বড়লেখা এসিল্যান্ড অফিসে খতিয়ান জালিয়াতি: গ্রেফতার ৪

তাহমীদ ইশাদ রিপন, বড়লেখা প্রতিনিধি
মৌলভীবাজারের বড়লেখা এসিল্যান্ড অফিসে খতিয়ান জালিয়াতির দায়ে এ অফিসের সাবেক প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষক, পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও দুই ভূমি মালিকসহ ৪ জনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করা হয়েছে। সার্ভেয়ার শামসুল হুদার খতিয়ান জালিয়াতি মামলায় পুলিশ শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে তাদেরকে কারাগারে পাঠিয়েছে।
এরা হলেন-উপজেলা ভূমি অফিসের সাবেক প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষক রাসেন্দ্র কুমার দাস (বর্তমান কর্মস্থল শ্রীমঙ্গল উপজেলা ভূমি অফিস), পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাব্য চন্দ, ভূমি মালিক আব্দুল জব্বার ও তার ভাই আব্দুল কুদ্দুছ। তবে অভিযোগ ওঠেছে, সার্ভেয়ার শামসুল হুদা ও সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মজিদ মিয়া জালিয়াতি ও ঘুস বাণিজ্য সিন্ডিকেটের সদস্য।
জানা গেছে, ভূমি মালিক আব্দুল জব্বার গংরা ২০১৯ সালে একটি খতিয়ানের দুই দাগের ভূমি নামজারি করেন। এসিল্যান্ড অফিসের প্রধান সহকারি কাম হিসাব রক্ষক রাসেন্দ্র কুমার দাস, পরিচ্ছন্নতাকর্মী কাব্য চন্দ বিরাট অঙ্কের উৎকোচের বিনিময়ে উক্ত খতিয়ানের দুই দাগের ভূমির সাথে সরকারি ১/১ খতিয়ানের ‘খ’ তফশিলের আরেকটি দাগের ১২ শতাংশ ভূমি তৎকালিন এসিল্যান্ডের স্বাক্ষর জাল করে ভলিয়মে রেকর্ড করে রাখেন। শুধু তাই নয়, সদর ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মজিদ মিয়া মোটা অঙ্কের ঘুসের বিনিময়ে ভুয়া কাগজে নামজারিকৃত উক্ত খতিয়ানের ভূমি উন্নয়ন করও পরিশোধ করেন। বৃহস্পতিবার বিষয়টি এসিল্যান্ডের নজরে আসলে তাৎক্ষণিক তিনি অভিযুক্তদের খবর দিয়ে অফিসে নিয়ে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করেন। খতিয়ান জালিয়াতির এই ঘটনায় এসিল্যান্ডের নির্দেশে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার শামসুল হুদা ৫ জনের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেছেন। এদিকে জালিয়াত ও ঘুস বাণিজ্য সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা সার্ভেয়ার শামছুল হুদা ও সহকারি ভূমি কর্মকর্তা (তহশিলদার) মজিদ মিয়াকে মামলার আসামি না করে একজনকে বাদি আর অন্যজনকে মামলায় অর্ন্তভুক্ত না করায় নানা আলোচনা সমালোচনা চলছে।
সহকারি কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ আসলাম সারোয়ার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, তিনজন ভূমি মালিক ও তার অফিসের কয়েকজন স্টাফ মিলে খতিয়ান জালিয়াতি করেন, যা মারাত্মক অপরাধ। এই জালিয়াতিতে প্রাথমিকভাবে তার অফিসের দুইজনসহ ৫ জনের সম্পৃক্ততার প্রমাণ পেয়ে তাৎক্ষণিক এদের ৪ জনকে আটক করে থানায় সোপর্দ করেছেন।
বড়লেখা থানার ওসি (তদন্ত) শেখ মো. কামরুজ্জামান জানান, এসিল্যান্ড অফিসের খতিয়ান জালিয়াতির মামলায় গ্রেফতার ৪ আসামিকে শুক্রবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।