চুনারুঘাটের গর্ব: কারাতে খেলোয়াড় রাবেয়া সুলতানা মিমের স্বর্ণজয়
হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার কৃতি কন্যা, কারাতে খেলোয়াড় ও প্রশিক্ষক রাবেয়া সুলতানা মিম ২৯তম জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক অর্জন করে এলাকাবাসীর মুখ উজ্জ্বল করেছেন। এই অসাধারণ সাফল্যের মাধ্যমে তিনি চুনারুঘাট তথা সারা দেশের ক্রীড়াঙ্গনে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করেছেন। রাবেয়া সুলতানা মিম দীর্ঘদিন ধরে কারাতে চর্চা করে আসছেন এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। তাঁর কঠোর পরিশ্রম, অধ্যবসায় এবং আত্মবিশ্বাসের ফলেই এই স্বর্ণপদক অর্জন সম্ভব হয়েছে।
স্থানীয় ক্রীড়া সংগঠন ও প্রশিক্ষকদের মতে, মিমের এই সাফল্য চুনারুঘাটের তরুণ-তরুণীদের জন্য একটি অনুপ্রেরণা। তাঁর এই অর্জন প্রমাণ করে, সঠিক দিকনির্দেশনা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে যে কেউ আন্তর্জাতিক মানের ক্রীড়াবিদ হতে পারে। মিম চুনারুঘাট পৌরশহরের দক্ষিণ হাতুন্ডা এলাকার বাসিন্দা। তিনি বাংলাদেশ জাতীয় ভলিবল দলের খেলোয়াড় আব্দুল মুমিন সাদ্দামের সহধর্মিণী ও হবিগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সদস্য। স্বর্ণপদক জয়ের পর এক অন্যরকম অনুভূতির কথা জানালেন রাবেয়া সুলতানা মিম। ২৯তম জাতীয় কারাতে প্রতিযোগিতায় দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের হারিয়ে যখন বিজয়ীর মঞ্চে দাঁড়ালেন, তখন একদিকে যেমন আনন্দে কেঁদে ফেলেছিলেন, অন্যদিকে বুক ভরে উঠেছিল দেশ ও এলাকার প্রতি ভালোবাসায়।
মিম বলেন, “এই স্বর্ণ পদক শুধু আমার একার নয়। এটা আমার মা-বাবার আমার প্রশিক্ষকদের, আমার এলাকাবাসীর, যারা সবসময় পাশে ছিলেন, অনুপ্রেরণা দিয়েছেন। আমার অনেক স্বপ্ন ছিল—এই পদক যেন তার প্রথম ধাপ হয়।আমি চাই আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের লাল-সবুজ পতাকা ওড়াতে। তিনি আরও বলেন, “প্রতিযোগিতা সহজ ছিল না। প্রতিটি মুহূর্তে মানসিক চাপ ছিল। কিন্তু আমি ভেবেছি আমি চুনারুঘাটের মেয়ে, পিছিয়ে যাওয়ার জায়গা নেই। মাঠে নামার পর শুধু জয়ের কথাই মাথায় ছিল। আল্লাহর রহমতে জিততে পেরেছি। রাবেয়া সুলতানার এই অনুভব শুধু একটি খেলোয়াড়ের সাফল্যের গল্প নয়, এটি একটি মেয়ের দৃঢ় সংকল্প, স্বপ্ন দেখা ও তা অর্জনের সাহসী অভিযাত্রার প্রতিচ্ছবি। তাঁর কথায় উঠে এসেছে কৃতজ্ঞতা, আত্মবিশ্বাস এবং ভবিষ্যতে আরও বড় কিছু করার প্রত্যয়। চুনারুঘাটবাসী গর্বিত মিমকে নিয়ে, আর মিম গর্বিত নিজের জনপদকে দেশব্যাপী পরিচিত করে তুলতে পেরে। এই স্বর্ণজয় শুধু মিমের ব্যক্তিগত সাফল্য নয়, এটি চুনারুঘাটের ক্রীড়া উন্নয়নের একটি মাইলফলক হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। তাঁর এই অর্জন ভবিষ্যতে আরও অনেক তরুণ-তরুণীকে ক্রীড়া জগতে এগিয়ে আসার প্রেরণা জোগাবে।