মাধবপুরে ওরস পালনে নিয়ে বিএনপি’র দুই গ্রুপের সংঘর্ষ, আহত ৩০

মাধবপুর প্রতিনিধি
হবিগঞ্জের মাধবপুরে মাজারের ওরস পালনকে কেন্দ্র করে বিএনপি’র দুই গ্রুপের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ ঘটনা ঘটেছে। এসময় শহিদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এর ছবি ভাংচুরের ঘটনা ঘটেছে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছে।
শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টায় উপজেলার বাঘাসুরা ইউপির কালিকাপুর গ্রামে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, স্থানীয় কালিকাপুর মাজারের ওরস পালনের নেতৃত্ব দেয়াকে কেন্দ্র করে বাঘাসুরা ইউনিয়ন যুবদল’র সভাপতি নজরুল গাজীর সাথে ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি এডভোকেট সাজিদুর রহমান সজল বাকবিতন্ডায় লিপ্ত হয়। এসময় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ সভাপতি তাজুল মেম্বার এর লোকজন ও বাঘাসুরা ইউনিয়ন সেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি রুবেল মহালদার, ছাত্রলীগের যুগ্ম সম্পাদক আকাশ মহালদার এবং বাঘাসুরা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট সাজিদুর রহমান সজল এর নেতৃত্বে যুবদল সভাপতি নজরুল গাজীর ইউনিয়ন যুবদলের অফিস ভাংচুর করে। হামলাকারীরা জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এর ছবিসহ অফিসের সবকিছু এবং কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাংচুর করে। দুই গ্রুপের মধ্যে কয়েক ঘন্টা ব্যাপী সংঘর্ষ চলে।পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন।সংঘর্ষে আহত উভয়পক্ষের মফিজুর রহমান (২৫), শাহীন (২৪), লিটন (২২), জামিল (২৯), তানভীর (২৪), পারভেজ (১৯), সানি (২০), হাফিজুর (১৮), বিপুল (২২), শামসুল হক (৩৫), এডঃ সজল (৪২), মোশাহিদ (৪২), সাজু (৩২), সাদেক (৩২), মামুন(২৩), হুদয় (২০), রাহুল (২৫), ইব্রাহিম (৪০), সোহেল (২৫), আবুকালাম (৩০), মনির (২৩), তানবির (২২), সোহান, (২৪) সহ ৩০ জনকে মাধবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও হবিগঞ্জ সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
নজরুল গাজী জানান, এখানে তিনজন অলির মাজার আছে। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে আওয়ামী লীগের লোকজন ক্ষমতার প্রভাব খাটিয়ে মাজারের নিয়ন্ত্রণ ও আশপাশের জায়গার দখল নিয়ে নেয়। সরকার পরিবর্তন হওয়ায় অলি গানের ওয়ারিশানরা মাজারের ওরস তাদের নেতৃত্বে করতে চেয়েছিলেন। আমি তাদের পক্ষে কথা বলায় ইউনিয়ন বিএনপির সেক্রেটারি এডভোকেট সাজিদুর রহমান সজল আমাদের যুবদলের অফিসে হামলা করে জিয়াউর রহমান, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান এর ছবি ভাংচুর করেছে।
এডভোকেট সাজিদুর রহমান সজল জানান, ১৫/২০ বছর যাবত আমাদের পাঁচ গ্রামের লোকজন এই মাজার ও কবরস্থান পরিচালনার দায়িত্ব পালন করে আসছে। এবছর আমাদের প্রতিপক্ষরা পীরের বংশধরদের উস্কে দিয়েছে আলাদা চাদর দিয়ে ওরস করার জন্য। এই বিষয়ে মাইকিং করে শুক্রবার সন্ধ্যায় আমরা সবাই বসেছিলাম। এসময় মাগরিবের নামাজের বিরতি দিলে আমি আমার অফিসে যাওয়ার সময় নজরুল গাজী লোকজন নিয়ে আমার উপর হামলা করে। আমার উপর হামলা করায় আমাদের গ্রামের পুরুষ মহিলা সবাই লাঠিসোটা নিয়ে বাজারে এসেছে। বাঘাসুরা ইউনিয়নে বিএনপির কোন অফিস নেই। এটা নজরুল গাজীর ব্যাক্তিগত অফিস। এই অফিসে বসে সে বিভিন্ন অপকর্ম করে। ব্যাক্তিগত অফিসে খালেদা জিয়ার ছবি থাকবে কেন? এমন কোন আইন হয়েছে নাকি? কিছু ভাংচুর হয়েছে এই সুযোগে তারা নিজেরাই ছবি ভাংচুর করে আমার উপর দুষ চাপাচ্ছে। অপারেশন ডেভিল হান্ট এর কারণে ঘটনাস্থলে তাজুল মেম্বার ছিল না, তবে রুবেল মহালদার আমার বোন জামাই এবং আকাশ মহালদার আমার ভাগ্নে, তারা ছিল। মাধবপুর থানার ওসি আবদুল্লাহ আল-মামুন জানান,ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌছে মারামারি নিয়ন্ত্রন করেছে।বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে। তদন্ত করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।