লিবিয়ায় ৪৫ লাখেও বাঁচানো গেল না রাকিবের প্রাণ

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
সোহাগ আর মাজেদ দালালকে এ পর্যন্ত ৪৫ লাখ টাকা দিয়েছি। এরপর ছেলের মৃত্যুর খবর শুনতে হলো। হতাশাগ্রস্ত হয়ে এখন শুধু ফেল ফেল করে চেয়ে থাকেন আর এ কথা বলতে থাকেন রাকিবের বাবা নাজিম উদ্দিন মহাজন।
লিবিয়ায় দালাল চক্রের নির্যাতনের মাদারীপুরের এক যুবক মারা গেছেন। তার নাম রাকিব মহাজন। তিনি মাদারীপুর সদর উপজেলার খোয়াজপুর ইউনিয়নের পখিরা গ্রামের নাজিম উদ্দিন মহাজনের ছেলে। বুধবার (২২ জানুয়ারি) রাতে তার মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে পরিবার।
রাকিবের পরিবার জানায়, তিন বছর আগে সদর উপজেলার মৃত ফটিক মৃধার ছেলে জাহাঙ্গীর মৃধার প্রলোভনে পড়েন রাকিব মহাজন। মৃধা তার ভায়রা শরীয়তপুরের পালং থানার ধানুকা ইউনিয়নের ছোট বিনোদপুর গ্রামের সোহাগ মাতুব্বরের মাধ্যমে ২৭ লাখ টাকায় ইতালিতে পৌঁছে দেওয়ার চুক্তি করে। সে মতে ২৭ লাখ টাকা দিয়ে তিন বছর আগে রাকিব পাড়ি জমান লিবিয়ায়। সেখানে আরও টাকার জন্য গেমঘরে রেখে তার ওপর নির্যাতন চালান সোহাগ মাতুব্বর। পরে রাকিবের বাবা নাজিম উদ্দিন মহাজন ধার দেনা করে ৫ লাখ টাকা দেন। কিন্তু তাতেও কাজ হয়নি।
পরিবার আরও জানায়, দুই বছর চারমাস পরে সোহাগের গেমঘর থেকে বেরিয়ে আরেক দালাল সদর উপজেলার ঝাউদি ইউনিয়নের ব্রাক্ষ্মন্দী গ্রামের মাজেদ খলিফাকে ধরে রাকিবের পরিবার। তাকেও ৮ মাস আগে ১৫ লাখ টাকা দেয় গেম করার জন্যে। কিন্তু তিনিও টাকা নিয়ে গেমঘরেই নির্যাতন চালায় রাকিবকে। একপর্যায়ে রাকিব গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে লিবিয়ার একটি হাসপাতালে নেওয়ার পর মৃত্যু হয় রাকিবের। তার মৃত্যুর খবর পরিবারকে দালাল মাজেদ খলিফাই জানান।
এ ব্যাপারে নিহতের ছোট চাচা শাহজালাল মহাজন বলেন, নির্যাতন করে ভাতিজাকে হত্যা করা হয়েছে। তারা এখন বলছে রাকিব অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। আমরা এ হত্যার বিচার চাই। এভাবে যেন আর কোনো মায়ের বুক খালি না হয়।
তবে অভিযোগের বিষয়ে স্থানীয় দালাল জাহাঙ্গীর মৃধা বলেন, আমার ভায়রা সোহাগ বিধায় আমাকে জড়ানো হচ্ছে। কেউ বলতে পারবে না যে আমি তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছি। আর ওই ছেলে অসুস্থ হয়ে মারা গেছে। আমার ভায়রা বরং সেখানে ট্রিটমেন্ট করেছে। এর বেশি কিছু জানি না।
এ ব্যাপারে মাদারীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, লিবিয়ায় রাকিব নামে একজন মারা গেছেন বলে মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে দালাল চক্রের বিষয় এখনও লিখিত অভিযোগ পাইনি। পাইলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।