৬ মাসে সুনামগঞ্জ সীমান্তে ২৬ কোটি ৭৬ লাখ টাকার চোরাই পণ্য জব্দ

রাজু আহমেদ রমজান, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের সীমান্তজুড়ে অপরাধ দমনে কঠোর অবস্থানে রয়েছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা, চোরাচালান, নারী-শিশু পাচারসহ বিভিন্ন অপতৎপরতারোধে আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা বৃদ্ধি করা হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় সীমান্তজুড়ে জিরো টলারেন্স নীতিতে একনিষ্ঠভাবে অর্পিত দায়িত্বপালন করে আসছে বিজিবি। বর্তমানে সীমান্তজুড়ে চোরাচালানসহ বিভিন্ন অপরাধের মাত্রা কমেছে অনেক। স্থানীয় সচেতন নাগরিকগন মনে করছেন, সীমান্তবাসীদের সাথে জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে মতবিনিময় সভা হওয়া এবং টহল জোরদারের কারণে অনেকটা স্বস্তি ফিরেছে সীমান্ত জনপদে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গেল ৬ মাসে অতীতের রেকর্ড ভেঙে দিয়েছে সীমান্তের অতন্ত্র প্রহরী বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) জোয়ানগন। গত ৬ মাসে শুল্কফাঁকি দিয়ে আসা বিপুল পরিমাণ ভারতীয় বিভিন্ন পণসামগ্রী জব্দ করতে সক্ষম হয় সংশ্লিষ্ট বিওপি টহল দল। সীমান্তে কঠোর নিরাপত্তা বেষ্টনী থাকায় রাষ্ট্রীয় কোষাগারে গত ৬ মাসে জমা পড়েছে ২৬ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ৮শ ২৫ টাকা। সুনামগঞ্জ বিজিবি ব্যাটালিয়ন-২৮ এর কমান্ডিং অফিসারের কঠোর নির্দেশনায় ব্যাটালিয়ন অধীন ২০টি বিওপি-এর টহল দল স্মরণকালের বিপুল পরিমাণ অর্থ জমা করতে সক্ষম হয়েছে।
জানা গেছে, ব্যাটালিয়ন অধীন ২০টি বিওপি (বর্ডার অবজারভেশন পোস্ট) এর মধ্যে কোষাগারে সবচেয়ে বেশি অর্থ জমা দিতে সক্ষম হয়েছে ডলুরা বিওপি। যার সিজার মূল্য- ৯ কোটি ১৩ লাখ ৯৪ হাজার তিনশ দুই টাকা। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে চিনাকান্দি বিওপি। যার সিজার মূল্য- ২ কোটি ৮৪ লাখ ৭২ হাজার ৬শ ৭৭ টাকা। তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে লাউড়গড় বিওপি। যার সিজার মূল্য- ২ কোটি ৪৫ লাখ ১৬ হাজার দুইশ ৮১ টাকা।
এছাড়া ব্যাটালিয়ন সদর- এককোটি ৫০ লাখ ৬২ হাজার ৯শ টাকা, বাগানবাড়ি বিওপি- এককোটি ৪৪ লাখ ৫৬ হাজার একশ ২৫ টাকা, নারায়ণতলা বিওপি- এককোটি ২৫ লাখ ৫০ হাজার চারশ ৫৫ টাকা, চারাগাঁও বিওপি এককোটি ৯ লাখ ১১ হাজার সাতশ ৭০ টাকা, মাটিরাবন বিওপি-৫৩ লাখ ৭৮ হাজার ৭৫ টাকার ভারতীয় বিভিন্ন পণ জব্দ করে। বাঙ্গালভিটা বিওপি ৬৩ লাখ ২৫ হাজার দুইশ ৫০ টাকা, বিরেন্দ্রনগর বিওপি ৩৮ লাখ ৫১ হাজার চারশ ৫০ টাকা, বালিয়াঘাট বিওপি ৪৭ লাখ ৬৪ হাজার টাকা, টেকেরঘাট বিওপি- ৭১ লাখ ৭৬ হাজার ৬শ ১৭ টাকা, চাঁনপুর বিওপি- ৫৬ লাখ ২৬ হাজার ৫শ ৩২ টাকা, মাছিমপুর বিওপি- ৭৩ লাখ ৭৮ হাজার ৩শ ৯৫ টাকা, চিনাউড়া বিওপি- ৭০ লাখ ৪৫ হাজার ৫০ টাকা, বনগাঁও বিওপি- ৬১ লাখ ৩৯ হাজার একশ ৬ টাকা, আশাউড়া বিওপি- ৪২ লাখ ৬০ হাজার ৯শ টাকা, মাঠগাঁও বিওপি- ৩৭ লাখ ২৭ হাজার একশ ৫০ টাকা, পেকপাড়া বিওপি- ৫৫ লাখ ৬৬ হাজার ৮শ ২৫ টাকা, বাঁশতলা বিওপি- ৩০ লাখ ৯১ হাজার ৯শ ৬৫ টাকা মূল্যের ভারতীয় বিভিন্ন পণসামগ্রী জব্দ করেছে। বিজিবি ব্যাটালিয়ন-২৮ এর প্রেরিত তথ্যসূত্রে জানা গেছে এসব সিজার মূল্য।
সুনামগঞ্জ বিজিবি ব্যাটালিয়ন-২৮ এর কমান্ডিং অফিসার (সিও) লেফটেন্যান্ট কর্নেল একেএম জাকারিয়া কাদির বলেন, সীমান্তে নিরাপত্তা রক্ষা, চোরাচালান, অবৈধ অনুপ্রবেশ, নারী-শিশু পাচারসহ বিভিন্ন অপতৎপরতারোধে আভিযানিক কার্যক্রম ও গোয়েন্দা তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে।