রেজা চেয়ারম্যানকে গ্রেফতার দাবিতে মানববন্ধন
সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
একই পরিষদের সদস্যের উপর হামলার ঘটনায় মানববন্ধন-বিক্ষোভে উত্তাল সুনামগঞ্জ জেলা শহরের ট্রাফিক পয়েন্ট এলাকা। বর্বরোচিত হামলাকারী আমির হোসেন রেজা ও তাঁর বাহিনীকে গ্রেফতার দাবীতে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। রোববার (২৪ নভেম্বর) বেলা ১২টায় মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা চলে ট্রাফিক পয়েন্টে।
সুরমা ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি ও ৭নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ফিরোজ মিয়ার সভাপতিত্বে ঘন্টাব্যাপি চলা মানববন্ধনে বক্তব্য দেন সুনামগঞ্জ প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি আল হেলাল, সৈয়দপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক শামসুল আলম রাসেল, একই পরিষদের সদস্য আব্দুল হাই, মঙ্গল মিয়া, মোরশেদ মিয়া, সংরক্ষিত নারী সদস্যা তানজিনা বেগম, সাহেনা আক্তার, মাজেদা আক্তার, ব্যবসায়ী আম্বর আলী, রমজান মিয়া, আব্দুল মালেক, সাবেক সদস্য মানিক মিয়া, আব্দুর রাজ্জাক, ডা. হাবিবুল্লাহ মিয়া, ফজর আলী, জসিম উদ্দিন, সাবেক সদস্য খসরু মিয়া, জামাল মিয়াসহ স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীবৃন্দ।
মানববন্ধন শেষে প্রধান উপদেষ্টা বরাবরে ২৫ দফা অভিযোগ সংবলিত একটি স্মারকলিপি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে প্রদান করা হয়। এতে ফ্যাসিস্ট চেয়ারম্যান কর্তৃক বৈষম্যর শিকার ও বঞ্চিত ইউপি সদস্যদের নিরাপত্তা প্রদানের জন্য প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়।
উল্লেখ্য, সাক্ষী দেওয়ার জের ধরে একই পরিষদের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যানের উপর হামলা করেছেন ক্ষুদ চেয়ারম্যান। ন্যাক্কারজনক এ ঘটনাটি ঘটে ২১ নভেম্বর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুনামগঞ্জ জেলা শহরের জেল রোড এলাকায়। গুরুতর আহত ইউপি সদস্য খুর্শিদ মিয়াকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের অনাস্থাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজা ও তার বাহিনী হামলা চালিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন আহত ইউপি সদস্য খোরশেদ মিয়া। তিনি ওই পরিষদের ৪নং ওয়ার্ডের সদস্য ও প্যানেল চেয়ারম্যান।
চেয়ারম্যানরর বিরুদ্ধে সাক্ষী দেয়ার জেরে এ ঘটনা বলছেন জনপ্রতিনিধিগণ। তারা বলেন, অনাস্থাপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে জেলা প্রশাসক ও সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নির্দেশে ২০ নভেম্বর তদন্ত করেন উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার এনামুর রহিম। তদন্ত কার্যক্রমে হাজির হয়ে পরিষদের সকল জনপ্রতিনিধিগণ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে তদন্ত কর্মকর্তার কাছে সাক্ষ্য প্রদান করেন। পরে ক্ষুব্ধ হয়ে আমির হোসেন রেজা সাক্ষী দেওয়া ইউপি সদস্যদের দেখে নেয়ার হুমকি দেন। বৃহস্পতিবার ইউপি সদস্য খোরশেদ মিয়ার উপর অতর্কিত হামলা করেন চেয়ারম্যান রেজা ও তার বাহিনী।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আমির হোসেন রেজা বলেন, ঘটনার সাথে তার কিংবা স্বজনদের কোন সম্পৃক্ততা নেই। সুনামগঞ্জ সদর মডেল থানা পুলিশের অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমুল হক বলেন, হামলায় আহত ইউপি সদস্যের অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
জানা যায়, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার মিছিল ও জেলা বিএনপি কার্যালয় ভাংচুরের ঘটনায় দায়েরকৃত দ্রুতবিচার আইন মামলায় আসামী হিসেবে গত সোমবার (২১ অক্টোবর) সন্ধ্যায় সদর মডেল থানা পুলিশ উকিলপাড়া থেকে আটক করে। থানাহাজতে আটক থাকার পর ভোররাতে মেডিকেলের কাগজপত্র দেখিয়ে অঙ্গীকারনামা দিয়ে ছাড়া পান তিনি। তলবমাত্র থানায় পুলিশের কাছে স্বেচ্ছায় আত্মসমর্পন করবেন মর্মে অঙ্গীকার করেন চেয়ারম্যান রেজা।