পাপাচার থেকে বিরত থাকার জন্য এর নিকটবর্তী হওয়া থেকেও বিরত থাকা। ইসলাম চায় প্রতিটি মানুষ পাপাচার থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখুক। এই উদ্দেশ্যে নির্দেশ দেয় যে পাপাচার থেকে বাঁচতে হলে কখনো এর সীমান্তের কাছেও যাবে না। পাপাচার থেকে বাঁচার এটি হলো সবচেয়ে মোক্ষম উপায়।
আমরা জানি, আদম ও হাওয়া (আ.)-কে বেহেশতে নির্দিষ্ট একটি বৃক্ষের ফল খেতে নিষেধ করা হয়েছিল। কিন্তু নির্দেশ দিতে গিয়ে বলা হলো, ‘তোমরা উভয়ে এই বৃক্ষের নিকটবর্তীও হয়ো না।’
(সুরা : আল বাকারা, আয়াত : ৩৫)
পাপাচারের কাছে গমন মানুষকে পাপাচারে নিপতিত হতে উদ্বুদ্ধ করে। নবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে রাখাল সংরক্ষিত চারণক্ষেত্রের সীমান্তে বকরি চরায়, খুবই আশঙ্কা আছে বকরি নিষিদ্ধ অঞ্চলে ঢুকে পড়বে।
শোনো, আল্লাহর সংরক্ষিত নিষিদ্ধ এলাকা হলো, তৎকর্তৃক হারাম বিষয়সমূহ।’ (ইমাম বুখারি; ইমাম মুসলিম, আস-সহিহ : ১৫৯৯)
নিষিদ্ধ বিষয়ের প্রতি আকর্ষণ প্রবৃত্তির অন্যতম প্রবণতা। এগুলো সাধারণত মনোহর মনে হয়। চোখে বিভ্রম সৃষ্টি হয়।
পতঙ্গ যেমন আগুনে নিজেই লাফিয়ে লাফিয়ে পড়ে, পরিণতির কথা ভাবে না, মানুষের অবস্থাও তেমনি। পাপাচার তার চোখে শোভনীয় লাগে, পরিণতি ভুলে যায়, নিজেই তাতে ঝাঁপ দেয়। সুতরাং এ থেকে বাঁচতে হলে এই ব্যবস্থার চেয়ে উত্তম ব্যবস্থা আর কিছু হতে পারে না যে ‘এর কাছেও যেয়ো না। প্রলুব্ধ হওয়ার কারণসমূহ থেকেও দূরে থাকো।’ কোরআন মাজিদে আমরা দেখতে পাই, ব্যভিচার থেকে বিরত রাখার জন্য আল্লাহপাক এর কাছে যেতেও নিষেধ করেছেন, ‘ব্যভিচারের কাছেও যেয়ো না। ’(সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩২)
আমরা দেখি, ব্যভিচার চট করে সংঘটিত হয় না। এর আগে দর্শন, কথন, স্পর্শকরণ—অনেক আবেদনজনিত দরজা অতিক্রম করে মানুষ কুকর্মে লিপ্ত হয়। সুতরাং এ থেকে বাঁচতে হলে এর প্রতি আবেদন সৃষ্টি করে সেসব বিষয় থেকেও দূরে থাকতে হবে। এটা একটা প্রাকৃতিক ব্যবস্থা। এভাবে অন্য পাপাচারের বিষয়গুলোও আমরা দেখতে পারি। প্রাথমিক আবেদনমূলক বিষয়গুলোই মূলকর্মে ধাবিত করে। সুতরাং সেগুলো থেকেও দূরে থাকা পাপাচার থেকে বাঁচার সহজ ও প্রাকৃতিক উপায় সন্দেহ নেই।
