শাবিপ্রবিতে স্বাস্থ্য চ্যালেঞ্জ বিষয়ক আলোচনা সভা
শাবিপ্রবি প্রতিনিধি
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) বয়স্কদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের চ্যালেঞ্জ বিষয়ক আলোচনা সভার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার ( ৭ জানুয়ারি) সকাল ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা কেন্দ্রের উদ্যোগে মিনি অডিটোরিয়ামে এ সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক অধ্যাপক আবুল কালাম আজাদের সভাপতিত্বে ও জিন প্রকৌশল ও জীবপ্রযুক্তি বিভাগের অধ্যাপক মো. জাকির হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপ উপাচার্য অধ্যাপক সাজেদুল করিম।
উপ উপাচার্য বলেন, “ মানবসম্পদ কে জিইয়ে রাখতে হলে, যেকোন মানুষ থেকে প্রোডাক্টিভ কিছু বের করতে হলে জনস্বাস্থ্য উপর বেশি বেশি গবেষণা জরুরি। কিন্তু আমাদের বাংলাদেশে জনস্বাস্থ্য উপর অন্য দেশের তুলনায় এত বেশি গবেষণা হয় না। উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে বয়স্কদের চিকিৎসা ব্যয় ভার বহন করা হয়। বাংলাদেশসহ প্রায় উন্নতশীল দেশগুলোতে সে চর্চা নেই। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তির উপর বয়স্ক অভিভাবকদের তাকিয়ে থাকতে হয়। কিন্তু বিশ্বায়নের কারণে বাংলাদেশের সন্তানদের মধ্যেও সে চর্চা হারিয়ে যাচ্ছে। জীবনের একটা মূহুর্তে বাপ-মার স্থান হয় বৃদ্ধাশ্রম। আবার এর উল্টো চিত্রও দেখা যায়, বাপ মায়ের কেবল চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে অনেক পরিবারকে নিঃস্ব হতে হয়। তাই রাষ্ট্র নীতি নির্ধারকদের এ বিষয়ে নজর দেওয়া সময়ের দাবি।”
অনুষ্ঠানে কি নোট স্পিকার হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব ওয়েস্ট লন্ডনের অধ্যাপক হাফিজ টি এ খান। বক্তব্যে এ অধ্যাপক তার গবেষণা প্রবন্ধের আলোকে বলেন, “বিশ্বে জনসংখ্যা দ্রুত বয়স্ক হচ্ছে। জন্মহার কমে যাচ্ছে এবং মানুষের আয়ু বাড়ছে। ২০৫০ সালের মধ্যে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের সংখ্যার তুলনায় ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষের সংখ্যা বেড়ে যাবে। এই পরিবর্তন অর্থনীতি, স্বাস্থ্যসেবা, পরিবার এবং সামাজিক ব্যবস্থায় বড় চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে। বয়স্ক মানুষরা দীর্ঘস্থায়ী রোগ, শারীরিক দুর্বলতা, মানসিক চাপ, সামাজিক বিচ্ছিন্নতা, আর্থিক অনিশ্চয়তা এবং বয়স বৈষম্যসহ বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হন। পরিবহন, আবাসন এবং স্বাস্থ্যসেবার অভাবও তাদের জন্য বড় বাধা। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা আরও উন্নত করতে হবে।”
তিনি আরও বলেন, “হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা ও অন্যান্য রোগ মোকাবিলায় কার্যকর নীতিমালা প্রয়োজন। পাশাপাশি বয়স্কদের জন্য একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সুরক্ষিত পরিবেশ নিশ্চিত করতে সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে। এটি শুধু বয়স্কদেরই নয়, পুরো সমাজের জন্য একটি ইতিবাচক ভবিষ্যৎ গড়তে সাহায্য করবে।”
এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ইসমাঈল হোসেন ও ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির জনস্বাস্থ্য বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক এবিএম আলাউদ্দিন চৌধুরী।
এসময় জনস্বাস্থ্য বিষয়ে গবেষণা করতে আগ্রহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ প্রায় শতাধিক অংশগ্রহণকারী উপস্থিত ছিলেন।
এদিকে অনুষ্ঠানের স্বাগত বক্তব্য পরে আমন্ত্রিত আলোচকদের হাতে সম্মাননা ক্রেস্ট তুলে দের বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য , কোষাধ্যক্ষ ও গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক।