ভারত সীমান্তে মিললো চুনারুঘাটের জহুল আলীর মরদেহ
নুর উদ্দিন সুমন, হবিগঞ্জ
নিখোঁজের দুইদিন পর ভারত সীমান্তে চুনারুঘাটের জহুল আলী(৬০) নামে এক বৃদ্ধর মরদেহ উদ্ধার করেছে খোয়াই টাউনের থানা পুলিশ। মরদেহটি হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার পশ্চিম ডুলনা গ্রামের মৃত মুনছব উল্ল্যার পুত্র। তিনি পেশায় একজন নিরাপত্তা প্রহরী। তিনি ঢাকা বসুন্ধরা এসডিএল কোম্পানি লিমিটেড কর্মরত।
পুলিশ ও নিহতর পারিবারিক সূত্র জানা যায়, গত ৪ জানুয়ারি ৫ দিনের ছুটিতে নিজ বাড়ী পশ্চিম ডুলনা আসেন। আসার পর গত ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় তিনি নিজ বাড়ী থেকে লুঙ্গি বিক্রয়ের কথা বলে বের হন। পরবর্তীতে অনেক সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও তিনি বাড়ীতে ফিরে না আসায় তার পরিবারের লোকজন তাকে অনেক খোঁজাখুজি করেন। কোন সন্ধান পাননি। অবশেষে ৭ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে জানতে পারেন ভারতের সীমান্তবর্তী এলাকার গৌরনগরের খোয়াই নদীতে একটি অজ্ঞাতনামা একটি মরদেহ পড়ে আছে । ওই মরদেহটি ভারতের খোয়াই টাউন পুলিশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য খোয়াই টাউন সরকারী হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে। পরবর্তীতে ওই মরদেহটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে আপলোড হয় মৃত ব্যক্তির সন্ধ্যান চেয়ে।
এরপর স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও লোকজন এবং নিহতর পরিবারের লোকজনদের ওই অজ্ঞাতনামা মরদেহের ছবি দেখে তারা জহুর আলী বলে শনাক্ত করে। স্থানীয় ভাবে জানা যায় যে, তিনি ৩ সন্তানের জনক। বড় মেয়ে তাছলিমা আক্তার (২৩), মেঝো মেয়ে আছমা আক্তার (২১) ও ছোট ছেলে ওলি মিয়া (২০) স্ত্রী সুফিয়া খাতুন (৪০)।
এবিষয়ে নিহতর মেঝো মেয়ে আছমা আক্তার বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে আমারা খবর পাই, আমার মনে হয়না বাবা ভারতে গেছেন, আমাদের ধারণা তাকে বাংলাদেশে হত্যা করে ভারতে লাশ ফেলা হয়েছে। নিহতর শ্যালক মো: শাহিন মিয়া বলেন আমার ভগ্নিপতি খুবই সহজ সরল, তাকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এর বিচার চাই।
এ তথ্য নিশ্চিত করে চুনারুঘাট থানার ওসি মো: নুর আলম বলেন, কারা হত্যা করেছে ঠিক বলতে পারবনা সেটি তদন্তের বিষয়। আমরা নিহতর পরিবারের কাছ থেকে জানতে পেরে ভারতের সংশ্লিষ্ট থানায় যোগাযোগ করেছি এবং মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে, আইনগত বিষয়টি প্রক্রিয়াদিন।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া বলেন, জহুর আলী কিভাবে মারা গেছেন বলতে পারবনা তবে মরদেহ ভারতের একটি হাসপাতালের মর্গে আছে বলে জানতে পারছি। অফিসিয়াল কোন তথ্য আমার কাছে নেই। সন্ধ্যা ৬টায় দিকে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিল এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নিহত জহুর আলী সোমবার ৬ জানুয়ারি ২০২৫ কোন এক সময়ে হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়নের দায়িত্বপূর্ণ এলাকার গুইবিল বিওপির মানিকভান্ডার নামক স্থানের মেইন পিলার ১৯৬৮/এম এর নিকট দিয়ে ভারতে প্রবেশ করে। একই দিন আনুমানিক সকাল ১০টার দিকে ভারতের আনুমানিক ৩ কিঃমিঃ অভ্যন্তরে স্থানীয় জনগোষ্ঠী খোয়াই থানার অন্তর্গত গৌরনগর এলাকায় রাস্তার পাশে একটি মৃতদেহ পরে থাকতে দেখে স্থানীয় খোয়াই থানায় খবর দেয়। সংবাদ প্রাপ্তির পর ভারতের খোয়াই থানা থেকে একটি টহল দল ঘটনাস্থলে গিয়ে তাকে (মৃত অবস্থায়) উদ্ধার করে খোয়াই জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে “মৃত” নিশ্চিত করে।
উল্লেখ্য, ব্যক্তির মৃত্যুর কারণ উদঘাটনের জন্য সংশ্লিষ্ট থানা কর্তৃক তদন্ত কার্যক্রম চলমান রয়েছে এবং কার্যক্রম শেষে মরদেহ বাংলাদেশ পুলিশের নিকট হস্তান্তর করা হবে বলে জানা যায়। হবিগঞ্জ ব্যাটালিয়ন (৫৫ বিজিবি) এর অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল তানজিল সংশ্লিষ্ট বিএসএফ কমান্ড্যান্ট এর সাথে যোগাযোগ করে উপরোক্ত সংবাদের সত্যতা নিশ্চিত করেন।