দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা করতে হবে: সুনামগঞ্জে ডাঃ জাহিদ
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেছেন, ফ্যাসিস্ট সরকার দেশের সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করে পালিয়ে গেছে। এক স্বৈরাচার পালিয়েছে আরেক কর্তৃত্ববাদী সরকার যেন না আসে সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
সোমবার (২ জুন) দুপুর ১টায় শহরের একটি রেষ্টুরেন্টে সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপি আয়োজিত বর্ধিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, প্রশাসনের সকল স্তরে ফ্যাসিবাদ বসে আছে। এদের সরাতে হবে। নতুবা দেশে সুশাসন প্রতিষ্ঠা পাবেনা। রাষ্ট্রের সর্বস্তরে যে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে,তা থেকে মুক্তির একমাত্র পথ হচ্ছে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের ক্ষমতা প্রকৃত অর্থে জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়া। ডাঃ এ জেড এম জাহিদ হোসেন জুলাই আগষ্টে ছাত্র জনতার হত্যাকারীদের বিচার দাবি করে তিনি বলেন, দেশে বিদ্যমান রাজনৈতিক অস্থিরতা নিরসনে অবিলম্বে রাজনৈতিক ও বিচারিক সংস্কার সম্পন্ন করে দ্রুত নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষনা করে দেশের মালিকানা জনগণের কাছে ফেরত দেয়ার আহবান জানান। তিনি বলেন, ইউনুস সরকারের দিকে বুকভরা আশা নিয়ে মানুষ তাকিয়ে আছে। দ্রুততার সাথে যেন হত্যা, গুমের বিচার হয়। যেসব ধংশ করেছে সে সব প্রতিষ্ঠান নতুন করে গড়ে তুলতে হবে।
তিনি আরো বলেন, গত ১৭ বছর মানুষের অধিকার নিয়ে লড়াই করেছি। অর্থনৈতিক মুক্তি ও গনতন্ত্র উদ্ধারে লড়াই করেছি। এ লড়াইয়ে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে জীবন দিতে হয়েছে। জুলাই আগষ্টে হাজার হাজার লোক শহীদ হয়েছে, আহত হয়েছে। ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা খুন করে পালিয়ে গেছে। বিএনপি পালায়না। বিএনপি জনগণের দল। জনগণের কষ্টে পাশে থাকে। খুনিদের বিচারের আওতায় আনতে হবে। বিচার শুরু হয়েছে। শুধু তাদের বিচার করলে হবেনা, আওয়ামী সরকার বিচার বিভাগ, প্রশাসন, নির্বাচন কমিশনসহ রাষ্ট্রের প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছিল। গুম খুনের রাজত্ব কায়েম করেছিল।৬৪ জন সাংবাদিককে শহীদ করেছিল এই আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকার। সব গুম খুনের বিচার করতে হবে। নেতাদের উদ্দেশ্য বলেন, বিএনপি আজ আর শুধু একটি রাজনৈতিক দল নয় এটি গণমানুষের প্রত্যাশার প্রতীক। তাই তৃণমূলে জনসম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে। প্রতিটি ঘরে ঘরে বিএনপির বার্তা পৌঁছে দিতে হবে।
সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির আহবায়ক কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলনের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত সদস্য এডভোকেট আব্দুল হকের সঞ্চালনায় অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, বিএনপির সিলেট বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জি. কে গৌছ, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ সিদ্দিকী, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মিজানুর রহমান চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক জেলা সেক্রেটারি এডভোকেট নুরুল ইসলাম নুরুল।
সভায় সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর, বিশ্বম্ভরপুর, জামালগঞ্জ, ধর্মপাশা, ছাতক, দোয়ারাবাজার, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, জগন্নাথপুর, শান্তিগঞ্জ, মধ্যনগরসহ জেলার ১৬টি ইউনিটের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা দলীয় কর্মসূচি শক্তিশালী করতে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে সাংগঠনিক কাঠামো পুনর্গঠনের ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
বক্তারা বলেন, দেশ আজ গভীর সংকটে। মানুষের জীবন-জীবিকা হুমকির মুখে। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি,রাজনৈতিক নিপীড়ন ও গণতন্ত্রহীনতা জনগণকে দিশেহারা করে তুলেছে। গুম-খুনের সংস্কৃতি বন্ধ করতে হলে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ সরকার শুধু রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ নয়। জনগণের মতপ্রকাশের অধিকারকেও দমন করছে। এ অবস্থা চলতে পারে না। দেশে স্থিতিশীলতা ফেরাতে অবিলম্বে নির্দলীয় সরকারের অধীনে অবাধ নির্বাচন চাই।