বনি কাপুরকে দুবাই ত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
দৈনিক সিলেট ডট কম
দৈনিকসিলেটডেস্ক:বলিউড সুপারস্টার শ্রীদেবীর মৃত্যুতে তোলপাড় চলছে ভারত তথা তার কোটি কোটি ভক্ত হৃদয়ে। তার মধ্যেই সোমবার যেন বোমার মতো আরো একটি খবর ছড়িয়ে পড়ে। তাতে বলা হয়, শ্রীদেবী হার্ট এটাকে মারা যান নি। তিনি মারা গিয়েছেন হোটেল কক্ষে তার বাথটাবে ডুবে। তার শরীরে এলকোহলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ফলে তার মৃত্যুকে ঘিরে সৃষ্টি হচ্ছে প্রশ্নের পর প্রশ্ন।
দুবাই পুলিশ শুরু করেছে তদন্ত। তারা শ্রীদেবীর ফোন কল লিস্ট যাচাই করে দেখছে। কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া দুবাই ছাড়তে নিষেধাজ্ঞা দেয়া হয়েছে তার স্বামী ও পরিচালক বনি কাপুরকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের খবর ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত হলেও খালিজ টাইমস তা অস্বীকার করছে। তারা বলছে, বনি কাপুরকে রোববারের পর আর জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় নি। ওদিকে শ্রীদেবীর মৃত্যুকে ‘অস্বাভাবিক’ ধরে তদন্ত শুরু হওয়ায় তার মৃতদেহ এখনই ভারতে আনার অনুমতি দিচ্ছে না দুবাই কর্তৃপক্ষ। তার মৃতদেহ রাখা হয়েছে আল কুসেইস মর্গে। অনলাইন টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, শ্রীদেবী যে হোটেলে ছিলেন সেই হোটেলের স্টাফ ও শ্রীদেবীর স্বামীসহ তার সঙ্গীদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুবাইয়ের তদন্তকারীরা। দুবাইয়ের জুমেইরা এমিরেটস টাওয়ারের ২২০১ নম্বর কক্ষে বাথটাবে ডুবে শনিবার দিবাগত রাতে মারা যান শ্রীদেবী। তার শরীরে এলকোহলের উপস্থিতি পাওয়া গেছে। ফরেনসিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, এলকোহল পান করায় বাথটাবের ভিতর অচেতন হয়ে পড়েছিলেন তিনি। সে অবস্থায়ই মারা যান। ওদিকে খবর রটে যায় তিনি হার্ট এটাকে মারা গেছেন। ফলে এর মধ্যে রহস্যের গন্ধ খুঁজতে থাকেন গোয়েন্দারা। আজ মঙ্গলবার এ সংক্রান্ত তদন্ত শেষ করার কথা তাদের। এরপরই শ্রীদেবীর মৃতদেহে ভারতে আনার ক্লিয়ারেন্স দেয়ার কথা। দুবাই পুলিশের সূত্রগুলো বলেছেন, পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট দেখার পরে আমাদের মধ্যে প্রশ্নের সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের মনে হয়েছে এ বিষয়ে নতুন করে তদন্তের প্রয়োজন। এই তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তার মৃতদেহ রাখা হবে আল কুসাইস মর্গে। ওদিকে তিনি হোটেলের যে কক্ষে ছিলেন তা সিল করে দিয়েছে পুলিশ। উল্লেখ্য, দুবাইয়ের আইন অনুযায়ী, হাসপাতালের বাইরে কেউ মারা গেলে সে বিষয়ে পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হওয়ার নিয়ম আছে, যদি সেটা স্বাভাবিক মৃত্যুও হয়। সূত্রের উল্লেখ করে টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, এ ঘটনার বিভিন্ন বিষয়ে দুবাই ডিএক্সবি’তে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে বনি কাপুরকে। জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে মহিত মারওয়াহ’র পরিবারকেও। এ ছাড়া জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে হোটেল স্টাফদেরও। দুবাইয়ের সূত্র উল্লেখ করে টাইমস অব ইন্ডিয়া লিখেছে, দুবাই পাবলিক প্রসিকিউশন বলেছে প্রয়োজন হলে তারা শ্রীদেবীর মৃতদেহের আরো একবার পোস্ট মর্টেম করতে বলবে। ওদিকে শ্রীদেবী ভারতে যেসব চিকিৎসা নিয়েছিলেন তার রেকর্ডও চাওয়া হয়েছে। দুবাইয়ের প্রসিকিউটরসের অফিস জানতে চায়, এর আগে কি সব চিকিৎসা নিয়েছিলেন শ্রীদেবী। তার কি সার্জারি হয়েছিল। দুবাইয়ের নিয়ম অনুযায়ী, প্রথমেই তার মৃত্যু সনদ লেখা হয়েছিল আরবীতে। পরে এর ইংরেজি সত্যায়িত কপি সরবরাহ করা হয়। ওদিকে বনি কাপুরের মুম্বইয়ের অফিস থেকে বলা হয়েছে, শ্রীদেবীর মৃতদেহ আজ মঙ্গলবার ভারতে আনা হতে পারে। এর আগে সোমবার রিলায়েন্স গ্রুপের একটি ১৩ আসনের জেট বিমান দুবাই বিমানবন্দরে প্রস্তুত রাখা হয় মৃতদেহ আনার জন্য। ওইদিনই বিকাল সাড়ে চারটায় মৃতদেহ নিয়ে বিমানটির উড্ডয়নের কথা ছিল। কিন্তু প্রসিকিউশন অফিস শেষ পর্যন্ত অনুমতি না দেয়ায় তা আর হয় নি। দুবাইয়ে সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যার পরে পুলিশ বলে, পোস্ট মর্টেম বিশ্লেষণ সম্পন্ন হওয়ার পর দুবাই পুলিশ জানাচ্ছে যে, ভারতীয় অভিনেত্রী শ্রীদেবীর মৃত্যু হয়েছে তার এপার্টমেন্টে বাথটাবে ডুবে। এ সময় তিনি অচেতন ছিলেন। পুলিশ এ মামলাটি দুবাই পাবলিক প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করেছে। তারাই এমন মামলার আইনগত ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। পরে ওই রাতেই সংযুক্ত আরব আমিরাতে ভারতীয় রাষ্ট্রদূত একটি টুইট করেন। তাতে তিনি বলেন, এমন আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগে দুই থেকে তিন দিন। তিনি আরো নিশ্চিত করেন, শ্রীদেবীর পরিবারের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে দূতাবাস, যাতে তার মৃতদেহ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ভারতে পাঠানো যায়।