চুনারুঘাটে গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির ত্রৈমাসিক সভা

হবিগঞ্জ প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলা গ্রাম আদালত ব্যবস্থাপনা কমিটির ত্রৈমাসিক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সোমবার (২৭ জানুয়ারী) দুপুরে উপজেলা পরিষদ সভাকক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ রবিন মিয়া।
সভাপতির বক্তব্যে রবিন মিয়া বলেন, সরকারী বেসরকারী নানা উদ্যোগের মধ্য দিয়ে জনগনের সেবা প্রাপ্তি নিশ্চিত করা সম্ভব। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ছোট খাটো ফৌজদারী ও দেওয়ানী মামলা নিস্পত্তি করা হয়। দেওয়ানী মামলার ক্ষেত্রে ২০ টাকা আর ফৌজদারী মামলার জন্য মাত্র ১০ টাকা ফিস দিয়েই ইউনিয়ন পরিষদে বিচারিক সেবা পাওয়ার সুযোগ আছে। ইউনিয়ন পরিষদের মামলার আবেদনকারী ও প্রতিবাদী উভয়ের পক্ষে ২জন ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য এবং ২জন গন্যমান্য ব্যাক্তি মনোনয়ন করার মধ্য দিয়ে গ্রাম আদালত গঠন করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে বিবেচিত হয়। চেয়ারম্যান এর নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন থাকলে চেয়ারম্যান দায়িত্ব হস্তান্তর করে পছন্দ মতো বিচারক নিয়োগের সুযোগ রয়েছে গ্রাম আদালত আইনে। চেয়ারম্যান ও মনোনীত ৪ জন সদস্য মিলেই ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতের মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চত করা সম্ভব। এর ফলে বিচার প্রার্থীরা নিজ নিজ এলাকায় নিজেদের সমস্যা সমাধান করতে পারেন। গ্রাম আদালতের মাধ্যমে প্রদেয় এ সকল সেবা সম্পর্কে গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনসাধারণ এখনো জানে না। এর ফলে স্থানীয় সমস্যা সমাধানে থানায় ও জেলা কোটে গিয়ে অর্থ, সময় নষ্ট করার পাশাপাশি নানা ভোগান্তির শিকার হন তারা। বিশেষ করে নারীরা তাদের সমস্যা সমাধানে বাড়ির কাছেই পেয়েছে গ্রাম আদালত। নারীরা এ সেবা বিষয়ে না জানার কারণে তারা ও সেবা নিতে কম আসছেন গ্রাম আদালতে। সরকারী এ সেবা বিষয়ক ব্যাপক প্রচারণার উদ্যোগ নেয়ার আহ্বান জানান উপজেলা কর্মকর্তা। তিনি বলেন, সরকারী উদ্যোগে আয়োজিত বিভিন্ন সভা, ওয়ার্কসপ ও প্রশিক্ষনে এ বিষয়টি আলোচনা করা দরকার। একই সাথে রাউজানে কর্মরত এনজিও সমূহের মাধ্যমে ও প্রচারণার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। গ্রামের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী বিশেষ করে নারী ও সুবিধাবঞ্চিত দের বিচারিক সেবা নিশ্চিত করার জন্য সরকার কাজ করছে। তাদের মধ্যে গ্রাম আদালতের সেবা বিষয়ক তথ্য প্রচার করার প্রতি বেশি জোর দেন তিনি। বর্তমান প্রেক্ষাপটে গ্রাম আদালতের কাজ চলমান রাখার বিষয়ে ও তিনি আলোচনা করেন।
তিনি বলেন স্থানীয় বিচার নিস্পত্তির জন্য ২০০৬ সালে গ্রাম আদালত আইন পাশ করা হয়েছে। আইন অনুযায়ী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবেদনকারী ও প্রতিবাদীর মনোনীত ৪ জন সদস্যকে নিয়ে গ্রাম আদালত পরিচালনা করবেন। চেয়ারম্যানের অনুপস্থিতিতে প্যানেল চেয়ারম্যান এ কাজটি পরিচালনা করবেন। ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল কার্যকর না থাকলে ইউনিয়ন পরিষদের যে কোন সদস্যকে গ্রাম আদালতের চেয়ারম্যান হিসেবে মনোনীত করে গ্রাম আদালতের সেবা নিশ্চিত করার পরামর্শ দেন তিনি।
সভায় আন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সদস্য সচিব সহকারী কমিশনার (ভূমি) মাহবুব আলম মাহবুব, অফিসার ইনচার্জ মো: নুরে আলম ও বাংলাদেশে গ্রাম আদালত সক্রিয়করণ প্রকল্প ও ইপসার উপজেলা সমন্বয়কারী মদন সরদার সহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের প্রতিনিধিবৃন্দ।