ফ্যাসিস্টদের সাথে কোন আপোষ নেই: মুশফিকুল ফজল
দৈনিকসিলেটডটকম
সিনিয়র সচিব পদমর্যাদার বিদেশস্থ বাংলাদেশ মিশনের রাষ্ট্রদূত সাংবাদিক এম মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেছেন, আওয়ামীলীগ ফ্যাসিস্টদের সাথে কোন আপোষ নেই। সরকারী কর্মকর্তা কিংবা রাজনৈতিক দল কেউ কোন আপোষ করবেন না। যদি কোনো রাজনৈতিক দল আপোষ করে তাহলে শহীদের রক্তের সাথে বেঈমানি হবে, আবু সাঈদদের রক্তের সাথে বেঈমানী হবে। কেউ কোনো আপোষ করবেন না। এব্যাপারে জিরো টলারেন্স থাকতে সকলের প্রতি অনুরোধ জানান।তিনি সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, এর ব্যতিক্রম হলে আরেকটি ৫ আগস্ট হবে।তিনি বলেন, পলাশীর প্রান্তরে যখন স্বাধীনতা বিপন্ন হয়েছিল তখন সিরাজের পাশে মীর মদন, মোহনলালরা যেমন ছিল তেমনি জগৎশেঠ,রায়দুর্লভ,মীর জাফরদেরকেও চিহ্নিত করা হয়েছিল। এখন ঘসেটি বেগম নয়াদিল্লীতে বসে উল্টা পাল্টা কথা বলছেন। তিনি বলেন, আ’লীগ হাসিনার দোসরদের কেউ রেফারেন্স দিবেন না।দোসর ফ্যাসিস্টরা ছল ছাতুরী করে কাছে ভিড়তে চাইবে। তা হতে দিবেন না।
মুশফিকুল ফজল আনসারী রোববার(২৯ ডিসেম্বর) সকালে সিলেট সার্কিট হাউস মিলনায়তনে জেলা প্রশাসন আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা বলে। রাজনীতিবিদ, প্রশাসনিক কর্মকর্তা,সুশীল সমাজ ও সুধীজনদের নিয়ে অনুষ্ঠিত মতবিনিময় সভায় মুশফিকুল ফজল আনসারী বলেন, ছাত্র জনতা আমাদেরকে মুক্ত বাংলাদেশ উপহার দিয়েছে। আন্দোলনে শহীদদের শ্রদ্ধা ও পঙ্গুদের জাতীয় বীর উল্লেখ করে তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসার গাফলতি সহ্য করা হবে না। তিনি সুচিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা প্রদান করেন। তিনি বলেন, বিগত আওয়ামীলীগ সরকার দেশের বুরোক্রেসীকে ধ্বংস করেছিল। বৈষম্যের শিকার হয়েছেন মেধাবী আমলারা। তিনি অন্তর্বর্তী কালীন সরকারের প্রধান ইউনুস ও তাঁর ক্যবিনেটের প্রশংসা করে বলেন দেশকে এগিয়ে নিতে সবাই মিলে সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে। তিনি বাজার ব্যবস্থাপনা সুসংহত, দপ্তর গুলোকে আরো গতিশীল করতে প্রশাসনের প্রতি আহবান জানান।
মুশফিক বলেন, বিগত ১৫ বছর দেশে কোন নির্বাচন হয়নি। ইউনুস এর সোসাল বিজনেস কনসেপ্ট অনেক বড় প্রাপ্তি। তিনি একজন গ্লোবাল লিডার। দেশের স্বার্থে ছাত্র জনতার প্রত্যাশা পূরণে তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন। তিনি বলেন, ৫ আগস্ট স্বৈরাচারিণী হাসিনার পতনের পর গণভবনে হামলে পড়েছিল মানুষ। সবুজ প্রান্তরে মানুষ নামাজ পড়েছে সেজদা অবনত চিত্তে। এ থেকে বুঝা যায় মানুষ কত কষ্টে ছিল। তিনি বলেন, সিলেটে বরাবর সহাবস্থান এর একটি পরিবেশ ছিল। আওয়ামীলীগ এটিও ধ্বংস করেছে। সিলেটে যাতে ফ্যাসিস্টরা কোন সুযোগ না নিতে পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট যুগের মতো বালু মহাল, পাথর লুটপাট, ফুটপাথ দখলের সংস্কৃতি থেকে বের হতে হবে। এগুলো রাষ্ট্রের রাজস্ব খাত। নিয়মতান্ত্রিক পন্থায় সব কিছুই হবে। কোন দখলবাজি চলবে না।
মুশফিক বলেন, আমরা সিলেটকে নান্দনিক সিলেট হিসেবে গড়ে তুলতে চাই। আমার রাজনৈতিক কোন অভিলাষ নেই। কেউ পিটালেও নির্বাচন করব না। তবে সব সময় বাংলাদেশকে রিপ্রেজেন্ট করবোই। তিনি বলেন, সিলেটবাসীর সৌভাগ্য এম সাইফুর রহমানের মতো মানুষ পেয়েছিল, আর দুর্ভাগ্য হলো আবুল মোমেনের মতো মানুষ পেয়েছিলো।তিনি প্রয়াত হারিছ চৌধুরীর রুহের মাগফেরাত কামনা করে তার মেয়ে ব্যারিস্টার সামিরা রহমানের জন্য সকলের সহযোগিতা চান।
সিলেটের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন, সিলেটে বিভাগীয় কমিশনার খান মো. রেজা-উন-নবী, ডিআইজি সিলেট রেঞ্জ মুশফেকুর রহমান, সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম, বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিফতাহ সিদ্দিকী, মহানগর বিএনপির সভাপতি রেজাউল হাসান লোদী, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট এমরান আহমদ চৌধুরী, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি জয়নাল আবেদীন, মহানগর জামায়াতের নায়েবে আমীর নুরুল ইসলাম বাবুল, বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থ্যা (বাসস) সিলেট ব্যাুরো প্রদান সিনিয়র সাংবাদিক সেলিম আউয়াল, সিলেটের এডিশনাল পিপি এডভোকেট আব্দুল মুকিত অপি, সিলেট প্রেসক্লাবের সিনিয়র সহ সভাপতি খালেদ আহমদ, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলজার আহমদ হেলাল, সিনিয়র সহ সভাপতি আব্দুল মুহিত দিদার, সাধারণ সম্পাদক এম সাইফুর রহমান তালুকদার, সাংবাদিক নুর আহমদ প্রমুখ।