ধর্মপাশায় বিএনপির কমিটি থেকে বাদ পড়ায় পাইকুরাটি ইউনিয়নের তৃণমূল নেতাকর্মীদের মানববন্ধন  

ফ্যাসিবাদীদেরকে নিয়ে অবৈধ পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপির আহব্বায়ক কমিটির অনুমোদনের বিরুদ্ধে সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপির স্থানীয় তৃণমূল নেতাকর্মীদের ঘন্টা ব্যাপী মানববন্ধন ও প্রতিবাত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এর পর গাছতলা বাজারের প্রধান সড়কে একটি বিশাল বিক্ষোভ র‍্যালী করা হয়।

সোমবার (২১ জুলাই) বিকেল পাঁচটার দিকে উপজেলার পাইকুরাটি ইউনিয়নের গাছতলা উচ্চ বিদ্যালয়ের মাঠে পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠন এই মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার আয়োজন করে।

মানবন্ধনের পর প্রতিবাদ সভায় পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও ওই ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি মোবারক হোসেন সেলিমের সঞ্চালনায় অন্যান্যদের মাঝে বক্তব্য দেন, উপজেলা বিএনপির সাবেক সদস্য ও ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সহ সভাপতি মো: সবুজ মিয়া, ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সিনিয়র সহ সভাপতি কারাবন্ধী নেতা মোখলেছুর রহমান, ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক আমিনুল হক নয়ন, কারাবন্ধী বিএনপির নেতা নুরুজ্জামান, আমিনুল ইসলাম বাবুল, সফিকুল ইসলাম, আমিরুল ইসলাম, কালাম মিয়া, ময়না মিয়া তালুকদার প্রমুখ।

মানববন্ধনে বক্তারা দাবী করেন, উপজেলা বিএনপি কর্তৃক ইউনিয়ন বিএনপির অনুমোদিত প্রতিটি কমিটির বিরুদ্ধে বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মাঝে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এর কারণ হচ্ছে কমিটিতে এমন কিছু বিতর্কিত লোকের নাম কমিটিতে আসছে যারা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে আওয়ামীলীগের মালা গলায় পড়ে তাদের সাথে মিশে বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা ভোগ করেছে। যার প্রমাণসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক ভাবে ভাইরাল হয়েছে। এছাড়া পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপির আহবায়ক কমিটিতে প্রবীণ রাজনীতিবিদ ও পাইকুরাটি ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি আমিরুল ইসলামসহ আরও অনেক গুণী ও ত্যাগী নেতা বাদ পড়েছে। যা অত্যান্ত দুঃখজনক এবং বেদনাজনক। তাই আমরা চাই এই কমিটি বাদ দিয়ে তারেক রহমানের নির্দেশ মোতাবেক স্বচ্ছ ও ত্যাগী নেতাদের নিয়ে পুনরায় নতুন কমিটি গঠন করা হোক। এটাই আমাদের প্রাণের দাবী।

উল্লেখ্য যে, ধর্মপাশা উপজেলার ধর্মপাশা, সেলবরষ, পাইকুরাটি, জয়শ্রী, সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ও সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ-এ ৬টি ইউনিয়নে বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ধর্মপাশা সদর ইউনিয়নে মোঃ নয়ন মিয়াকে আহ্বায়ক ও মোঃ আব্দুল মন্নাফ মিয়াকে যুগ্মা আহ্বায়ক, সেলবরষ ইউনিয়নে মোহাম্মদ আলীকে আহ্বায়ক ও জি এম মমতাজুর রহমানকে যুগ্ম আহ্বায়ক, পাইকুরাটি ইউনিয়নে মহাবুব মুর্শেদকে আহ্বায়ক ও মোঃ হারুন-অর-রশিদ সরকারকে যুগ্ম আহবায়ক, জয়শ্রী ইউনিয়নে মোঃ তরিকুল ইসলামকে আহ্বায়ক ও এম এ কালাম আজাদকে যুগ্ম আহবায়ক, সুখাইড় রাজাপুর উত্তর ইউনিয়নে মোঃ হেকিম মিয়াকে

আহ্বায়ক ও বশির আহম্মেদকে যুগ্ম আহবায়ক এবং সুখাইড় রাজাপুর দক্ষিণ ইউনিয়নে মোঃ সাইফুল ইসলামকে আহবায়ক ও মোঃ কবির মিয়াকে যুগ্ম আহবায়ক করে প্রতিটি ইউনিয়নে ১১ সদস্যবিশিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ধর্মপাশা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও বীর মুক্তিযোদ্ধা লিয়াকত আলী, ১ নম্বর যুগ্ম আহ্বায়ক মোঃ আব্দুল হক, ২ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক (স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত) এস এম রহমত, ৩ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক (স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত) মোঃ নুরুল ইসলাম এবং ৪ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক (স্বাক্ষর ক্ষমতাপ্রাপ্ত) জুলফিকার আলী ভুট্রো স্বাক্ষরিত দলীয় প্যাডে এ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়। পরে রোবাবার (২০জুলাই) রাত সাড়ে ১১টার দিকে কমিটি অনুমোদনের প্যাড গুলো বিভিন্ন আইডির মাধ্যমে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করা হয়।

বিএনপির তৃণমূলের নেতাকর্মীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভার ব্যাপারে জান্তে চাইলে উপজেলা বিএনপির ১ নম্বর যুগ্ম আহবায়ক মোঃ আব্দুল হক বলেন, বিএনপি হলো একটি বড় দল এবং নেতাও অনেক বেশি। এক্ষেত্রে যেহেতু ১১ সদস্য বিশিষ্ট ইউনিয়ন বিএনপির কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়েছে এতে অনেক ত্যাগী নেতাকর্মীই বাদ পড়েছ। তবে যখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি করা হবে তখন প্রত্যেকেই কমিটিতে আসবে এবং প্রত্যেকেই মূল্যায়ন করা হবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন