সন্তান হত্যার বিচার দাবিতে কাঁদছেন মা

রাজু আহমেদ রমজান, সুনামগঞ্জ
সুনামগঞ্জের শান্তিগঞ্জ উপজেলার উকারগাঁও গ্রামের মনির হোসেন হত্যাকান্ডের সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করে হাউমাউ করে কাঁদলেন নিহত মনির হোসেনের মা বকুল বেগম। শান্তিগঞ্জ উপজেলার উকারগাঁও গ্রামের মৃত মোকসেদ আলীর স্ত্রী তিনি।
তাঁর অভিযোগ, মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই সুলেমান উল্টো মামলার বাদি বকুল বেগমকে হুমকি দেওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য আসামী ধরতে গড়িমসি করছেন। সোমবার দুপুরে সুনামগঞ্জ জেলা শহরের পাবলিক লাইব্রেরি (শহীদ জগৎজ্যোতি পাঠাগার) মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি। ঘন্টাব্যাপী চলা সংবাদ সম্মেলনে বকুল বেগমের প্রতিবেশি-স্বজন উপস্থিত ছিলেন। বকুল বেগমের দেবর কামরুজ্জামান তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন।
তিনি উল্লেখ করেন-স্বামী মৃত্যুর পর তাঁর ৩ ছেলে নিয়ে অনেকটা শান্তিপূর্ণভাবে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করে আসছিলেন। তাঁর বড় ছেলে মনির হোসেনের স্ত্রী ও একই গ্রামের রাজন আহমদের পরকিয়া সম্পর্কের জেরে তাঁর ছেলে মনির হোসেনকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে সংঘবদ্ধ রাজন আহমদ চক্র। এ ঘটনায় শান্তিগঞ্জ খানায় বকুল বেগম বাদি হয়ে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলায় আসামী হলেন-উকারগাঁও গ্রামের জামাল উদ্দিনের ছেলে রাজন আহমদ, তার সহোদর রাসেল মিয়া, একই গ্রামের জাহির আলীর ছেলে সহিবুর রহমান, আব্দুননুর এর ছেলে আলী আহমদ, মৃত রহমত আলীর ছেলে তাহের আলী, আব্দুল খালিকের মেয়ে মোছা. জনিক আক্তার। আসামীদের মধ্যে চারজন গ্রেফতার হলেও এখনো অধরা আলী আহমদ, তাহির আলী৷ এছাড়া গংদের মধ্যে হত্যাকান্ডে জড়িত একই গ্রামের কামাল উদ্দিন, জসিম উদ্দিন, আলী আকবর, জহিরুল ইসলামকে গ্রেফতারের বিষয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুলেমান’কে জানালে রহস্যজনকভাবে তিনি কোন ব্যবস্থা নিচ্ছেন না বলেও অভিযোগ করেন বকুল বেগম।
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১২ জানুয়ারি সকালে উকারগাঁও গ্রামের সন্নিকটে জনৈক তাহির আলীর জমিতে মাথায় ধারালো অস্ত্রের ছেদে রক্তাক্ত জখম অবস্থায় মনির হোসেনের মরদেহ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে শান্তিগঞ্জ খানা পুলিশ। এ ঘনায় ছেলে হত্যার দায়ে বকুল বেগম বাদি হয়ে শান্তিগঞ্জ খানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
অভিযোগ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই সুলেমান বলেন, মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। দুইজন আসামি আত্মগোপনে থাকায় গ্রেফতার করা সম্ভব হচ্ছে না, তবে গ্রেফতার চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। অফিসার ইনচার্জ মো. আকরাম আলী বলেন, অন্যান্য আসামী ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।