বালু-পাথর লুটপাটকারীদের ছাড় দেওয়া হবে না: কোম্পানীগঞ্জে ডিসি
কোম্পানীগঞ্জ প্রতিনিধি
গণ-অভ্যুত্থানের পর থেকে সিলেটের বিভিন্ন স্থান থেকে যারা বালু-পাথর লুটপাট করেছেন তাদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না। ইতোমধ্যেই বালু-পাথর লুটপাটকারীদেরকে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ও অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে এবং আগামী দিনগুলোতে বালু ও পাথরখেকোদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।
বৃহস্পতিবার (৫ ডিসেম্বর) সকাল ১১টায় কোম্পানীগঞ্জের ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি, রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকা বাঙ্কার পরিদর্শন শেষে উপজেলা পরিষদের হলরুমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবিদা সুলতানার সভাপতিত্বে উপজেলার বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তা, বিশিষ্টজন, সাংবাদিক ও ছাত্র-জনতার সাথে মতবিনিময় সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা জানান জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ।
এসময় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যক্তিবর্গ, ছাত্র-জনতা সহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ডিসির কাছে অভিযোগ করেন ভোলাগঞ্জ ও রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকার আশপাশের তিনটি বিজিবি ক্যাম্পের সদস্যদের উপস্থিতে ও তাদের ম্যানেজ করে লুটপাট হচ্ছে বালু-পাথর। অভিযোগ শুনে বিজিবির উদ্বর্তন কর্মকর্তাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বস্ত করেন ডিসি।
বৃহস্পতিবার সকালে কোম্পানীগঞ্জে উপস্থিত হয়ে প্রথমে ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারি, রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকা বাঙ্কার পরিদর্শন করে। পরে মনিপুরীপাড়া, ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়ন পরিষদের কার্যালয়, কোম্পানীগঞ্জ থানা ও উপজেলা ভূমি অফিস পরিদর্শন করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) হোসাইন মো: আল জুনায়েদ, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফরহাদ হোসেন, সিলেট জেলা বিএনপির উপদেষ্টা এডভোকেট কামাল হোসেন, কোম্পানীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি আবুল হোসেন, ইসলামপুর পশ্চিম ইউনিয়নের চেয়ারম্যান জিয়াদ আলী, পূর্ব ইসলামপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমগীর আলম, উত্তর রণিখাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফয়জুর রহমান, উপজেলা বিএনপির সভাপতি শাহাব উদ্দিন, সাধারণ সম্পাদক আলী আকবর, উপজেলা জামায়েতের আমীর ফয়জুর রহমান প্রমূখ।
বিকাল ৪টায় বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের কেন্দ্রীয় প্রতিনিধি দলের একটি টীম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফরহাদ হোসেনের নেতৃত্বে স্থানীয় ছাত্র-জনতা, বিএনপির নেতৃবৃন্দ সহ ভোলাগঞ্জ ও রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকা বাঙ্কার পরিদর্শন করেন। এসময় পাথর খেকোদের সাথে ধাওয়া পাল্টা দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
কোম্পানীগঞ্জে লুটপাটের চিত্র দেখে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ক্ষোভ প্রকাশ করে সাংবাদিকদের বলেন, রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকায় যে লুটপাট হয়ে তা দেখে মনে হচ্ছে যুদ্ধবিধ্বস্ত কোন এলাকার চিত্র। তাঁরা বলেন স্থানীয় মানুষজনদের তথ্য মতে এসব লুটপাট বিজিবি সদস্যদের ম্যানেজ করেই হচ্ছে। আমরা পরিদর্শনের সময়ও দেখেছি বিজিবির একটি নৌকার উপস্থিতে দিনের আলোতে রেলওয়ের সংরক্ষিত এলাকা বাঙ্কার থেকে পাথর লুটপাট হচ্ছে এবং বাঙ্কার এলাকার আশপাশের বিজিবি তিনটি ক্যাম্প থাকার পরও কিভাবে লুটপাট হয় তা সবাই বুঝে।