শ্রমিক নেতা সেলিম মাহমুদ এর নিঃশর্ত মুক্তি দিন: বাসদ

দৈনিকসিলেট ডেস্ক :
গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদকে গ্রেফতারের নিন্দা ও সেলিম মাহমুদসহ রবিনটেক্স লিঃ এর গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের অবিলম্বে নিঃশর্ত মুক্তি, হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা প্রত্যাহারসহ শ্রমিকদের উপর সকল ধরণের নিপিড়ন বন্ধের দাবিতে বৃহস্পতিবার বিকাল ৫টায় আম্বরখানাস্হ দলীয় কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সিলেট জেলা বাসদ আহ্বায়ক আবু জাফর ও জেলা সদস্য সচিব প্রণব জ্যোতি পাল এর সঞ্চালনায় বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বাসদ নেতা উজ্জ্বল রায়, সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সহ সাধারণ সম্পাদক মনজুর আহমদ, সংগ্রাম পরিষদের মাহফুজ আহমেদ, আনিছুর রহমান, সোহাগ আহমেদ, প্রমূখ ।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তারা বলেন, ফ্যাসিষ্ট সরকারের সময় রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ সরকারের উর্ধতনদের সহ্য়তায় শ্রম অধিদপ্তরের উপর অন্যায় চাপ তৈরি করে শ্রমিকদের ইউনিয়ন নিবন্ধন দিতে বাধা দেয়। শ্রম অধিদপ্তরের এই অন্যায় সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে শ্রমিক ইউনিয়ন শ্রম আদালতে আপিল করে যা এখনো বিচারাধিন। ইউনিয়ন নিবন্ধনের প্রক্রিয়া অনিষ্পন্ন থাকা অবস্খায় ইউনিয়ন কর্মকর্তাদের চাকরিচ্যূত করা যায় না, কিংবা চাকরির শর্ত পরিবর্তন করা যায় না- শ্রম আইনের এই বিধান স্বত্ত্বেও ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক কে ২৬ ধারায় চাকরিচ্যূত করার অন্যায় দাবি করে ইউনিয়ন নিবন্ধনের কার্যক্রম অমিমাংসিত থাকা অবস্খায় ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক কে গত চার মাস যাবত কারখানায় প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। শ্রম অধিদপ্তর ও শ্রম পরিদর্শন অধিদপ্তরের সংশ্লিষ্ট কার্যালয়ে অভিযোগ করেও শ্রমিকরা এই আইন লঙ্ঘনের প্রতিকার পায়নি।
শ্রম প্রশাসনের এই নিস্কিৃয়তায় ফ্যাসিবাদি সরকারের দোসর শ্রমিক নিপিড়ক রবিনটেক্স কর্তৃপক্ষ এই সরকারের সময়েও একই ভাবে শ্রমিকদের ইউনিয়ন কে নির্মূল করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ, মামলা দিয়ে পুলিশি হয়রানির মাধ্যমে আতংক সৃষ্টি করে শ্রমিক ইউনিয়নের কর্মকর্তা আর সক্রিয় সদস্যদের চাকরিচ্যূত করে শ্রমিক ইউনিয়নকে নির্র্মল করার কৌশল হিসাবে পরিকল্পিত ভাবে উস্কানি দিয়ে শ্রমিকদের আন্দোলনে ঠেলে দিয়েছে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সাথে সংঘাতের ক্ষেত্র তৈরি করেছে। ইউনিয়ন কর্মকর্তাসহ প্রতিবাদি শ্রমিকদের বিরুদ্ধে হয়রানিমূলক মিথ্যা মামলা দায়ের, ইউনিয়নের সভাপতি সীমা আক্তারসহ ২২ জন শ্রমিককে গ্রেফতার করানো আর পুলিশি হয়রানির মূখে অসহায় হয়ে পড়া ঐ শ্রমিকদের আইনি সহায়তা দেওয়ার সুযোগ বন্ধ করতে গতকাল ১৫ এপ্রিল রাত দেড়টায় নারায়ণগঞ্জের ফতুল্লাস্ত তার বাসার গেট ভেঙ্গে গার্মেন্টস শ্রমিক ফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক সেলিম মাহমুদ তুলে নিয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনের মতো কালো আইনে মিথ্যা মামলা দেওয়া, ৭ দিনের রিমান্ড চাওয়া প্রমাণ করে রবিনটেক্সের দুর্বিত্ত ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের শ্রমিক ইউনিয়ন নির্মুলের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে বর্তমান সরকারের প্রশাসনও পূর্বের ফ্যাসিষ্ট সরকারের পথেই হাঁটছে।
নেতৃবৃন্দ সাবধান বাণি উচ্চারণ করে বলেন, অবিলম্বে সেলিম মাহমুদ, সীমা আক্তারসহ রবিনটেক্সের গ্রেফতারকৃত শ্রমিকদের নিঃশর্ত মুক্তি এবং দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহর না করা পর্যন্ত শ্রমিকদের ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার সংকোচনের এই অপচেষ্টার বিরুদ্ধে দেশের প্রতি প্রান্তে প্রতিবাদ অব্যাহত থাকবে। রবিনটেক্সের ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষের মত দুর্বিত্তদের আইএলও কনভেনশন লঙ্ঘন করে, শ্রমিকদের মৌলিক অধিকার পদদলিত করে, নিপিড়ন চালিয়ে শ্রমিকের প্রতিবাদের কন্ঠ কে রুদ্ধ করে বাধামুক্ত শ্রম শোষণ অব্যাহত রাখার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে দেওয়া হবে না। বক্তারা অবিলম্বে, সেলিম মাহমুদসহ গ্রেফতারকৃত শ্রমিক নেতৃবৃন্দের অবিলম্বে মুক্তি দাবি করেন।