জরায়ুমুখের ক্যানসার নিরূপণ ও চিকিৎসা
দৈনিক সিলেট ডট কম
অধ্যাপক ডা. মো. ইয়াকুব আলী: জরায়ুর নিচের সরু অংশটিই জরায়ুমুখ। এটি যোনিনালির ওপরের অংশ থেকে শুরু হয়ে জরায়ুর মাঝামাঝি পর্যন্ত বিস্তৃত। দৈর্ঘ্য হচ্ছে জরায়ুর দৈর্ঘ্যরে তিনভাগের এক ভাগ। সাধারণত সব কোষ একট সুবিন্যস্ত পদ্ধতিতে বিভাজন বা পুনরুৎপাদন করে এবং কোষকলার স্বাভাবিক বৃদ্ধি ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করে। অবিন্যস্ত ও অনিয়ন্ত্রিত কোষ বিভাজনের ফলে অস্বাভাবিক বৃদ্ধিপ্রাপ্ত কোষকলার পি-ের নাম টিউমার। দুটি টিউমারের মধ্যে ম্যালিগন্যান্ট টিউমারই হলো ক্যানসার। জরায়ুমুখের দুষ্ট টিউমারকে বলে জরায়ুমুখের ক্যানসার। জরায়ুমুখের ক্যানসারের সম্ভাব্য কারণগুলো হলো ১৮ বছর বয়সের নিচে বিয়ে বা যৌনমিলন। বিভিন্ন সঙ্গীর সঙ্গে যৌনমিলন বা গণিকাবৃত্তি। অপরিচ্ছন্ন জননেন্দ্রিয়। জননেন্দ্রিয়ের সংক্রামক রোগ, যেমন হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস-টাইপ দুই এবং হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস। কুড়ি বছর বয়সের নিচে গর্ভধারণ ও মা হওয়া। ধূমপান। নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থা। রোগের লক্ষণগুলো হলো
অনিয়মিত রক্তস্রাব হওয়া। ঋতু বন্ধের এক বছর পরেও রক্তস্রাব হওয়া। যৌনসঙ্গমের পর রক্তস্রাব হওযা। যোনিপথে অধিক পরিমাণ বাদামি অথবা রক্তমাখা স্রাবের আধিক্য। দুর্গন্ধযুক্ত সাদা যোনিস্রাব। মনে রাখতে হবে, এসব লক্ষণের কোনোটাই ক্যানসার নিশ্চিতকরণের চিহ্ন নয়, তবে এসব গুরুত্বপূর্ণ চিহ্ন দেখে চিকিৎসকরা যোনিদেশ পরীক্ষা করেন। প্রথমে খালি হাতে যোনিদেশের নানা অংশ পরীক্ষা করেন। তারপর স্পেকুলাম নামক যন্ত্রের সাহায্যে যোনিপথ উন্মুক্ত করে যোনিপথ ও জরায়ুমুখের বিভিন্ন অংশ পরীক্ষা করেন। এ সময় প্যাপ স্মিয়ার নিয়ে পরীক্ষাও করা হয়। যখন প্যাপ পরীক্ষায় অস্বাভাবিক কোষ ধরা পড়ে, তখন বিশেষজ্ঞের মতামতের প্রয়োজন পড়ে। এ রোগ নির্ণয়ে কলপোস্কোপ গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা। এ ছাড়া বায়োপসিরও প্রয়োজন দেখা দেয়। বায়োপসির মাধ্যমে যখন জরায়ুমুখের ক্যানসার ধরা পড়ে, তখন বিশেষজ্ঞরা সর্বাপেক্ষা ভালো চিকিৎসার জন্য কতগুলো নীতি বিবেচনা করেন। এগুলো হচ্ছে বয়স, পুনরায় সন্তান ধারণ করতে চান কিনা এবং রোগের বিস্তৃৃতি। তবে রোগের শুরুতেই চিকিৎসা নিলে রোগ নিরাময় সহজ হয়।
লেখক : অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান, মেডিক্যাল অনকোলজি বিভাগ, শহীদ সোহ্রাওয়ার্দী মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতাল, শের-ই-বাংলানগর, ঢাকা
চেম্বার : আল-রাজি হাসপাতাল, ফার্মগেট, ঢাকা। ০১৬৪৪৪৩৩৪৯৮, ০১৭৯৫৫৬৮২১৩