ফাউমি জাতের মুরগির খামারে সফলতা পেলেন জমির উদ্দিন
শাকির আহম্মেদ, শ্রীমঙ্গল থেকে
আত্মনির্ভরশীলতার জন্য কষ্টের বিকল্প নাই, এটাই যেন প্রমাণ করেছেন কলেজ শিক্ষার্থী মো: জমির উদ্দিন। মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশীদ্রোন ইউনিয়নের খোশবাস গ্রামে মিশরীয় ফাউমি জাতের মুরগির খামার করে পেয়েছেন সফলতা।
জমির উদ্দিন মৌলভীবাজার সরকারী কলেজের অর্নাস ২য় বর্ষে ও শ্রীমঙ্গল আনোয়ারুল উলুম ফাজিল ডিগ্রী মাদ্রাসার ফাজিল ২য় বর্ষের ছাত্র। লেখাপড়ার পাশাপাশি মিশরীয় ফাউমি জাতের মুরগির খামার করে নিজে যেমন স্বাবলম্বী হয়েছেন, তেমনি কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছেন এলাকার মানুষেরও। তাকে দেখে অনেকেই এখন আগ্রহী হচ্ছেন উদ্যোক্তা হতে।
চাকরি পিছনে না ছুটে নিজে থেকে কিছু করার ইচ্ছা ছিল জমির উদ্দিনের। সেছিল পরিবারের বড় ছেলে পরিবারের হাল ধরতে ও লেখাপড়ার খরছ যোগান দিতে প্রথমে নিজ এলাকায় দোকান কোটা নিয়ে মুদির দোকান দেন।
ইচ্ছে ছিল অন্য কিছু করার। তাই নিজ উদ্যোগে ২০২৩ সালে শেষের দিকে অন্যের জায়গা ভাড়া নিয়ে মিশরীয় ফাউমি জাতের ২১শত মুরগির বাচ্ছা দিয়ে শ্রীমঙ্গল উপজেলার আশীদ্রোন ইউনিয়নের খোশবাস গ্রামে গড়ে তোলেন লতিফিয়া ফাউমি ফার্র্ম। ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে মুরগির সংখ্যা। এখন তার ফার্মে ৩৫শত মিশরীয় ফাউমি জাতের মুরগি রয়েছে।
এদিকে শ্রীমঙ্গল উপজেলায় দিন দিন বাড়ছে হাঁস মুরগির খামারের সংখ্যা। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, গবাদিপশুসহ হাঁস মুরগির খামার রয়েছে ৯১৭টি। এরমধ্যে ব্রয়লার মুরগির খামার রয়েছে ১৮২টি, সোনালী মুরগির খামার রয়েছে ১৫টি, লিয়ার মুরগির খামার রয়েছে ২৬টি এবং মিশরীয় ফাউমি জাতের মুরগির খামার রয়েছে ১টি।
জমির উদ্দিন বলেন, লেখাপড়ার করে চাকরির পিছনে না ছুটে নিজে স্বাধীন থেকে কিছু করার ইচ্ছা ছিল আমার। অন্যের অধীনে চাকরি করা খারাপ লাগে। আমার ইচ্ছা ছিল নিজের উদ্দ্যোগে একটা কিছু করতে। অনেক চিন্তা ভাবনার পর আমি মিশরীয় ফাউমি জাতের মুরগ খামারের সিদ্ধান্ত নেই। যার শুরুটা সহজ ছিল না, কেননা খামার করতে অনেক টাকার প্রয়োজন হয়। যা আমার কাছে এত টাকা ছিল না। কিন্ত আমি মনোবল হারাইনি, আমার মনোবল ছিল যে আমি খামার করবো এবং ঋণ করে খামার দেই। আল্লাহর অশেষ মেহেরবানীতে আমার মুরগির খামারের ব্যবসা ভালো যাচ্ছে। এই উদ্যোক্তা বলেন, দেশের জন্য বোঝা না হয়ে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পেরে অনেক আনন্দিত বোধ করছি।
শ্রীমঙ্গল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) ডা: সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমরা লতিফিয়া ফাউমি ফার্মের সফলতায় বেশ আনন্দিত।
বেকার যুবকদের চাকরির জন্য না ঘুরে জমির উদ্দিনের মতো উদ্যোক্তা হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন এই প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা। জমির উদ্দিনের মতো উদ্যোক্তা হতে প্রতিদিনই দূরদূরান্ত থেকে অনেকেই আসছেন পরামর্শ নিতে।