জামালগঞ্জে ৩ শিক্ষকের অনিয়ম-দূর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযোগ
জামালগঞ্জ প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের জামালগঞ্জ উপজেলায় এক প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন এলাকাবাসী।
গতকাল সকালে উপজেলার সাচনা বাজার ইউনিয়নের ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন এবং সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল ও আব্দুল মালিকের বিরুদ্ধে অনিয়ম, অসদাচরণ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ফাজিলপুর, ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামের প্রায় শতাধিক ব্যক্তি স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগপত্র দাখিল করেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, উপজেলার ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন এই স্কুলে শুরু থেকেই অবস্থান করছেন। দীর্ঘদিন এখানে থাকায় তিনি বিভিন্ন ধরণের অনিয়ম-দুর্নীতির সাথে জড়িয়ে গেছেন। তিনি দুর্নীতির পাশাপাশি শিক্ষার্থীসহ অভিভাবকদের সাথে অশোভন আচরণের ফলে স্কুলটির অবকাঠামোসহ শিক্ষায় ধস নেমেছে। এছাড়া স্কুলের সময়সূচীকে গুরুত্ব না দিয়ে ইচ্ছেমত স্কুলে আসা ও দুপুরের খাবার খেতে বাড়িতে গেলে ওইদিন আর স্কুলে না আসা নিয়মে পরিণত করেছেন। স্কুল ছুটির পূর্বেই তার সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল ও আব্দুল মালিক স্কুল ত্যাগ করেন। গত প্রায় কয়েকবছর যাবত এভাবেই শিক্ষা ব্যবস্থাটাকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিয়েছে এই ৩ শিক্ষক। তাছাড়া শিক্ষার্থীদের দিয়ে সিগারেট ক্রয়সহ ক্লাসরুমে প্রকাশ্যে ধুমপান করেন তারা। চলতি বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের আগের বছরগুলোতে তিনি তার অনুগত স্কুল কমিটি সাজিয়ে যেনতেন ভাবে স্কুল পরিচালনা করতেন। যেখানে স্কুল প্রতিবেশী কোনো মানুষকে তোয়াক্কা করতেন না। সহকারী দুই শিক্ষকের সহযোগিতায় তৎকালীন সময়ে তিনি সকল অনিয়ম করতেন। অনিয়মকে তিনি নিয়মে পরিণত করেছেন। ফলে তার সহকারী আব্দুল আউয়াল ও আব্দুল মালিক একই ধাঁচে চলতে থাকেন। প্রধান শিক্ষক তার কমিটির সভাপতির স্বাক্ষর জাল করে বিভিন্ন সময় বিল উত্তোলন করেছেন বলেও অভিযোগে উল্লেখ করেন।
আওয়ামী সরকারের আ’মলে তিনি রাজনৈতিক প্রভাব ও স্কুলের পাশে নিজ গ্রাম হওয়ায় স্থানীয়ভাবে পেশি শক্তি দেখিয়ে চলেছেন। যা এখনো চলমান আছে বলে উল্লেখ করেন গ্রামবাসী। অভিযোগের ভিত্তিতে গণমাধ্যমকর্মীরা সরেজমিনে গেলে প্রধান শিক্ষক উপস্থিত থাকলেও অভিযুক্ত সহকারী শিক্ষক আব্দুল মালিক স্কুলে উপস্থিত ছিলেন না।
এব্যাপারে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মকবুল হোসেন বলেন, আমার বিরুদ্ধে আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা। সম্প্রতি গ্রামের লোকজন আমার পেছনে লেগেছে আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করার জন্য। সহকারী শিক্ষক আব্দুল আউয়াল বলেন, আমার বাবা একজন শিক্ষক ছিলেন, আমি তাঁর পেশাকে সম্মান করে এই পেশায় এসেছি। আমি প্রতিদিন নিয়মিত স্কুলে আসা যাওয়া করি। আমার উপর আনা সকল অভিযোগ মিথ্যা।
এব্যাপারে জামালগঞ্জ উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শামীম আহমদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বক্তব্য দিতে তালবাহানা করেন। পরে গণমাধ্যম কর্মীদের তোপের মুখে তিনি তার বক্তব্যে বলেন, ফাজিলপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকসহ দুই সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।