বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান ঘোষিত রাষ্ট্রকাঠামো মেরামতের ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে শানখলায় বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের উদ্যোগে বিশাল জনসভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সোমবার (২২ সেপ্টেম্বর) বিকেলে শাকির মোহাম্মদ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সায়হায়ম গ্রুপের চেয়ারম্যান, সাবেক জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সল বলেন, ১৫ বছর আগে আমি কখনো ভাবিনি আবার আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে কথা বলার সুযোগ পাবো। ফ্যাসিস্ট সরকারের দমন-পীড়ন, গুম, খুন ও নির্যাতনের কারণে তখন জীবন বাঁচানোই ছিল বড় চ্যালেঞ্জ। কিন্তু ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক আন্দোলনের পর স্বৈরশাসক শেখ হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়েছে। আজ দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া নেতৃত্ব দিচ্ছেন নতুন আশা ও স্বপ্ন নিয়ে। বিএনপি কখনো দুর্নীতি, চাঁদাবাজি বা স্বজনপ্রীতিতে বিশ্বাস করে না- ভবিষ্যতেও করবে না। জনগণের সম্পদ জনগণের মাঝে সুষমভাবে বণ্টন হবে। আমি অতীতে চুনারুঘাট-মাধবপুরে সেতু, কালভার্টসহ বহু উন্নয়ন করেছি, কিছু কাজ অসমাপ্ত রয়ে গেছে। তাই জীবনের শেষ সময়ে আমি আপনাদের কাছে একটাই আবেদন-আমাকে শেষবারের মতো জয়যুক্ত করুন, যাতে বাকিটুকু উন্নয়ন শেষ করতে পারি। একই সঙ্গে আমি সবাইকে আহ্বান জানাই। আসন্ন নির্বাচনে যে কোনো ষড়যন্ত্র রুখে দিতে সজাগ থাকুন। জনগণের শক্তিই হবে আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়ার প্রধান হাতিয়ার।
ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মোঃ জমরুত আলীর সভাপতিত্বে ও মাহফুজ মেম্বারের সঞ্চালনায় আয়োজিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্যে মাধবপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজান বলেন, বিএনপি জনগণের দল। আন্দোলন-সংগ্রাম থেকে শুরু করে উন্নয়ন পর্যন্ত সর্বক্ষেত্রে বিএনপি পাশে ছিলো, আছে থাকবে।
চুনারুঘাট উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি সৈয়দ লিয়াকত হাসান বলেন, সৈয়দ ফয়সল শুধু নেতা নন, তিনি মানুষের হৃদয়ের অংশ হয়ে গেছেন। জনগণ উন্নয়নের স্বার্থে তাঁকে আবারও নির্বাচিত করবে। চুনারুঘাট পৌরসভার মেয়র নাজিম উদ্দিন সামছু বলেন, এই জনসভার ঢল প্রমাণ করে বিএনপির প্রতি মানুষের আস্থা অটুট। আগামীতেও জনগণের রায় বিএনপির পক্ষে যাবে ও সৈয়দ ফয়সল জয়ী হবেন।
হবিগঞ্জ জজকোর্টের পিপি আব্দুল হাই, সৈয়দ সৈয়দ উদ্দিন ডিগ্রী কলেজের উপাধ্যক্ষ মোজাম্মেল হক তালুকদার, এডভোকেট সরকার মো: শহীদ, মাধবপুর উপজেলা বিএনপি সভাপতি শামসুল ইসলাম কামাল, সিনিয়র সহসভাপতি হাজী অলিউল্লাহ, পৌর বিএনপি সভাপতি গোলাপ খান, সাধারণ সম্পাদক আলাউদ্দিন আল রনি, সাবেক পৌর বিএনপি সভাপতি আব্দুল আজিজ, সাবেক পৌর মেয়ার হাবিবুর রহমান মানিক, উপজেলা বিএনপি যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোস্তাফা কামাল বাবু, সাংগঠনিক সম্পাদক শামছুল ইসলাম মামুন, চুনারুঘাট উপজেলা যুবদলের আহবায়ক এডভোকেট মোজাম্মেল হক চৌধুরী, সদস্য সচিব লুৎফুর রহমান জালাল, যুগ্ম আহবায়ক শফিক মিয়া মহালদার, সৈয়দ আবু নাঈম হালিম, উপজেলা সেচ্ছাসেবক দলের সেক্রেটারি আব্দুল মান্নান রুমন, উপজেলা ছাত্রদলের আহবায়ক আরিফুর রহমানসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের রাহাজারো নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সায়হাম গ্রুপের চেয়ারম্যান সৈয়দ মোহাম্মদ ফয়সলের পুত্র ইঞ্জিনিয়ার সৈয়দ ইশতিয়াক আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন- আমার শ্রদ্ধেয় বাবা সারাজীবন আপনাদের সেবা করেছেন। নিজের স্বার্থের কথা তিনি কখনো ভাবেননি। পরিবারকে না দিয়ে, নিজের প্রাপ্য সুখ-স্বাচ্ছন্দ ত্যাগ করে তিনি আপনাদের ভালোবাসা, আপনাদের পাশে থাকার অঙ্গীকারকে জীবন দিয়ে রক্ষা করেছেন। আপনাদের জন্যই তিনি তাঁর যৌবন, তাঁর মূল্যবান সময় বিলিয়ে দিয়েছেন। আজ আমি সন্তান হিসেবে আপনাদের সামনে একটি অনুরোধ রাখছি- জীবনের শেষ প্রান্তে এসে একবার তাঁকে জয়যুক্ত করুন। আপনাদের ভোট, আপনাদের দোয়া, আপনাদের ভালোবাসাই হবে তাঁর জীবনের সবচেয়ে বড় পুরস্কার। আমি আপনাদের কাছে কথা দিচ্ছি- আমার বাবা যদি চুনারুঘাট-মাধবপুরের এমপি হওয়ার সুযোগ পান, তবে এই অঞ্চলের উন্নয়নে কোনো কমতি থাকবে না। অবকাঠামো থেকে শিক্ষা, কৃষি থেকে স্বাস্থ্য- প্রতিটি খাতে আমূল পরিবর্তন ঘটানো হবে। রাস্তাঘাট, সেতু, স্কুল, কলেজ, হাসপাতাল, খেলাধুলার মাঠ- সবকিছুতে আধুনিকায়ন আসবে। প্রতিটি গ্রামে পৌছাবে উন্নয়নের আলো। চুনারুঘাট-মাধবপুরের উন্নয়নে কোনো কমতি থাকবে না। বক্তারা বলেন, বিএনপির ৩১ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা হবে, সুশাসন ফিরে আসবে এবং জনগণের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত হবে। পরিশেষে নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান।