প্রিয়জনের ওপর অতিরিক্ত রাগ কেন হয়

অনুভূতির ভিন্ন প্রকাশ
নিজের অনুভূতির বিষয়ে নিজে সন্দিহান থাকা এক বড়সড় বিপত্তিই বটে। হয়তো আপনার কাউকে ভালো লাগছে কিন্তু আপনি তাঁকে আদতে ভালোবাসেন কি না, সেটা নিজেই বুঝতে পারছেন না। এমন পরিস্থিতিতে ওই মানুষটার উপস্থিতিতে অস্বস্তি অনুভব করতে পারেন আপনি। সেই অস্বস্তির প্রকাশ হতে পারে রাগের মাধ্যমে।

নিজের কিংবা অন্যের অনুভূতি বুঝতে না পারার সমস্যায় ভোগেন অনেকেই। জরিপ বলছে, প্রতি ১০ জনের মধ্যে প্রায় ১ জন ব্যক্তি নিজের অনুভূতি না বোঝার সমস্যায় ভুগতে পারেন। এমন হলে নিজের ভালো বা খারাপ লাগার অনুভূতির কারণটা বোঝাও মুশকিল হয়ে দাঁড়ায়। ফলে প্রেমের অনুভূতিও বুঝতে না-ই পারতে পারেন ওই ব্যক্তি।

আবার এমনও হতে পারে, আপনি প্রত্যাশা করছেন ওই মানুষটা আপনার জন্য আলাদা কিছু করুক। কিন্তু তিনি আপনার জন্য আলাদা কোনো টান অনুভব করেন না। কিংবা তিনি আপনাকে ভালোবাসলেও আপনার প্রতিক্রিয়া কী হবে, তা ভেবেই নিজেকে সংযত রাখেন। ফলে আপনার প্রত্যাশা পূরণ হয় না। তাই আপনি রেগে যান তাঁর ওপর।

ভুল–বোঝাবুঝি, মতের অমিল
একটা সম্পর্কে জড়ানোর পরও কে কাকে কতটা সময় দিচ্ছেন, কতটা গুরুত্ব দিচ্ছেন, এমন নানা বিষয় নিয়ে ভুল–বোঝাবুঝি হতেই পারে। বিয়ের পরিকল্পনা, দুই পরিবারের চাওয়া-পাওয়া নিয়ে সৃষ্টি হওয়া সংকট, এমনকি বিয়ের পরও সংসার এবং সন্তানের সঙ্গে সম্পর্কিত বহু বিষয় নিয়ে মতের অমিল হতে পারে।

যে সম্পর্কে ভালোবাসা আছে, সেখানে অনেক সময় মামুলি বিষয় নিয়েও অনেক বেশি রাগারাগি হয়। প্রিয়জন কেন আপনাকে ঠিক আপনার মতো করেই বুঝছেন না, এই অনুভূতি প্রবল হয়ে উঠতে পারে অনেক সময়ই। ফলে রাগ হয় অতিরিক্ত।

যেভাবে সামলাবেন নিজেকে
যাঁর ওপরই আপনি রাগ করুন না কেন, নিজেকে থামাতে চেষ্টা করুন ওই মুহূর্তে। লম্বা শ্বাস নিন। লম্বা করে নিশ্বাস ফেলুন। নিজেকে প্রশ্ন করুন, কেন আপনি রাগান্বিত হচ্ছেন। খারাপ লাগার অনুভূতিটা কি কষ্ট থেকে এল, নাকি আপনার কোনো প্রত্যাশা পূরণ হয়নি, তা ভেবে দেখুন।

রাগের মুহূর্তটা কেটে যাওয়ার পর ঠান্ডা মাথায় চিন্তা করুন পুরো বিষয়টা। ঠান্ডা মাথায় কথা বলুন ওই ব্যক্তির সঙ্গে। আপনি রাগ হয়েছেন, এটা না বলে বলতে পারেন আপনি কষ্ট পেয়েছেন, কারণ, আপনি তাঁর কাছ থেকে ভিন্ন আচরণ আশা করেছিলেন। নিজের কষ্টের অনুভূতি প্রকাশ করার সময় অন্যজনকে দোষ দেবেন না, বরং নিজের অনুভূতিটাকেই প্রকাশ করুন।

যদি না-ই বোঝেন নিজেকে
নিজের অনুভূতির বিষয়ে যদি আপনি সত্যিই দ্বিধান্বিত থাকেন, সে ক্ষেত্রে মনোবিদের পরামর্শ নিন। অনুভূতি না বোঝাটা কোনো রোগ নয়। এটা একটা নির্দিষ্ট ধরনের অসুবিধা। পেশাদার ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে এই সমস্যার সমাধান খুব একটা কঠিন নয়। একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে আপনি যদি নিজের সুন্দর কোনো অনুভূতিকে হৃদয় দিয়ে অনুভব করতে পারেন, জীবনটা নিশ্চয়ই আরও সুন্দর হয়ে উঠবে।

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন