ধর্ষকদের শাস্তি ও সাইবার বুলিংয়ের প্রতিবাদে শাবিপ্রবিতে মানববন্ধন
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতকরণ ও নারী শিক্ষার্থীদের সাইবার বুলিংয়ের মাধ্যমে মানসিক বিপর্যস্ত করার প্রতিবাদে মানববন্ধন পালিত হয়েছে।
রবিবার বেলা তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারের সামনে এ প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
মানববন্ধনে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফয়সাল হোসেন বলেন, “তদন্তের সাপেক্ষে এই ধর্ষণ ঘটনার আষ্টেপৃষ্ঠে কী রয়েছে, তা অতি দ্রুত উদঘাটন করে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। এছাড়া এই ধর্ষণকে ধামাচাপা দিতে যারা সাইবার বুলিং করে নারী শিক্ষার্থীদের হয়রানি করছে, তাদের বিরুদ্ধেও আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।”
সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান ও অধ্যাপক আল আমিন বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞানের সূতিকাগার। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় কোন ধর্ষক লালন করে না। যে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে, সমাজবিজ্ঞান বিভাগ তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। যারা অপকর্ম করেছে, এসব কুলাঙ্গারা আমাদের ছাত্র হতে পারে না। আমরা কোন ধর্ষক, ইভটিজারকে ভর্তি করাই না। এদের চেহারাও আমরা দেখতে চাই না। কারণ এসব কুলাঙ্গারদের চেহারা দেখে আমরা ক্লাসে থাকতে পারব না। আমাদের ছাত্রীরা এদের দেখে ট্রমাটাইজ, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে যাবে।”
“এ ঘটনার পাশাপাশি আমাদের ছাত্রীরা সাইবার বুলিংয়ের শিকার হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে যতদূর সম্ভব আমাদের বিভাগ থেকে ঘটনা তদন্তে সহযোগিতা করবে। আপনারা শুধু আইনি সহযোগিতা আমাদের দিবেন। আমরা সমাজবিজ্ঞান যেকোন ছাত্র এবং শিক্ষক যেকোন ঘটনা মোকাবিলা করতে প্রস্তুত। এ বিভাগ তার পিতৃত্বসুলভ আচরণ করবে। যারা সাইবার বুলিংয়ের নামে এ ঘটনাকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করছে, তাদেরকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আইনের আওতায় আনার জন্য অনুরোধ করছি ”
তিনি আরও বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের যে নারী নির্যাতন সেল আছে, সেখানে আমাদের বিষয়গুলো প্রদান করব। সাইবার বুলিংয়ের যারা শিকার হয়েছেন, তাদেরকে আমরা সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব। কোন দুশ্চিন্তার কারণ নেই।”
মানবন্ধনে আরও বক্তব্য রাখেন বিভাগটির অধ্যাপক আবদুল গণি, অধ্যাপক লায়লা আশরাফুন, চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আমির হোসেন।
এদিকে ১৯ জুন ধর্ষণ মামলার আসামি শান্ত তারা আদনান ও স্বাগত দাশ পার্থকে পুলিশ গ্রেফতারের পর বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞান বিভাগের কতিপর নারী শিক্ষার্থীকে ফেইসবুকের বিভিন্ন পেইজ ও ফেইক আইডি খুলে ধারাবাহিকভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার করা হচ্ছে। এসব পেইজে বিভাগের শিক্ষার্থীদের অংশ নেওয়া বিভিন্ন অনুষ্ঠান, উৎসব ও ভ্রমণের সময়ের আসামী ও নারী শিক্ষার্থীসহ অন্যদের একই ফ্রেমের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে অপতথ্য প্রচার করা হচ্ছে বলে জানান বিভাগটির সাধারণ শিক্ষার্থীরা।
ভয়েস অফ বাংলাদেশী হিন্দুস, প্রটেক্ট মুসলিম সিস্টার্স, নুসাইবা বিনতে কাব, সেইভ বিডি মুসলিম গার্লস, প্রিয় ক্যাম্পাস সাস্ট’, ফাইট এগেইন্সট্ হিন্দুত্বভাদ ইত্যাদি ফেইসবুক পেইজে এসব সাইবার বুলিং করা হচ্ছে বলে জানান বিভাগটির শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান বলেন, “সাইবার বুলিংয়ের বিষয়টা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন খুবই গুরুত্বসহকারে দেখছে। গতকাল এ বিষয়ে একজন ছাত্রী আমাদের কাছে একটা অভিযোগ পত্র জমা দিয়েছে। আমরা এটা নিয়ে কাজ করতেছি।”