বিশ্বম্ভরপুরে ঐতিহ্যের বাহক কৃষকের ভাস্কর্য ভাংচুর
সুনামগঞ্জের বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চালবন পয়েন্টে তিন রাস্তার মোড় গ্রাম বাংলার কৃষি ও কৃষকের ঐতিহ্য তুলে ধরতে নির্মাণ করা হয়েছিল কাস্তে হাতে, লাঙল কাধেঁ নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকা একজন কৃষকের ভাস্কর্য। নাম দেওয়া হয়েছিল কৃষাণ চত্বর।
শুক্রবার রাতের অন্ধকারে বিক্ষুব্ধরা ভাস্কর্যটি ভেঙে ফেলে। এর পূর্বে বৃহস্পতিবার রাতের আধারে উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সামনে থাকা শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটিও ভাঙচুর করে।
স্থানীয় এলাকাবাসী জানায়, রাতে হাতুড়ি দিয়ে কিছু লোক শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটি ও কৃষকের ভাস্কর্যটি ভাঙচুর করে। একেই সময়ে স্লোগান দেয় শেখ হাসিনার আস্তানা,বাংলাদেশে হবে না, আওয়ামীলীগের আস্তানা, বাংলাদেশে হবে না, শাহজালালের তলোয়ার, গর্জে উঠুক আরেকবার, নারায়ে তাকবির,আল্লাহু আকবার।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের পাশে বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার চালবন্দ পয়েন্টে এই ভাস্কর্য নির্মাণ করে ২০২২সালের ২৩ ফেব্রুয়ারি এই ভাস্কর্য উদ্বোধন করে উপজেলা প্রশাসন। এছাড়াও চালবন পয়েন্ট পার হয়ে পলাশ বাজারে গোল বৃত্তের মধ্যে গাছ নাম দেয়া হয় হাওর বৃত্ত,আরও সামনে এগিয়ে কারেন্টের বাজারে বোয়াল মাছের আদলে দৃষ্টি নন্দন করে একটি ভাস্কর্য। নাম দেয়া হয়েছে বোয়াল চত্ত্বর।
উপজেলার সচেতন মহল বলছেন, হাওরপ্রধান এ উপজেলার কৃষি ও কৃষকের ঐতিহ্য এবং পর্যটন বিকাশ, সৌন্দর্য বর্ধন ও ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরতে সুনামগঞ্জ-বিশ্বম্ভরপুর সড়কের পাশে উপজেলার চালবন্দ পয়েন্টে কৃষকেএ ভাস্কর্য নির্মাণ করা হয়েছিল। উপজেলার সাবেক নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সাদি উর রহিম জাদিদের উদ্যোগে কিছু ভাস্কর্য ও স্থাপনা নির্মান করা হয় যা সর্ব মহলে প্রশংসিত হয়েছে।
জমির আলীসহ স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তাহিরপুর উপজেলার টাঙ্গুয়ার হাওর, যাদুকাটা নদী, শিমুলবাগান, শহীদ সিরাজ লেকসহ হাওর এলাকার পর্যটনকেন্দ্র গুলোতে যাওয়া ও আসার পথে চোখে পড়ত কৃষকের ভাস্কর্যটি। এ কারনে আগত পর্যটকগন সহ স্থানীয় এলাকাবাসীসহ অনেকেই স্মৃতি হিসাবে ছবিও তুলতেন। ভাস্কর্য টির সাথে দেশের বর্তমান প্রেক্ষাপটের কোনো সম্পর্ক নেই। যে বা যারা এমন কাজ করেছে তা খুবেই দুঃখজনক।
বিশ্বম্ভরপুরের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মফিজুর রহমান ভাস্কর্যটি একদল বিক্ষোব্দ লোক ভেঙে ফেলেছে। ভাঙচুরকারীদের পরিচয় জানা যায়নি। সে কারনে আইনী ব্যবস্থার নেয়া যাচ্ছে না। ভাঙচুরের বিষয়টি উর্ধনত কতৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানোর পর পুণনির্মান হবে কি না তারাই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।