শাল্লায় রাস্তার কাজে লাখো মানুষের আনন্দের জোয়ার

নিশিকান্ত সরকার, শাল্লা
স্বাধীনতার ৫৪ বছর চলছে। কিন্তু অবাক হলেও সত্যি সুনামগঞ্জ জেলার সাথে প্রত্যন্ত শাল্লা উপজেলার যোগাযোগ না থাকায় এলাকাবাসীর অনেক ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। তবে দীর্ঘ পাঁচ দশক পর বহুল প্রত্যাশিত দিরাই থেকে শাল্লা দীর্ঘ ২০ কিলোমিটার আঞ্চলিক মহাসড়কের কাজ দ্রুত বেগে চালু হওয়ায় শাল্লা উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের মনে বইছে আনন্দের জোয়ার।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সুনামগঞ্জ জেলা শহর থেকে শাল্লা উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে এই এলাকার সাবেক এমপি প্রয়াত সুরঞ্জিত সেনগুপ্তের মাধ্যমে ২০০৯ সালে দিরাই হতে শাল্লা পর্যন্ত রাস্তা নির্মাণের জন্য একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হয় এবং নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল ২০১৭ সালে। কিন্তু প্রকল্পের এলাকা হাওর অঞ্চলে অবস্থিত হওয়ায় বন্যার ভাঙ্গন সহ বিভিন্ন কারণে ২০১৭ সালে প্রকল্পটি আলোর মুখ দেখেনি। পরবর্তীতে রাস্তার কাজের কোন অগ্রগতি না হওয়ায় এলাকার মানুষ জেলা ও বিভাগীয় শহরে রাস্তা নির্মাণের দাবি তুলেন। এরই প্রেক্ষিতে ২০২২ সালের ১৪ জুন নতুনভাবে রাস্তার প্রকল্প একনেকে অনুমোদিত হয় এবং সুরঞ্জিত পত্নী সাবেক এমপি ড. জয়াসেন গুপ্তা ২৮ মে ২০২৩ সালে রাস্তার কাজের সূচনা করেন৷ রাস্তার ৪টি প্যাকেজে প্রাক্কলিত মুল্য ধরা হয়েছে ৬২৮ কোটি ৫৪ লক্ষ টাকা। ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স জন্মভূমি নির্মাতা-ওহিদুজ্জামান চৌধুরী-দি নির্মিত জয়েন্ট ভেনচার কাজটি নির্মাণ করছে। প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা রয়েছে ২০২৫ সালে। তবে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলে হাওর অধ্যুষিত শাল্লার লাখো মানুষের যোগাযোগ, শিক্ষা, চিকিৎসা সহ আর্থ-সামাজিক জীবন মানের ব্যাপক উন্নয়ন হবে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই রাস্তা আমাদের স্বপ্নছিল, যেভাবে কাজ চলছে আশাকরি স্বপ্ন বাস্তবায়ন হবে। দীর্ঘদিনের ভোগান্তি শেষে যোগাযোগ সহ সব ক্ষেত্রেই সুযোগ সুবিধা বাড়বে। এই রাস্তার কাজ চালু হওয়ায় বর্তমান সরকারের নিকট কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
রাস্তার কাজের বিষয়ে জানতে ঠিকাদার বাবুল চৌধুরীকে একাধিক বার কল দিলে তিনি রিসিভ না করায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী ড. মোহাম্মদ আহাদ উল্লাহ জানান, বর্তমানে প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। ২০২৫ সালে কাজটি সমাপ্তের কথা থাকলেও বন্যার কারনে কাজটি ডিলে হয়েছিল। যেহেতু সুনামগঞ্জে চারমাসের বেশি কাজ করা যায়না তাই ব্যয়বৃদ্ধি ব্যতিরেকে প্রকল্পের মেয়াদ আরো ২ বছর বাড়ানো লাগতে পারে।
মন্তব্য জানতে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী এডভোকেট তাহের আহমেদ চৌধুরীকে ফোন দিলে নাম্বার বন্ধ পাওয়া যায়।
এবিষয়ে (দিরাই-শাল্লা) আসনের সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী ও সুপ্রীম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী এডভোকেট শিশির মনির বলেন, এটা আমাদের সকলের জন্য সুখবর। দিরাই-শাল্লার মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নত হলে দুই থানার মানুষের উন্নয়ন হবে। এই রাস্তা কমপ্লিট করার জন্য আমাদের যা কিছু করনীয় আমরা সবকিছুই করব।
এব্যাপারে সাবেক এমপি ও আগামী নির্বাচনে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী নাছির উদ্দীন চৌধুরী জানান, বর্তমানে কাজের গতি দেখে মানুষ অত্যন্ত আনন্দিত। এই রাস্তার কাজ সম্পন্ন হলে হাওরাঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আর্থসামাজিক উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।