ম্যাজিক বিড়াল : অফুরন্ত সম্ভাবনার হাতছানি
দৈনিক সিলেট ডট কম
লস্কর হাসিনা পারভিন:‘ম্যাজিক বিড়াল’ মুনশি আলিমের প্রথম শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ। গল্পগুলোতে তিনি নিজের মতো করে শিল্পের ছাঁচ ঢেলেছেন। রঙ মিস্ত্রিরা যেমন রঙের কৌটো নিয়ে ঘুরেন ঠিক তেমনি মুনশি আলিমও যেন সম্ভাবনাময় স্বপ্ন নিয়ে ঘুরেন। অবলীলায় সে স্বপ্নের প্রলেপ চলে তাঁর গল্পের গভীর থেকে গভীরে।
এতে গল্পের সংখ্যা রয়েছে মোট চারটি। ভাষায় গল্পগুলো লেখা হয়েছে খুবই সাবলীল। ঢাকার ঘাস ফড়িং থেকে ২০১৬ সালে তাঁর ম্যাজিক বিড়াল বইটি প্রকাশিত হয়। টিটন কান্তি দাশের চকচকে প্রচ্ছদ বইটিকে করে তুলেছে বেশ আকর্ষণীয়।
মূলত কবিতা দিয়েই গল্পকারের সাহিত্যে হাতেখড়ি। নিষ্ঠাবান লেখকের মতো তাঁর লেখনীতেও সে ছোঁয়া মেলে। সাহিত্যের ছোটো কাগজ ‘শব্দখেয়া’ সম্পাদনা থেকে শুরু করে বর্তমানে সব্যসাচীর মতো চষে বেড়াচ্ছেন সাহিত্যের সকল শাখায়। কবিতা, গল্প, গান, ভ্রমণ কাহিনি, ছোটোগল্প, শিশুতোষ রচনা, ছড়া, রম্যরচনা, প্রবন্ধ, সমালোচনা, নাটক, প্রহসন প্রভৃতি সকল শাখাতেই তাঁর অবাধ বিচরণ লক্ষণীয়।
সাহিত্যের ছোটোকাগজ, জাতীয় দৈনিকের সাহিত্য পাতা এবং আন্তর্জাতিক বাংলা ভাষা-ভাষী পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে তাঁর অসংখ্য কবিতা, মৌলিক শিশুতোষ গল্প ও রম্যরচনা। অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, যুক্তরাজ্য, যুক্তরাষ্ট্র, কুয়েত, জাপান, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের বাংলাভাষী পত্রিকায় তাঁর গল্প ও কবিতা শুধু স্থানই পায়নি ভূয়সী প্রশংসিতও হয়েছে। এরই মধ্যে বাংলা সাহিত্যের একজন বস্তুনিষ্ঠ গল্পকার হিসেবে নিজেকে তিনি প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
‘ম্যাজিক বিড়াল’ গল্পগ্রন্থের গল্পগুলো হলো : ম্যাজিক বিড়াল, সর্দার ব্যাঙ, টিকটিকি ও মানিব্যাগ, লোভী কুমির ও গেছো ব্যাঙ প্রভৃতি। তাঁর উল্লিখিত সবগুলো গল্পই জাতীয় ও স্থানীয় পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। শিশুতোষ গল্পে যা থাকা অত্যাবশ্যক তার সকল গুণই এখানে অক্ষুণœ রয়েছে বলে আমি মনে করি। বিশেষ করে ভাষার প্রাঞ্জলতা ও সরল বাক্যের ব্যবহার ‘ম্যাজিক বিড়াল’ বইটিকে দিয়েছে ভিন্নধর্মী ব্যঞ্জনা।
তাঁর এই শিশুতোষ গল্পগ্রন্থ পড়ে শিশুরা একদিকে যেমন আনন্দ পাবে তেমনি তাদের চিন্তার জগতও হবে শানিত, বুদ্ধিদীপ্ত। বিশেষ করে কৌতূহলের মাত্রাকে আরও ঘন থেকে ঘনতর করে তুলবে। প্রমথ চৌধুরী তাঁর ‘সাহিত্যে খেলা’ প্রবন্ধে বলেন, “সাহিত্যের কাজ হচ্ছে খেলাচ্ছলে শিক্ষাদান করা”। গল্পকার মুনশি আলিম তাঁর ‘ম্যাজিক বিড়াল’ গল্পগ্রন্থটিকেও যেনো সে আঙ্গিকেই সাজিয়েছেন। অর্থাৎ খেলতে খেলতেই শিশুরা তাঁর ‘ম্যাজিক বিড়াল’ গল্পগ্রন্থ থেকে নৈতিক শিক্ষা গ্রহণ করতে পারবে।
জানা যায়, গত একুশে বইমেলায় ঘাস ফড়িং প্রকাশনীর বেস্ট সেলারের তালিকায় ছিলো মুনশি আলিমের ‘ম্যাজিক বিড়াল’ গ্রল্পগ্রন্থটি। ভাব, ভাষা, মানে-গুণে, প্রকরণে, শিক্ষণীয় উপমায় গ্রন্থটি সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে। ‘ম্যাজিক বিড়াল’ গল্পগ্রন্থে নিঃসন্দেহে মুনশি আলিমের মুনশিয়ানার ছাপ রয়েছে; যা পাঠক পড়ামাত্র অনুধাবন করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস।