তাহিরপুরে উদ্ধার হওয়া বনরুইটি রেস্কিউ সেন্টারে
বিশ্বের বিলুপ্তপ্রায় বন্যপ্রাণী বনরুই সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলা সীমান্ত এলাকা থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
সুনামগঞ্জ বন বিভাগের ফরেস্ট রেঞ্জার্স সাদ উদ্দিন আহমেদ জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার বন অধিদপ্তর, ঢাকা এর ওয়াচম্যান সজল চন্দ্রের বিশেষ তত্বাবধানে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। সেখানে বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী সিকিউরিটি কন্ট্রোল শাখায় রেস্কিউ সেন্টারে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদানের পর এটিকে উপযুক্ত স্থানে অবমুক্ত করা হবে।
গত বুধবার ভারতের মেঘালয় পাহাড় থেকে ছড়ার পানি সাথে ভেসে এসে উপজেলার উত্তর শ্রীপুর ইউনিয়নের কলাগাও এলাকার হাওরে জেলেদের জালে আটকা পড়ে।
পরে জেলেরা কলাগাঁও বাজারে বিক্রি করার জন্য নিয়ে গেলে উৎসুক জনতা ভিড় করে এক নজর দেখার জন্য। সবাই এই বনরুই কে চিন্তে না পারায় স্থানীয় এলাকাবাসী ও সচেতন মহল এ বিষয়টি বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের সংশ্লিষ্টদের বিষয়টি অবগত করা হলে তারা এসে নিয়ে যায়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৭৪ সালের বন্যপ্রাণী আইনে বনরুইকে সংরক্ষিত ঘোষণা করা হয়েছে। প্রাণীটি হুমকির সম্মুখীন বিধায় আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন)বনরুইকে লাল তালিকায় স্থান দিয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বনরুই আঁশযুক্ত পিপীলিকাভুক দন্তহীন স্তন্যপায়ী প্রাণী। আঁশযুক্ত শরীর ও মৎসাকৃতি গঠনে বনজঙ্গলে চলাফেরা করা এই প্রাণীটিকে দেখতে রুই মাছের মত লাগার কারণে বনরুই বলা হয়ে থাকে। এরা বিপদের আভাস পেলে নিজের শরীর গুটিয়ে নেয় বলে মালয় ভাষায় এদের বলে পেঙ্গুলিং যেখান থেকে এসেছে এদের ইংরেজি নাম প্যাঙ্গোলিন। এই স্তন্যপায়ী প্রাণীটি বাংলাদেশে মহাবিপন্ন। লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, পার্বত্য চট্টগ্রামের বনাঞ্চল ও উত্তরবঙ্গের কিছু এলাকায় অল্পসংখ্যক বনরুই অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই করছে। ভারত, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কায়ও বনরুই আছে।
জানা যায়, পৃথিবীর ৮ প্রজাতির বনরুইয়ের মধ্যে বাংলাদেশে তিনটির অস্তিত্ব ছিল। বর্তমানে কেবল ভারতীয় বনরুই (Indian Pangolin) ও চায়না বনরুই (Chinese Pangolin) পাওয়া যায়। এশীয় বৃহৎ বনরুই (Asian Giant Pangolin) নামে অপর একটি বনরুই চিরতরে বিলুপ্ত হয়ে গেছে।