নবীগঞ্জে আশ্রয়কেন্দ্রে বন্যার্তদের জেলা প্রশাসকের ত্রাণ বিতরণ
টানা কয়েক দিনের ভারি বৃষ্টিপাত ও উজান থেকে নেমে আসা ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানিতে নবীগঞ্জ উপজেলার সকল নদ নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। কুশিয়ারা নদীর পানি উপচে দীঘলবাক ইউনিয়নের বেশ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। ইতিমধ্যে গালিমপুর-মাধবপুর প্রাইমারী স্কুলে ৩০টি পরিবার আশ্রয় নিয়েছেন। গতকাল হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক ড. ফরিদুর রহমান ও নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমিন বন্যা এলাকা পরিদর্শন করে ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছেন। ইউএনও বলেন হঠাৎ করে ভারতীয় পানি আসায় এমন অবস্থা হয়েছে, এই পানি আমাদের দেশিও পানি না।
আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ টন চাল ও ৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্ধ দিয়েছেন হবিগঞ্জ জেলা প্রশাসক। মঙ্গলবার বিকালে জেলা প্রশাসক ড. মোঃ ফরিদুর রহমান বর্ন্যাতদের মাঝে চাল ও শুকনো খাবার বিদরণ করেছেন। এ সময় উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুহুল আমিনসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ইতিমধ্যে কয়েকটি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত রাখা হয়েছে বলে জানাগেছে। সরকারী ভাবে জেলা প্রশাসক ড. মোঃ ফরিদুর রহমান মাধবপুর গালিবপুর আশ্রয় কেন্দ্রে ৩ টন চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন।
খোজঁ নিয়ে জানাযায়, কুশিয়ারা নদীর পানি ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়ে ডাইক উপচে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। কুশিয়ারানদী বিপদ সীমার ৮.৫৫ সেঃমিঃ উপর দিয়ে বইছে। সময় যত যাচ্ছে পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ফলে নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশংখ্যা করছেন স্থানীয়রা। ইতিমধ্যে উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের গালিমপুর, মাধবপুরসহ কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়া কসবা, আউশকান্দি ইউনিয়নের পাহাড়পুর, পারকুল, ঢালার পাড় এবং ইনাতগঞ্জের কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হওয়ার আশংখ্যা রয়েছে।
মাধবপুর স্কুলে ঈদের আগেই বন্যার্ত ৩০ পরিবারের মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার দুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। জেলা প্রশাসক ড. মোঃ ফরিদুর রহমান সরকারীভাবে আশ্রয় কেন্দ্রে বনার্তদের মাঝে চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন। হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার দীঘলবাক ইউনিয়নের বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করেছেন জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান।
মঙ্গলবার বিকেলে উপজেলার গালিমপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া মানুষদের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ত্রাণ বিতরণ করা হয়।
ত্রাণ বিতরণকালে গালিমপুর, মাধবপুর ও পশ্চিম মাধবপুর গ্রামের আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থানরত ৫০টি পরিবারের মাঝে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়। প্রতিটি পরিবারকে দেওয়া হয়- ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবণ, ১ লিটার সয়াবিন তেল, মরিচের গুঁড়া, হলুদের গুঁড়া ও ধনিয়ার গুঁড়াসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী। ত্রাণ বিতরণকালে উপস্থিত ছিলেন নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. রুহুল আমিন, সহকারী কমিশনার (ভূমি) শাহীন দেলোয়ার, নবীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মো. কামরুজ্জামান, উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. আসাদ উল্লাহসহ প্রশাসনের অন্যান্য কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। এরআগে বন্যা কবলিত গালিমপুর, মাধবপুর ও পশ্চিম মাধবপুর এলাকা পরিদর্শন করেন জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান।
জেলা প্রশাসক ড. মো. ফরিদুর রহমান বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী, দুর্যোগে কেউ যেন অভুক্ত না থাকে, তা নিশ্চিত করতে জেলা প্রশাসন সর্বাত্মকভাবে কাজ করছে। যতদিন বন্যা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হবে, ততদিন পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত থাকবে।” তিনি আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেওয়া শিশু, বৃদ্ধ ও নারীদের খোঁজখবর নেন এবং প্রয়োজনীয় সহায়তার আশ্বাস দেন। স্থানীয় বাসিন্দারা জেলা প্রশাসনের এ মানবিক উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বন্যার এই দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য জেলা ও উপজেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানান।
কুশিয়ারা নদীর পানি বিপদ সীমার ৮.৫৫ সেঃ মিঃ উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আশ্রয় কেন্দ্রে বন্যার্তদের সার্বিক তদারকি করছেন ওয়ার্ড মেম্বার আকুল মিয়া।
এব্যাপারে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রুহুল আমীন বলেন, হটাৎ করে ভারতীয় আসা পানিতে তলিয়ে যাওয়া এলাকা পরিদর্শন করেছি।তিনি আর বলেন এই পানি দেখলেই মনে হয় এটা দেশি পানি না।তাই সার্বক্ষনিক খোঁজ খবর নিতেছি ইতিমধ্যে সরকারী ত্রান সামগ্রী বিতরণ করেছি।