জানমাল ও সম্পত্তি রক্ষায় সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি
ভূমিদস্যুদের কবল থেকে জানমাল ও সম্পত্তির নিরাপত্তার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করে সংবাদ সম্মেলন করেছেন ৬৫ বছরের বয়োবৃদ্ধা মোছা. ছামছুন নাহার। সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান তিনি। মঙ্গলবার বিকেলে দৈনিক সুনামগঞ্জ প্রতিদিন পত্রিকা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন ভুক্তভোগী সাবেক এই জনপ্রতিনিধি।
লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন-গত ২০০৮ সালে আমার সন্তানদের নামে আমাদের বাড়ীর পার্শ্ববর্তী বাজিতপুর মৌজার ৮৯ নং এসএ জেএলস্থিত,১২৬ নং খতিয়ানের ১২৮/১ নং দাগভূক্ত সাড়ে ১৬ শতক জমি ৫০ টাকার চারটি ননজুডিসিয়াল স্টাম্পে পূর্বের ক্রেতা আব্দুল মালিকের কাছ থেকে বায়নাপত্র সম্পাদন করি। পরবর্তীতে ২০২০ সালে আমার মেয়ে সেবিনা ইয়াছমিন, স্বপ্না আক্তার ও ছেলে শহিদুল ইসলাম এবং নাতি সেলিম মাহবুব মামুনের নামে যথারীতি ২৫৮২/২০, ২৫৬৯/২০ ও ২২৫৫/২১ নং দলিল রেজিষ্ট্রির পর থেকে ওই জমি শান্তিপূর্ণভাবে ভোগদখল করছি। কিন্তু ২০২১ সালে এরুয়াখাই গ্রামের মোস্তফা মিয়ার ছেলে আবুল কাশেম ও তার সহযোগীরা জাল পর্সা, ভূয়া দলিল সংগ্রহ করে আমাদের ক্রয়কৃত জায়গা তার দাবী করে আমাদের কাছে মোটা অংকের টাকা চাঁদা দাবী করলে কথিত জাল পর্সা ও ভূয়া দলিল সংগ্রহকারী আবুল কাশেম গংদের বিরুদ্ধে আমল গ্রহনকারী জুডিসিয়াল ম্যাজিস্টেট আদালত দোয়ারাবাজার জোনে সিআর ২১৮/২১ (দোয়ারাবাজার) মামলা দায়ের করি। বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশে মামলাটি পিবিআই এর কাছে প্রেরণ করা হয়। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গত ২৩/১১/২০২১ইং তারিখে বিজ্ঞ আদালতে আসামী আবুল কাশেম গংদের বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেন। তদন্তে আসামীদের বিরুদ্ধে ফর্সা ও দলিল জালিয়াতির অভিযোগ প্রমানিত হয়। তবুও প্রতারক আবুল কাশেম মুরাদপুর গ্রামের হাবিবুর রহমানকে আমাদের জায়গা তার দাবী করে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য একটি কাগজ করে দেয়। সেই সূত্রে হাবিবুর রহমানও আমাদের কাছে চাঁদা দাবী করে। চাঁদা না দেয়ায় প্রতারক আবুল কাশেমের সহযোগী হাবিব ও তার দোসররা কোর্ট, থানা ও ভূমি অফিসে এ পর্যন্ত ১০/১২টি কাউন্টার হয়রানীমূলক মামলা ও অভিযোগ দিয়ে আমাদের হয়রানী করে যাচ্ছে। দোয়ারাবাজার থানা পুলিশ ভূমিদস্যুদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আমি ৬৫ বছরের একজন বৃদ্ধ মহিলা, হাসপাতালে কর্মরত আমার মেয়ে স্বাস্থ্যসেবিকা স্বপ্না আক্তারসহ আমার পরিবারের নিরীহ নারী ও অসুস্থ পুরুষদের কাউন্টার মিথ্যা মামলায় মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করছে। সাবেক এই জনপ্রতিনিধি বলেন, বিজ্ঞ আদালতে মামলাটি বিচারাধীন থাকাবস্থায় দলিল জালিয়াতি ও প্রতারনা মামলার আসামী আবুল কাশেম জাল আরএস খতিয়ান দিয়ে বিএনপি নেতা আব্দুল বারী, হাবিবুর রহমান ও নাজিম উদ্দিন গংদের ক্রেতা সাজিয়ে সম্প্রতি ২২/২০২৫ নং দলিল সম্পাদন করে আমাদের পূর্বের ক্রয়কৃত ও দীর্ঘদিনের ভোগদখলকৃত ৫ শতক জায়গা জোরপূর্বক অবৈধ দখলের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। আমরা পিবিআই এর তদন্তে প্রমাণিত জাল পর্সা দিয়ে দলিল সৃজনের অভিযোগে আবারও চিহ্নিত প্রতারকচক্রের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতের দ্বারস্থ হবো।
ছামছুন নাহার বলেন, বেআইনী দখলবাজীর প্রতিবাদ করায় সংঘবদ্ধ চাঁদাবাজ সন্ত্রাসীদের মূলহোতা ফারুক মিয়া জোরপুর্বকভাবে আমাদের জায়গা দখল করে গত ১৭ জানুয়ারি শুক্রবার সংবাদ সম্মেলন করে আমি ও আমার পরিবারের বিরুদ্ধে বিষোদগার করে অপপ্রচার চালায়। এর অংশ হিসেবে আমার বিরুদ্ধে “দোয়ারাবাজারে ভূমিখেকো নারীর বিরুদ্ধে সংবাদ সম্মেলন” শিরোনামে মিথ্যা বানোয়াট ভিত্তিহীন কাহিনী সাজিয়ে এমনকি আমাদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যমূলকভাবে আওয়ামী লীগের তকমা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও অনলাইন ওয়েবপোর্টালে গুজব ছড়ায়। কিন্তু আমি বা আমার পরিবারের কেউ কখনও আওয়ামী লীগ করিনি।বর্তমানেও আমরা রাজনীতির সাথে জড়িত নই। আমরা ভূমিদস্যুদের কবল থেকে আমাদের সম্পত্তি রক্ষার জন্য বিজ্ঞ সহকারী জজ আদালতে (দোয়ারাবাজার) স্বত্ত মামলা নং ১৪১/২০২১ এবং স্বত্ত মামলা নং ০২/২০২৫ দায়ের করে আইনগত লড়াই চালিয়ে যাচ্ছি। তবু ফ্যাসিবাদের দোসর ভূমিদস্যু প্রতারক আবুল কাশেম পিতা মোস্তফা মিয়া এরুয়াখাই, হাবিবুর রহমান পিতা লালা মিয়া, নাজিম উদ্দিন পিতা মৃত জমির আলী, ফারুক মিয়া পিতা মৃত মঞ্জুর আলী গ্রাম মুরাদপুর,গুরুদাস দে ও কমলকান্ত দে উভয়ের পিতামৃত রবীন্দ্র কুমার দে গ্রাম দোয়ারাবাজার, মেহেদী হাসান পিতা কামাল পাশা গ্রাম পশ্চিম মাছিমপুর, আব্দুল বারী পিতা বশির আলী গ্রাম নৈনগাও, ইমন উদ্দিন পিতা সাফি উদ্দিন গ্রাম টেংরাটিলা সর্বথানা দোয়ারাবাজার জেলা সুনামগঞ্জ গং বর্তমানে আমাদের সহায় সম্পত্তি আগ্রাসন ও জানমালের ক্ষতিসাধনে লিপ্ত রয়েছে। এসব কারণে ভূমিদস্যুদের কবল থেকে আমাদের জানমাল ও সহায় সম্পত্তির নিরাপত্তা বিধানের জন্য আমরা সাংবাদিক ভাইদের মাধ্যমে মাননীয় প্রধান উপদেষ্টার কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করছি।