ঈদ ঘিরে নির্ঘুম বানিয়াচংয়ের দর্জিবাড়ির কারিগররা
মুসলমানদের সব থেকে বড় ধর্মীয় অনুষ্ঠান পবিত্র ঈদুল আযহা। দর্জিপাড়া আর নতুন কেনা পোশাক ফিটিং এবং তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন দর্জি ও কারিগররা ।মাসজুড়ে কাটছে দর্জিদের নির্ঘুম রাত। সেলাই মেশিনের খট খট শব্দে সরগরম হয়ে উঠেছে দর্জিপাড়াগুলো। অক্লান্ত পরিশ্রমে দর্জিরা তৈরি করছেন একেকটি নতুন জামা। দিন থেকে রাত অবধি যেন কোনো সময়ই থামছে না কাঁচির খ্যাঁচ খ্যাঁচ শব্দ। ব্যতিক্রম নয় হবিগঞ্জের বানিয়াচং উপজেলা সদর; ঈদের দিন যত ঘনিয়ে আসছে, ততই ব্যস্ততা বেড়ে চলেছে দর্জিবাড়িগুলোতে। সব মিলিয়ে মাস দেড়েক পূর্বে থেকেই জমজমাট হয়ে উঠেছে টেইলার্স ব্যবসা।
ঈদে নতুন পোশাক তৈরির ধুম পড়ে যায় মুসলিম পরিবারগুলোতে। আর ব্যস্ততা বাড়ে দর্জির দোকানগুলোতে। এবারও মনের মতো ঈদের পোশাক তৈরি করতে ক্রেতারা ছুটছেন দর্জির দোকানে। হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ের সদরের বিভিন্ন টেইলারী মার্কেট এলাকা ঘুরে দেখা যায়, মাস খানেক পূর্বে থেকেই এসে মহাব্যস্ত হয়ে উঠেছে দর্জিবাড়িগুলো। বিরতিহীন সেলাই মেশিনের যান্ত্রিক শব্দ বলছে, দম ফেলার ফুরসত নেই কারিগরদের। আর এ ব্যস্ততা চলবে চাঁদরাত পর্যন্ত।
কারিগরদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রায় এক মাস পূর্বে থেকেই এসব পোশাক তৈরির অর্ডার নেওয়া শুরু হয়েছে। গত দুই সপ্তাহ যাবত তারা অর্ডার নেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন অনেক দোকানি। তাই প্রতিটি দর্জি দোকানের কারিগরদের এখন নির্ঘুম রাত কাটছে। ঈদ যতই ঘনিয়ে আসছে ততই বাড়ছে তাদের ব্যস্ততা। তবে সেলাই প্রতি নির্ধারিত মজুরিতেই সন্তুষ্ট থাকতে হয় তাদের। সেলাইপ্রতি নির্ধারিত ওই স্বল্প মজুরি নিয়েই ফিরতে হবে বাড়ি। কারিগররা জানান, পোশাকভেদে সেলাইপ্রতি ২০০ টাকা থেকে সাড়ে ৪০০ টাকা পর্যন্ত মজুরি নির্ধারিত হয়েছে তাদের।
বানিয়াচং উপজেলার বড় বাজারের নূরানী টেইলার্সের মালিক ও কারিগর মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, আমি নিজেই অর্ডার নেই এবং নিজেই কাপড় তৈরি করি। এখন প্রত্যেক দিনই অর্ডার পাচ্ছি। বেশি তৈরি করছি মেয়েদের সালোয়ার কুর্তি আর ছেলেদের কাবলি। ঈদের আগে ভীড় বেশি হয় তাই অতিরিক্ত কারিগর নিয়োগ দেই। তবে এবার অর্ডার এতো বেশি যা ভাবতেও পারিনি। গত ঈদুল ফিতরের তুলনায় এবার ঈদের কাজ বেশি থাকায় এবারের ঈদটা আশা করি পরিবার নিয়ে ভালো কাটবে।
উপজেলা সদরের মদিনা মার্কেটের ড্রেসী টেইলার্সের মালিক ও কাটিং মাস্টার সামানুর রহমান বলেন, আমার দোকান ছাড়া আমার আলাদা আর একটি কারখানা রয়েছে। এখানে চার জন কারিগর কাজ করে। ঈদের জন্য প্রচুর কাজের অর্ডার পাচ্ছি। কারিগররাও এবার রাত-দিন কাজ করবেন। আশা করছি আমরা সবাই ঈদের আনন্দ সুন্দরভাবে উপভোগ করতে পারবো।