প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় লিডিংইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগের সাফল্য

দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডটকম:নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয় এ অনুষ্ঠিত প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে লিডিং ইউনিভার্সিটির সিএসই বিভাগ
প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট হচ্ছে কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এর সাথে সম্পর্কযুক্ত সবচাইতে মর্যাদাপূর্ণ প্রতিযোগিতা। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ভাল করা প্রোগ্রামাররাই এক সময় গুগল, মাইক্রসফট, ফেইসবুক ইত্যাদি কোম্পানিগুলোতে কাজ করে । কম্পিউটার প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় চলমান সফলতার জন্য লিডিং ইউনিভার্সিটি সিএসই বিভাগ স্বনামধন্য । কম্পিউটার প্রোগ্রামিং এ লিডিং ইউনিভার্সিটি শুধু সিলেটেই নয় বরং বাংলাদেশের সবকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে এ বিশ্ববিদ্যালয়কে অন্যতম সেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গণ্য করা হয় ।
সাম্প্রতিক সময়ের লিডিং ইউনিভার্সিটির কিছু সফলতা তুলে ধরা হলো –
এনডিইউবি প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় প্রথমঃ
নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ গত নভেম্বর মাসে একটি আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করে। সাস্ট, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউ.আই.ইউ, এম.আই.এস.টি, এই.উ.এস.টি, মেট্রোপোলিটান বিশ্ববিদ্যালয়সহ বাংলাদেশের অন্যান্য সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়কে হারিয়ে এতে প্রথম স্থানলাভ করে লিডিং ইউনিভার্সিটি।
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয়ঃ
চলতি মাসে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় একটি আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করে । লিডিং ইউনিভার্সিটি সেই প্রতিযোগিতায় দ্বিতীয় স্থান লাভ করে। শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এই প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অর্জন করে।
বরেন্দ ্রবিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয় অনুযায়ী তৃতীয়ঃ
বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় লিডিং ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় এর মধ্যে তৃতীয় হয়। এই প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশ বিভিন্ন সরকারী ও বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় এর ৫৯টি দল অংশগ্রহণ করে। এই প্রতিযোগিতায় রুয়েট প্রথম স্থান লাভ করে । এই প্রতিযোগিতায় ডি.ইউ, রুয়েট, এম.আই.এস.টি, আই.ইউ.টি, আর.ইউ, সহবাংলাদেশের অন্যান ্যশীর্ষ বিশ্ববিদ্যালয় অংশগ্রহণ করে।
গত তিন বছর যাবত সিলেট বিভাগের প্রথম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
গত তিন বছরে লিডিং ইউনিভার্সিটি জাতীয় পর্যায়ে ২৫টির ও বেশি প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে। প্রত্যেকটি প্রতিযোগিতায় লিডিং ইউনিভার্সিটি, সিলেট বিভাগের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম হয় এবং সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে দ্বিতীয় হয়।
আন্তর্জাতিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় সাফল্যঃ
লিডিং ইউনিভার্সিটি বরাবর এসিএমআইসিপিসি ঢাকা আঞ্চলিক প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ভাল করে যাচ্ছে। ২০১৩ সালের আইসিপিসিতে লিডিং ইউনিভার্সিটি এর ২টি দল ১২০টি দলের মধ্যে শীর্ষ ২০ এ যায়গা করে নেয় যা সিলেট বিভাগে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পর সেরা ফলাফল । এছাড়াও লিডিং ইউনিভার্সিটি ২০১৬ এবং ২০১৭ সালের আইসিপিসিতে শীর্ষ ৬ষ্ঠ স্থান দখল করে।
ন্যাশনাল কলেজিয়েট প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় সাফল্যঃ
সকল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে এনপিসি একটি মর্যাদাপুর্ন প্রতিযোগিতা, ২০১৬ সালে লিডিং ইউনিভার্সিটি ১২০টি দলের মধ্যে ১৫তম হয় যা, লিডিং ইউনিভার্সিটিকে সকল বিশ্ববিদ্যালয়গুলের মধ্যে ৬ষ্ঠ এবং বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে ২য় স্থান অর্জন করে।
ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় শীর্ষ ১০ এঃ
ছেলেদের পাশাপাশি লিডিং ইউনিভার্সিটি এর মেয়ে প্রোগ্রামাররাও ভালফলাফল করে যাচ্ছে। এনজিপিসি ২০১৭ এ লিডিং ইউনিভার্সিটি এর টিম ১১৭টি টিমের মধ্যে ১০ম স্থান অর্জন করে।
ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং ক্যাম্পে আমন্ত্রণঃ
বাংলাদেশ ওপেন সোর্সনেট ওয়াকর্ কর্তৃক আয়োজিত ন্যাশনাল গার্লস প্রোগ্রামিং ক্যাম্পে বাংলাদেশের ১০টির মত বিশ্ববিদ্যালয়কে আমন্ত্রণ জানানো হয় এবং লিডিং ইউনিভার্সিটি ছিল তাদের মধ্যে একটি।
সাম্প্রতিক ২টি প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় দেশ সেরা বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ঃ
নটরডেম বিশ্ববিদ্যালয় ও কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক আয়োজিত প্রতিযোগিতাগুলোতে লিডিং ইউনিভার্সিটি ব্র্যাক, ইস্টওয়েস্ট, এ.ইউ.এস.টি, ইউ.আই.ইউ, বি.ইউ.বি.টি, এম.ইউ, এন.ই.উ.বি, ছাড়াও অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের টিমগুলোকে হারিয়ে ১ম বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে স্বিকৃতি লাভ করে।
ঢাকা বাহিরে বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে প্রথমঃ
বিগত কয়েক বছরে লিডিং ইউনিভার্সিটি ২০টির ও বেশী প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় ঢাকার বাহিরের বেসরকারী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম হওয়ার গৌরব অর্জন করে।
কোডশেফ এ সফলতাঃ
লিডিং ইউনিভার্সিটির ছাত্রছাত্রীরা কোডশেফ এর বিভিন্ন প্রতিযোগিতাগুলোতে নিয়মিত অংশগ্রহণ করে। এই বছরে লিডিং ইউনিভার্সিটি থেকে নিয়মিত অংশগ্রহণ কারীর সংখ্যা দেশের অন্যান্য সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনায় বেশী।
ওয়ার্কশপঃ
লিডিং ইউনিভার্সিটি সিএস ই বিভাগ প্রতি সপ্তাহে আনুষ্ঠানিক ভাবে দুটি প্রোগ্রামিং ওয়ার্কশপ আয়োজন করে। এই ওয়ার্কশপগুলোতে অংশগ্রহণ করার জন্য ছাত্রছাত্রীদের কোন ফি প্রদান করতে হয় না। স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রীরাও ফি ছাড়া এতে অংশগ্রহণ করতে পারে। বর্তমানে লিডিং ইউনিভার্সিটি এর সিএস ই বিভাগের খন্ডকালীণ শিক্ষক।
এবং আইইউটি এর সাবেক প্রোগ্রামিং কোচ মোঃ তাহমিদ রহমান লস্কর লিডিং ইউনিভার্সিটি এর প্রোগ্রামিং এর হেড কোচ হিসেবে এই ওয়ার্কশপগুলো পরিচালনা করে থাকেন।
দেশের শীর্ষ প্রোগ্রামার কর্তৃক ওয়ার্কশপঃ
নিয়মিত ওয়ার্কশপ ছাড়াও লিডিং ইউনিভার্সিটি কিছু বিশেষ ওয়ার্কশপ এর আয়োজন করে থাকে। এই বছর দুটি ওয়ার্কশপ এর আয়োজন করা হয়, যা পরিচালনা করেন, আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালিস্ট মিঃ কাজী নাইম এবং ন্যাশনাল প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন মিঃ আব্দুল্লাহ মতিন খান জার্জিস।
বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক খরচ প্রদানঃ
দেশের বিভিন্ন প্রাšে — প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ছাত্রছাত্রীদের বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক রেজিস্ট্রেশন ফি, যাতায়াত খরচ, খাবারসহ অন্যান্য সকল খরচ প্রদান করা হয়। সাম্প্রতিক প্রতিযোগিতা গুলোতে ভাল করার জন্য এটি একটি অন্যতম প্রধান কারণ।
আন্তঃ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতাঃ
লিডিং ইউনিভার্সিটি প্রতি সেমিস্টারে কিছু প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতার আয়োজন করে যা ছাত্রছাত্রীদেরকে উৎসাহী করে। এই প্রতিযোগিতাগুলো ন্যাশনাল প্রোগ্রামিং কন্টেস্ট প্লাটফর্ম “ ঞড়ঢ়য” এ আয়োজন করা হয়।
লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শিক্ষার্থীদের তাদের জ্ঞানকে আরও শাণিত করতে বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করতে হবে। এ ধরনে প্রতিযোগীতা পরস্পরের মধ্যে সৌহার্দপূর্ন সম্পর্ক গড়ে তুলে এবং মেধার বিকাশ ঘটায়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্নকে বাস্তবে রুপ দিতে এবং বর্তমান সরকারের ভিশনকে সামনে রেখে আগামী ভবিষ্যতের ডিজিটাল অর্থনীতি বাস্তবায়নে আজকের এই তরুন সমাজের ভুমিকা অরিশীম।
সি.এস.ইবিভাগের বিভাগীয় প্রধান (ভারপ্রাপ্ত) মোঃ আসাদুজ্জামান খান বলেন, সি.এস.ই ডিপার্টমেন্ট সব সময় ফ্যাকাল্টিতে ভালো প্রোগ্রামিং স্কিল আছে এমন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে থাকে। সি.এস.ই ডিপার্টমেন্ট এর সাবেক শিক্ষক মুস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল (সাবেক এসিএম আইসিপিসি ওয়ার্ল্ড ফাইনালিস্ট এবং বর্তমানে গুগলের সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার) এর হাত ধরে মূলত প্রোগ্রামিং কালচার এর শুরু। মুস্তাফিজুর রহমান ফয়সাল এর পাশাপাশি সি.এস.ই ডিপার্টমেন্ট এর সহকারী অধ্যাপক আরিফ আহমেদ (বর্তমানে সাস্টে পি.এইচ.ডি অধ্যয়নরত) এর প্রশিক্ষনে লিডিং ইউনিভার্সিটি বিগত কয়েক বছরে বেশ কিছু সাফল্য নিয়ে আসে। আমি আশা করি, নিকট ভবিষ্যতে লিডিং ইউনিভার্সিটিও এসিএম আইসিপিসি এর ওয়ার্ল্ড ফাইনাল এ যাবে এবং আমাদের প্রোগ্রামাররাও গুগল, মাইক্রসফট এ চাকরি করবে।
লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. কামরুজ্জামান চৌধুরী, সিএসই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, শিক্ষকবৃন্দ ও কম্পিউটার ক্লাবের সদস্যবৃন্দ অংশগ্রহণকারীদেকে তাদের এ কৃতিত্বের জন্য ধন্যবাদ জানান।