হবিগঞ্জ–বানিয়াচং আঞ্চলিক সড়কের রত্না নদীর ওপর নির্মিত বেইলি সেতুর দুটি পাটাতন ভেঙে পড়েছে। শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) সকালে অতিরিক্ত পাথরবোঝাই একটি ট্রাক সেতুর ওপর উঠতেই পাটাতন ভেঙে যায়। এতে ট্রাকটি সেতুর মাঝামাঝি আটকে পড়ে এবং হবিগঞ্জ জেলা সদরের সঙ্গে বানিয়াচং ও আজমিরীগঞ্জ উপজেলার সরাসরি সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। চরম ভোগান্তিতে পড়েন দুই উপজেলার অর্ধশতাধিক গ্রামের বাসিন্দা।
এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন ধরেই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকা সেতুটি আগেই ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে চিহ্নিত ছিল। সেতুর পাশে সতর্কতামূলক সাইনবোর্ডও টানানো ছিল। সকালে জাফলং থেকে বানিয়াচংগামী পাথরবোঝাই ট্রাকটি সেতুর ওপর উঠতেই প্রচণ্ড শব্দ হয় এবং মুহূর্তের মধ্যে দুটি পাটাতন নিচে নেমে যায়। ট্রাকের পেছনের দুটি চাকা ঝুলে থাকায় বড় ধরনের দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পাওয়া গেছে। সেতুটি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে দুই পাশে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয় এবং সাধারণ যাত্রী, শিক্ষার্থী ও রোগীরা বিপাকে পড়েন।
সড়ক যোগাযোগ বন্ধ থাকায় অস্থায়ীভাবে রত্না নদীতে ফেরি চলাচল শুরু করেছে স্থানীয়রা। একটি বাইসাইকেল পারাপারে ৫০ টাকা এবং পণ্যবাহী যান ও মালামালের ক্ষেত্রে আকার–ওজন অনুযায়ী ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। এতে সময় ও ব্যয় দুটোই বেড়েছে। সিএনজি অটোরিকশার যাত্রীরা দুই ধাপে ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে পৌঁছাচ্ছেন।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী আজমিরীগঞ্জের শিবপাশা গ্রামের তাবিদুর রহমান বলেন, “আমি বাড়ি ফিরছিলাম। সেতুর ওপর ট্রাক উঠতেই জোরে শব্দ হয়। দেখি পাটাতন ভেঙে ট্রাকের পেছনের চাকা নিচে ঝুলে আছে। ভাগ্য ভালো ট্রাকটি পুরোপুরি নিচে পড়েনি।”
বানিয়াচং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাহমুদা বেগম সাথী বলেন, “ঘটনার পরপরই বিষয়টি জানতে পেরে সংশ্লিষ্ট বিভাগকে জানানো হয়েছে। সড়ক ও জনপথ বিভাগ মেরামতকাজ শুরু করেছে। আশা করছি আজকের মধ্যেই (শুক্রবার) সেতুটি চলাচলের উপযোগী করা সম্ভব হবে।”
হবিগঞ্জ সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, আটকে থাকা ট্রাক সরাতে রেকার আনা হয়েছে। সন্ধ্যার মধ্যে ট্রাকটি আনলোড ও অপসারণ করা সম্ভব হবে বলে আশা করছেন তিনি। তিনি আরও বলেন, “রাতে মেরামতকাজ চলবে। সব ঠিকঠাক থাকলে শনিবার (৬ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই যান চলাচল স্বাভাবিক হতে পারে।”