শরীরে আয়রন বাড়াতে যেসব খাবার খেতে হবে

নানা ব্যস্ততায় শরীরে ক্লান্তি, অল্প কাজেই হাঁপিয়ে যাওয়া, মাথা ঘোরা বা ত্বকের ফ্যাকাশে ভাব—এমন নানা উপসর্গ আমাদের নিত্যদিনের সঙ্গী। বিশেষজ্ঞের মতে, হয়তো রক্তাল্পতা বা অ্যানিমিয়ার কারণে এমন হতে পারে। আর এর মূলে রয়েছে শরীরে আয়রনের ঘাটতি।

আমাদের শরীরের জন্য একটি অপরিহার্য খনিজ হচ্ছে আয়রন, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সাহায্য করে এবং কোষে কোষে অক্সিজেন পৌঁছে দেয়।

অনেকেরই ধারণা, কেবল মাছ-মাংস বা ডিমেই বুঝি আয়রন থাকে। এই ধারণা একেবারেই সঠিক নয়। পরিকল্পনা করে খাবার খেলে নিরামিষাশীরাও সহজেই আয়রনের ঘাটতি পূরণ করতে পারেন। পুষ্টিবিদদের মতে, এমন ৭টি নিরামিষ খাবার রয়েছে, যেগুলো আয়রনের ভাণ্ডার।

কী সেসব খাবার, চলুন জেনে নেওয়া যাক—

পালং শাক ও সবুজ শাক-সবজি
পালং শাককে আয়রনের অন্যতম সেরা উৎস বলে গণ্য করা হয়। এ ছাড়া বিট, ব্রকলি, কালে-এর মতো গাঢ় সবুজ রঙের শাকেও প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। স্যুপ, তরকারি বা সালাদ হিসেবে এগুলো প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় যোগ করতে পারেন।

মসুর ডাল ও অন্যান্য ডাল
আমাদের রান্নাঘরে ডাল এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। মসুর, মুগ, অড়হর বা রাজমার মতো ডালে কেবল প্রোটিনই নয়, ভরপুর পরিমাণে আয়রনও থাকে। এক বাটি ডাল প্রতিদিনের খাবারে রাখলে আয়রনের ঘাটতি অনেকটাই মেটে।
কাবুলি ছোলা

ছোলা আয়রনের একটি চমৎকার উৎস। তরকারি হিসেবে বা সিদ্ধ করে সালাদে মিশিয়েও কাবুলি ছোলা খাওয়া যায়। এটি শরীরে শক্তি জোগানোর পাশাপাশি হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতেও সাহায্য করে।

সয়াবিন
নিরামিষাশীদের জন্য প্রোটিনের এক দারুণ বিকল্প সয়াবিন। তবে শুধু প্রোটিনই নয়, আয়রনের ঘাটতি মেটাতেও এর জুড়ি মেলা ভার। সয়াবিনের তরকারি বা সয়া চাঙ্কস নিয়মিত খেলে উপকার পাওয়া যায়।

কুমড়ার বীজ ও তিল
অনেকেই কুমড়ার বীজ ফেলে দেন। কিন্তু এই ছোট ছোট বীজগুলোই আয়রন, জিঙ্ক ও ম্যাগনেসিয়ামের মতো খনিজের ভাণ্ডার। হালকা ভেজে নিয়ে সালাদ বা খাবারের ওপর ছড়িয়ে এগুলো খাওয়া যেতে পারে। একইভাবে, সাদা বা কালো তিলও আয়রনের একটি উৎকৃষ্ট উৎস।

খেজুর
মিষ্টি স্বাদের এই ফল আয়রন ও অ্যান্টি-অক্সিডেন্টে ভরপুর। রক্তশূন্যতায় ভুক্তভোগীদের জন্য খেজুর অত্যন্ত উপকারী। প্রতিদিন কয়েকটি খেজুর খেলে শরীরে শক্তি বাড়ে এবং আয়রনের ঘাটতি পূরণ হয়।

বেদানা
বেদানা রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে, এ কথা সবারই জানা। এতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন ও ভিটামিন সি দুই-ই থাকে। ফলে বেদানা খেলে শরীরে আয়রন শোষণও ভালোভাবে হয়।

শুধু খেলেই হবে না, একটি বিষয় মনে রাখা প্রয়োজন, উদ্ভিজ্জ উৎস থেকে পাওয়া আয়রন (নন-হিম আয়রন) শরীরে শোষিত হয় তুলনামূলক ভাবে কম। তাই আয়রন-যুক্ত খাবার খাওয়ার সঙ্গে ভিটামিন সি-যুক্ত খাবার খাওয়া অত্যন্ত জরুরি। কারণ ভিটামিন সি আয়রন শোষণে সাহায্য করে। যেমন, ডালের সঙ্গে লেবুর রস বা পালং শাকের তরকারিতে টমেটো দিলে উপকার বেশি পাওয়া যায়। তাই বলা যায়, নিরামিষ খাবার খেয়েও সুস্থ থাকা এবং রক্তাল্পতার মতো সমস্যাকে দূরে রাখা একেবারেই অসম্ভব নয়। এর জন্য প্রয়োজন শুধু একটু সচেতনতা ও সঠিক খাবারের সমন্বয়। সূত্র : আজকাল

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন