সুনামগঞ্জে শিশুসহ তিনটি ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনায় তিন আটক, এক যুবকের ঘর ভাংচুর

হাওরাঞ্চল প্রতিনিধি
সুনামগঞ্জের তিন উপজেলায় এক শিশু ও দুই কিশোরী কে ধর্ষণের চেষ্টা অভিযোগে তিন যুবককে আটক করেছে পুলিশ। তাদের আদালতে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার জেলার দিরাই, শাল্লা ও শুক্রবার ছাতক উপজেলার পৃথক পৃথক স্থানে ঘটনা ঘটেছে।ছাতক থানা পুলিশ জানায়, শুক্রবার সকালে জহিরপুর গ্রামের মাদ্রাসা যাওয়ার ঐ ছাত্রী। সাবুল মিয়া (৩৫) ঐ ভবনের দ্বিতীয় তলায় নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা চালায় সাবুল মিয়া। এসময় মেয়েটির চিৎকারে স্থানীয় এলাকাবাসী এগিয়ে আসলে পালিয়ে যায় ঐযুবক। এই ঘটনাটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় যুব সমাজ ক্ষুব্ধ হয়ে রাতে অভিযুক্ত সাবুল মিয়ার বাড়িতে ভাঙচুর চালায়। পরে পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয় এবং ভুক্তভোগীর পরিবারকে লিখিত অভিযোগ দায়েরের জন্য থানায় পাঠানো হয়।
ছাতক থানার এস আই কামাল মিয়া জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। এই ঘটনায় অভিযুক্ত আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
ছাতক থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি মোখলেছুর আকন্দ জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।আটক সাবুল মিয়াকে শনিবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।
অপর দিকে জেলার দিরাই উপজেলায় সদর থেকে কেনাকাটা করে এক কিশোরী বাড়ি ফেরার জন্য অটোরিকশা উঠলে সাথে আরোও দুই যুবক দুই পাশে উঠলে চালক অটোরিকশা চালানো শুরু করে আর দুই যুবক ঝাপটে ধরে মোবাইল ফোন নিয়ে ধস্তাধস্তি এক প্রযায়ে উপজেলার গনিগঞ্জ এলাকা এসে মেয়েটি কোনো রখমে লাফিয়ে পড়ে নিজে রক্ষা করে। এক বাড়িতে আশ্রয় নেয়। খবর পেয়ে মেয়েটির পরিবারের সদসয়রা ঘটনাস্থলে গিয়ে হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তাঁর ডান চোখ, কপাল, গাল, হাত থেঁতলে গেছে। মেয়েটি সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করেছে। বাবা একজন কৃষক।
দিরাই থানার ওসি আবদুর রাজ্জাক বলেন, আমরা মেয়েটির বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়েছি। এঘটনায় দুইজনকে আটক করা হয়েছে। এটি স্পর্শকাতর বিষয়, আমরা গুরত্বের সঙ্গে দেখছি।
অপর এদিকে শাল্লায় পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীকে ধর্ষণচেষ্টার খবর পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভুক্তভোগীর বাড়ির আঙ্গিনায় কাজ করার সময় এ ঘটনাটি ঘটেছে।ধর্ষণ চেষ্টাকারী একই গ্রামের সুদর্শন দাসের ছেলে মানিক লাল দাস (৩০)। তবে ঘটনাটির পর পরই ধামাচাপা দেওয়ার জন্য মরিয়া হয়ে ওঠেন গ্রামের মাতাব্বর রণজিৎ সরকার, বকুল দাস, বিকাশ দাস, সচিন্দ দাস, রানু দাস, কৃষ্ণপদ দাস, রাজ কুমার দাস, সোম চাঁদ দাস, সুনিল দাস, ইন্দ্রজিৎ দাস, সজল দাস, আশিষ দাস কেনু দাস বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার জোর চেষ্টা করেন।
ভুক্তভোগীর মা বলেন, আমি মেয়েকে নিয়ে বাড়ির পাশে কাজ করতেছি। হঠাৎ করে মানিক লাল দাস চলে এসেছেন। তিনি বলেন, আমি লাকড়ির বস্তা নিয়ে বাড়িতে ফিরছি। এরমধ্যেই অভিযুক্ত যুবক খারাপ উদ্দেশ্যে আমার মেয়েকে জড়িয়ে ধরে ধর্ষণচেষ্টা করেন। সামাজিকভাবে ভুক্তভোগীর পরিবার পঞ্চায়েত ও গ্রাম্য মাতাব্বরদের চাপে রয়েছে বলে জানান ভুক্তভোগীর পরিবার।
এ বিষয়ে শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শফিকুল ইসলাম বলেন,ভুক্তভোগীর পরিবার থানায় এসে অভিযোগ দিলে অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পুলিশ সুপার তোফায়েল আহম্মেদ বললেন, বিষয়টি গুরত্বের সঙ্গে দেখতে পুলিশকে বলে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের কেউ থানায় গেলেই মামলা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, সিএনজিসহ ঘটনায় জড়িত চালক ইমন খান (২৫), বাড়ি দিরাই উপজেলার জকিনগর এবং মিঠু মিয়া নামে আরেক যুবককে আটক করা হয়েছে। ছাতকের ঘটনার আরেক যুবককে আটক করা হয়েছে।