তাহিরপুরে পাহাড়ী বাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ, ঝুঁকিতে ঘরবাড়ি
টানা কয়েক দিনের বৃষ্টি ও ভারত থেকে আসা পানিতে প্রবল স্রোতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিন বড়দল ইউনিয়নে বড়দল নতুন হাটি ও বড়দল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যদিয়ে তৈরী করা নদী ও ফসল রক্ষা বাধঁ ভেঙ্গে যায়।
শনিবার ভোর রাতে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের পাটলাই নদী দিয়ে মেঘালয় পাহাড় থেকে বিভিন্ন ছড়া দিয়ে নেমে আসা পানি ও যাদুকাটা নদী দিয়ে নেমে আসা ভারতের পানির চাপে বাঁধটি ভেঙে মাটিয়ান হাওরে প্রবল বেগে প্রবেশ করে ঢলের পানি।
হাওরে পানি না থাকায় আর নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এমনটা হয়েছে। যদি হাওরে পানি থাকতো তাহলে এমনটা হতো না। ভারতের পানিতেই ক্ষতির শিকার হতে হয় তবে বন্যার কোনো আশংকা এখনো নেই। পানির গতি কমে গেছে কারন হাওরের পানি আর ঢলের পানি সমান হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন স্থানীয় এলাকাবাসী।
জানিয়েছেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের সদস্য জুয়েল আহমেদ জানিয়েছেন, পানির প্রবল স্রোতে আফলাকুল মিয়া, মাসুক মিয়া, আব্দুস শহিদ, জসিম উদ্দিন, জিয়াউল হকসহ ১২-১৩ টি পরিবারের বসত বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তারা পেশায় কৃষক। এদের মধ্যে ৪ জনের বাড়ি পানির তোড়ে ভেঙে গেছে। বাকী বাড়ি গুলোও ভাঙ্গনের আতংকে আছে।
এরপরও বন্যা পরিস্থিতির আশংকায় ও সতর্কতা অবলম্বনে এ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নে ৩৯টি বন্যাশ্রয় কেন্দ্র খোলা হয়েছে।এছাড়াও জরুরী প্রয়োজনে উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয়ে জরুরী পরিস্থিতি মোকাবেলায় ২৪ ঘন্টা খোলা রাখা হয়েছে বলে উপজেলা প্রশাসন সুত্রে জানা গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, দোয়ারাবাজার উপজেলার খাসিয়ামারা, ছাতক উপজেলার চেলা, মধ্যনগর উপজেলার সোমেশ্বরী, তাহিরপুর উপজেলার যাদুকাটা, পাটলাই, মাহারাম, বৌলাই, রক্তি ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার মরা যাদুকাটা নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি ভাটির দিকে নামছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সুত্রে জানা গেছে, ভারতের মেঘালয় রাজ্যের চেরাপুঞ্জিতে গত ২৪ ঘন্টায় ৪১০.০ মি.মি বৃষ্টিপাত হয়েছে।
অন্যদিকে সুনামগঞ্জে ৭১ মি.মি,ছাতকে ৬৭ মি.মি, তাহিরপুরের লাউড়েরগড়ে ৬৯.০ মি.মি বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।
তাহিরপুর উপজেলার দক্ষিণ বড়দল ইউনিয়ন বড়দল গ্রামের বাসিন্দা নাজিম উদ্দীন জানান, শনিবার ভোর রাতে ভারত থেকে নেমে আসা পানির প্রবল স্রোতের কারনে বাঁধটি ভেঙে যায়। ভেঙ্গে যাওয়া আংশে দিয়ে মাটিয়ান হাওরে পানি প্রবেশ করায় উত্তর পাশের তিন চারটি বাড়ি ঘরের বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় সুরমা নদীর পানি বিপদসীমা ৯৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী কয়েক দিন মাঝারি ও ভারী বৃষ্টি হবে। আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই।