নারীর মর্যাদা ও সম্মানের কথা বলা হয়েছে যে ৭ হাদিসে

ইসলামপূর্ব জাহেলিয়াতের যুগে নারীর অবস্থান ছিল করুণ। অনেক সমাজে কন্যাশিশুকে জীবন্ত কবর দেওয়া হতো, কোথাও আবার স্বামী মারা গেলে স্ত্রীকে পুড়িয়ে ফেলা হতো। নারীরা সম্পত্তির মতো মানবিক মর্যাদা থেকে বঞ্চিত ছিল।

ইসলাম এসে নারীর প্রতি সেই অন্যায় ও অবমাননার অবস্থার অবসান ঘটিয়েছে। কোরআনে স্পষ্টভাবে ঘোষণা করা হয়েছে—পুরুষ ও নারী উভয়ের সৎকর্মের পুরস্কার সমান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তায়ালা বলেন : ‘যা কিছু পুরুষরা অর্জন করবে, তা তাদেরই অংশ হবে; আবার নারীরা যা কিছু উপার্জন করবে, তাদেরই অংশ হবে।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৩২)

হাদিসেও রয়েছে নারীর মর্যাদা, অধিকার ও সম্মান রক্ষার অসংখ্য দিকনির্দেশনা। নিচে তুলে ধরা হলো এমন সাতটি হাদিস

১. নারীর প্রতি সদ্ব্যবহার
রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন—আমি তোমাদের নারীদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করার নির্দেশ দিচ্ছি। (বুখারি ও মুসলিম)

২. নারীর সঙ্গে ভালো আচরণ

একবার রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রশ্ন করা হলো : আমাদের কোনো ব্যক্তির ওপর তার স্ত্রীর কী অধিকার আছে? জবাবে তিনি বললেন:

তুমি যখন আহার করবে, তখন তাকেও আহার করাবে, আর তুমি যখন বস্ত্র পরিধান করবে, তখন তাকেও পরিধান করাবে। আর তার চেহারা তথা মুখমণ্ডলে প্রহার করো না, আর অশ্লীল ভাষায় গালি দিয়ো না এবং ঘরের মধ্যে ছাড়া তার থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ো না। (আবু দাউদ)

৩. নারীর মতামতের গুরুত্ব

ইসলাম নারীর মতামত ও সম্মতিকে বিবাহের পূর্বশর্ত হিসেবে ঘোষণা করেছে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘কোনো কুমারীকে তার মতামত ছাড়া বিবাহ দেওয়া যাবে না।’ (বুখারি, হাদিস : ৫১৩৬)

৪. সতী নারীর সম্মান সবকিছুর উপরে

মহানবী (সা.) বলেছেন,দুনিয়া হচ্ছে উপভোগের বস্তু। আর দুনিয়ার উপভোগের বস্তুসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ হলো পূণ্যবতী স্ত্রী। (সহিহ মুসলিম)

৫. মায়ের বিশেষ মর্যাদা

একবার এক লোক এসে রাসুল (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলো, ‘আমার থেকে সদাচরণ পাওয়ার সর্বাধিক অধিকার কার?’ তিনি বললেন, ‘তোমার মায়ের।’ সে আবারও একই প্রশ্ন করলো। তিনি দ্বিতীয়বারও উত্তরে বললেন, ‘তোমার মায়ের।’ সে আবারও একই প্রশ্ন করলে তিনি তৃতীয়বারের উত্তরেও বললেন, ‘তোমার মায়ের।’ সে আবারও একই প্রশ্ন করলে রাসুল (সা.) চতুর্থবার বললেন, ‘তোমার পিতার।’ (বুখারি)

৬. স্ত্রীকে ভালোবাসা

রাসুল (সা.) বলেছেন, কোনো মুমিন পুরুষ যেন কোনো মুমিন নারীর প্রতি বিদ্বেষ ও ঘৃণা পোষণ না করে। কারণ, যদি তার কোনো একটি স্বভাব তার কাছে অপছন্দ হয়, তবে তার অন্য আরেকটি স্বভাব-চরিত্র তার কাছে পছন্দ হতে পারে। (সহিহ মুসলিম, মুসনাদে আহমাদ)

৭. কন্যাশিশু জান্নাতে যাওয়ার কারণ

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) বলনে, রাসুল (সা.) ইরশাদ করনে, ‘যার ঘরে কন্যা সন্তান জন্মগ্রহণ করলো, অতঃপর সে ওই কন্যাকে কষ্ট দেয়নি, মেয়ের ওপর অসন্তুষ্টও হয়নি এবং পুত্র সন্তানকে তার ওপর প্রধান্য দেয়নি, তাহলে ওই কন্যার কারণে আল্লাহ তায়ালা তাকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। ’ (মুসনাদে আহমদ)

সংবাদটি ভালো লাগলে শেয়ার করুন