হবিগঞ্জে ভাবি-ভাতিজিসহ তিনজন হত্যার দায়ে শাহ আলমের মৃত্যুদণ্ড
হবিগঞ্জের মাধবপুর উপজেলায় ২০১৬ সালে পারিবারিক বিরোধ ও পাওনা টাকা নিয়ে সংঘটিত এক নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় অভিযুক্ত শাহ আলম ওরফে তাহের উদ্দিনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২০ মে) দুপুরে হবিগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ মো. কায়সার মোশাররফ ইউসুফ এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন এবং পরে তাকে হবিগঞ্জ জেলা কারাগারে প্রেরণ করা হয়।
আদালতের স্টেনোগ্রাফার মুখলেছুর রহমান জানান, অভিযুক্ত শাহ আলমকে মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তিন লাখ টাকা অর্থদণ্ড দেওয়া হয়েছে। নিহতরা হলেন—শাহ আলমের ভাবি জাহানারা খাতুন (৪৫), তার মেয়ে শারমিন আক্তার (২৩) এবং প্রতিবেশী শিমুল মিয়া (২৫)। মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ২৩ আগস্ট সন্ধ্যায় শাহ আলম তার ভাবি ও ভাতিজিকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করেন। এ সময় তাদের চিৎকারে প্রতিবেশী শিমুল এগিয়ে এলে তাকেও ছুরিকাঘাত করা হয়। জাহানারা খাতুন ঘটনাস্থলেই মারা যান, বাকি দুজনকে হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার সময় নিহতদের স্বামী গিয়াস উদ্দিন দুবাই প্রবাসে ছিলেন। তার ভগ্নিপতি হাজী মো. মোহন মিয়া একমাত্র আসামি শাহ আলমের বিরুদ্ধে মাধবপুর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।
আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে শাহ আলম জানান, তিনি গ্রিস প্রবাসে থাকার সময় জাহানারাকে কয়েক দফা টাকা পাঠান। এছাড়াও পৈত্রিক সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হওয়ার ক্ষোভে দেশে ফিরে হত্যাকাণ্ডের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। ২০১৭ সালের ৫ ডিসেম্বর মাধবপুর থানা পুলিশ আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে। দীর্ঘ প্রায় ৯ বছর ধরে বিচার চলাকালে ১৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালত এ রায় দেন।
নিহত জাহানারা খাতুনের স্বামী গিয়াস উদ্দিন বলেন, “আমি আদালতে ন্যায় বিচার পেয়েছি। এখন রায় দ্রুত বাস্তবায়নের দাবি জানাই।”
অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) মো. আফজাল হোসেনও রায়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “এ রায় দ্রুত বাস্তবায়ন হলে লোকজন এমন অপরাধ করতে ভয় পাবে।”