ধর্মপাশায় পরীক্ষার্থীকে ধর্ষণের অভিযোগে পুলিশ কনস্টেবল কারাগারে
সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলায় এইচএসসি পরীক্ষার্থী এক তরুণী (১৮) কে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করার অভিযোগে আইনুল হক (২৮) নামের ধর্মপাশা থামার এক পুলিশ কনস্টেবলকে কারাগারে পাঠিয়েছে ধর্মপাশা থানা পুলিশ। সোমবার গভীর রাতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে ধর্মপাশা থানায় মামলা হয়েছে। ভূক্তভোগী ওই তরুণী বাদী হয়ে ধর্মপাশা থানা পুলিশের কনস্টেবল আইনুল হক (২৮) কে আসামি করে এই মামলাটি করেছেন। ওই পুলিশ কনস্টেবলের বাড়ি সিলেটের গোয়াইনঘাট উপজেলার ইসলামপুর দুভাগ গ্রামে। আর ওই তরুণী ধর্মপাশা উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার, ধর্মপাশা থানা পুলিশ ও ভূক্তভোগী ওই তরুণীর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার একটি গ্রামের বাসিন্দা কলেজ পড়ুয়া ওই তরুণী কলেজে আসা যাওয়ার পথিমধ্যে পরিচয় হওয়র সূত্র ধরে পুলিশ কনস্টবেল আইনুল হকের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। বছর খানেক ধরে তাঁদের দুইজনের মধ্যে নিয়মিত মোবাইলে কথাবার্তা, হোয়াটঅ্যাপ ও ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ, ছবি ও ভিডিও আদান প্রদান হতো। বিভিন্ন সময় তাঁদের দেখা সাক্ষাতও হয়েছে। ওই তরুণী নেত্রকোনার একটি কলেজ থেকে এবারের অনুষ্ঠিত ২০২৫ সালের এইচএসসি পরীক্ষায় গত ২৬ জুন নেত্রকোনার একটি কলেজে এইচএসসি বাংলা প্রথম পত্র বিষয়ে পরীক্ষায় অংশ গ্রহণ করে। ওইদিন বেলা দুইটার দিকে ওই পুলিশ কনস্টেবল ওই কলেজ ছাত্রীকে ম্যাসেঞ্জারে কল দিয়ে জানান যে আমি ছুটি নিছি, তুমি ধর্মপাশা উপজেলার মহদীপুর স্পিডবোট ঘাটে চলে এসো। ওই তরুণী তখন বলেন আমাকে কোথায় নিয়ে যাবেন? তখন ওই কনস্টেবল জানায় সে তাঁকে সুনামগঞ্জ শহরে ঘুরতে নিয়ে যাবে। পরে নেত্রকোনা থেকে ওইদিন বেলা আড়াইটার দিকে সিএনজি যোগে রওয়ানা হয়ে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ধর্মপাশা উপজেলার মহদীপুর স্পিডবোট ঘাটে এসে পৌঁছেন ওই তরুণী। তখন ওই তরুণীকে বিয়ের প্রলোভন দেখানোসহ নানা কথা বলে আইনুল তাঁকে সুনামগঞ্জ জেলা শহরে নিয়ে যান। ওইদিন রাত আট ঘটিকার সময় সুনামগঞ্জ শহরের একটি আবাসিক হোটেলে নিয়ে তরুণীর নাম গোপন করে রাত্রি যাপন করে। হোটেলের কক্ষে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ও ফুসলিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন। পরদিন ২৭ জুন তাঁরা দুইজন ধর্মপাশায় চলে আসেন। কিন্তু বিয়ের কথা তুললেই নানাভাবে এড়িয়ে যেতেন আইনুল। গত ২৮ জুন বিকেলে নিজ বাড়ি থেকে রওয়ানা হয়ে ওই তরুণী নেত্রকোনা জেলা শহরে চলে যান। ২৯ জুন বাংলা দ্বিতীয় পত্র পরীক্ষায় তিনি অংশ নেন। পরীক্ষা শেষে নেত্রকোণা জেলার হোটেল ওমরে ২০২ নম্বর রুমে নিয়ে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আবারো ধর্ষণ করে। পরে ওই পুলিশ কনস্টেবলকে বিয়ের কথা বললে তিনি নানা অসংলগ্ন কথাবার্তা বলে ও বিয়ের করতে অস্বীকার করে সব ধরণের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। নিরুপায় হয়ে ২৯ জুন রাত আটটার দিকে ধর্ষণের শিকার ওই তরুণী নিজে থানায় এসে ঘটনাটি থানার ওসিকে ও পর্যায়ক্রমে পরিবারের সদস্য এবং আত্বীয় স্বজনকে ঘটনাটি অবগত করেন।
ধর্মপাশা থানার ওসি মোহাম্মদ এনামুল হক জানান, ওই তরুণী ঘটনাটি অবগত করার পর পরই কনস্টেবল আইনুল হক কে আমরা পুলিশ হেফাজতে নিয়েছি। ওই তরুণী বাদী হয়ে সোমবার গভীর রাতে পুলিশ কনন্টেবল আইনুল হককে আসামি করে থানায় মামলা করেছেন। এই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে মঙ্গলবার দুপুরে মামলার আসামি পুলিশ কনস্টেবল আইনুল হককে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ছাড়া ভিকটিকমের ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য সুনামগঞ্জ জেলা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।