মৌলভীবাজারে বন্যায় প্রায় ১শত ১৩ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকার ক্ষতি
প্রকাশিত হয়েছে : ২০ এপ্রিল ২০১৭, ৫:১০ অপরাহ্ণ
মৌলভীবাজারে বিভিন্ন হাওরের বোরো ধান পানিতে তলিয়ে যাওয়ার ফলে জেলায় বোরো ধানের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়ে দাড়িয়েছে ১শত ১৩ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। যার ফলে দূর্ভোগ বাড়ছে এলাকার সাধারণ মানুষের মধ্যে। কৃষকদের মধ্যে বিরাজ করছে হাহাকার। ৬ মাসের ঘামঝরা পরিশ্রমের ফলানো বোরো ধানের একমুটু ঘরে আনতে পারেননি এ জেলার অনেক কৃষক। বোরো চাষীদের স্বপ্ন এখন দুঃস্বপ্নে পরিণত হয়েছে।
অতি বৃষ্টি ও পাহাড়ী ঢলে জেলার হাকালুকি হাওর, হাইল হাওর, সোনাদিঘি, কাওয়াদিঘির হাওর ও কইরকোনা বিলসহ বিভিন্ন এলাকায় ১০ হাজার ২শ ৭৬ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে গেছে।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা যায়, সদর উপজেলার কাঞ্জার হাওর, মানিক হাওর, হাইল হাওর ও কাউয়াদিঘি হাওর পানির নিচে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ১০৪২৫ হেক্টের জমির মধ্যে সম্পূর্ণ বিনষ্ট হয়ে গেছে ৩৪৮ হেক্টর, শ্রীমঙ্গল উপজেলার হাইল হাওর পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৯৫৬৬ হেক্টের জমির মধ্যে ২৫০ হেক্টর, রাজনগর উপজেলার সোনাদিঘি, কাইয়াদিঘি ও সিঙ্গাহুরা হাওর পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ১৩২০০ হেক্টের জমির মধ্যে ৯৮৭ হেক্টর, কমলগঞ্জ উপজেলার কেওলার হাওর পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৩৮৭৫ হেক্টের জমির মধ্যে ১০৯ হেক্টর, কুলাউড়া উপজেলার হাকালুকি হাওর, ডলডল হাওর, রফিনগর হাওর, খাদিমপাড়া হাওর, আলিয়ার হাওর, বহিষমারা বলি, মেঘাবিল, হাওর বিল, কালাপানির বিল, পালের বিল, হাগুয়া বিল ও লাউয়র বিলসহ অন্যান্য বিল পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৬৫৫০ হেক্টের জমির মধ্যে ৩৩৯৬ হেক্টর, বড়লেখা উপজেলার হাকালুকি হাওর, মালাম বিল ও হুয়ালা বলি পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৪৩৪০ হেক্টের জমির মধ্যে ১৯৭০ হেক্টর, জুড়ী উপজেলা হাকালুকি হাওর ও কইরকোনা বিল পানির নিছে তলিয়ে গিয়ে আবাদকৃত ৫৪৭০ হেক্টের জমির মধ্যে ৩২১৬ হেক্টর।
মৌলভীবাজার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মো. শাহজাহান বলেন, অতিবৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে বোরো চাষীদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সরকারিভাবে তাদের সহযোগিতার চেষ্টা চলছে। এ ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার জন্য আগামী আমন মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমি চাষাবাদ করার পরিকল্পনা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
উল্লেখ্য কৃষি সম্প্রসারণ কর্তাদের কর্তৃক বোরো ফসলের ক্ষতির অসম্পূর্ণ হিসাব দেখালেও ভুমি খেকোদের দখলকৃত পাহাড়ি সরু করে ফেলা ছড়ার পানিতে অকাল বন্যায় ডুবে যাওয়া গ্রামাঞ্চলের রাস্তা ঘাট ভেঙ্গে সহস্রাধিক পুকুর ও ফিসারির মাছ বেড়িয়ে যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তার কোন হিসেব এখানে নেই,তাছাড়া অনেক স্কুল মাদ্রাসার গাইডওয়াল ও ক্ষতি গ্রস্থ হয়েছে হিসেব নিকেশ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া জরুরী বলে দাবী করেছেন সচেতন মহল।